শিরোনাম
সোমবার, ৯ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

বাংলা সিনেমা বনাম বাস্তবতা

রাফিউজ্জামান সিফাত

বাংলা সিনেমা বনাম বাস্তবতা

বাংলা সিনেমায় : বিশ্ববিদ্যালয়ের করিডরে এক প্রান্ত থেকে নায়ক অপর প্রান্ত থেকে নায়িকা হেঁটে আসে। মাঝামাঝি এসে দুজনার ধাক্কা লেগে নায়িকার হাতের বই নিচে পড়ে যায়। বই তুলে দিতে গিয়ে নায়ক নায়িকার চোখাচোখি হয়। অতঃপর ভালোবাসা।

বাস্তবতা :  করিডরে নায়কের সঙ্গে নায়িকার ধাক্কা লাগার ফলে দুর্বল নায়িকা বইসহ নিজেই মেঝেতে পড়ে যায়। করিডরে থাকা অন্যান্য স্টুডেন্টরা নায়ককে ইভটিজার খেতাব দিয়ে ফেসবুক লাইভে এসে বলল, ‘ছিঃ এদের ঘরে কি মা-বোন নেই!’ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তারা মেয়েকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার অভিযোগে নায়ককে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার করে দেয়।

 

বাংলা সিনেমায় :  পিতৃহত্যার পাতিশোধ নিতে বিশ বছর পর কালো পাহাড়ের পেছনে নায়ক সেই ভয়ঙ্কর ভিলেনের মুখোমুখি হয়। দুই পক্ষের ভিতর অনেক গোলাগুলি হয়। ভিলেনের সাঙ্গোপাঙ্গদের নায়ক একাই মেরে খতম করে ফেলে। শেষে ইয়া ঢিশুমাইক ঢিশুমাইক আওয়াজে ভিলেনকে মারতে মারতে নায়ক প্রতিশোধ আদায় করে।  

বাস্তবতা : পিতৃহত্যার প্রতিশোধ নিতে বিশ বছর পর ভিলেনের বাড়িতে হাজির হয়ে নায়ক দেখে বৃদ্ধ ভিলেন চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে বিছানায় মশারির ভিতর শুয়ে কাতরাচ্ছে। নায়ককে দেখে যন্ত্রণায় কাহিল ভিলেন বলে ওঠে, ‘বাবাজি, শরীরে ভীষণ বেদনা, একটু টিপে দাও’। 

 

বাংলা সিনেমায় : ছোটবেলার খেলার সাথী ছিল নায়ক নায়িকা। তারা একটি গান গেয়ে দুজনে খেলাধুলা করত। তারপর অনেকদিন তাদের ভিতর কোনো যোগাযোগ নেই। হঠাৎ একদিন এক পাহাড়ে নায়ক মনের সুখে সেই পুরনো গান গেয়ে উঠলে নায়িকা সেই ধুন শুনে ছুটে আসে। নায়ক নায়িকার মিলন ঘটে।

বাস্তবতা : নায়ক নায়িকার নাম দিয়ে ফেসবুকে সার্চ দিয়ে খুঁজে বের করে এবং ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠায়। কয়েক দিন যাওয়ার পরও রিকুয়েস্ট এক্সেপ্ট না করলে নায়ক পুরনো সেই গান লিখে নায়িকাকে ইনবক্স করে। নায়িকা রিপ্লাই দেয়— ‘এসব মান্ধাতার আমলের গান আমি এখন শুনি না। লিংকিন পার্কের গানের ইউটিউব লিংক পাঠালাম আর শোন, সুন্দরী মেয়ে দেখলেই ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট দেওয়াটা বন্ধ কর। লুল কোথাকার!’

 

সর্বশেষ খবর