সোমবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

মশা এখন প্লেনে

ইকবাল খন্দকার

মশা এখন প্লেনে

আইডিয়া ও ডায়লগ : তানভীর

বিমানে প্রচুর মশা ঢুকে পড়েছিল, আর সেই মশা তাড়াতে লেগে গেছে দুই ঘণ্টা, ফলে বিমান ছাড়তে দুই ঘণ্টা বিলম্ব। কী, কথাগুলো একটু হাস্যকর হাস্যকর ঠেকছে? আজগুবি মনে হচ্ছে? জি না, এমনটা ভাবার বা মনে করার কোনো কারণ নেই। যে কথাগুলো বলা হলো, বিলকুল সত্য। সত্যি সত্যিই মশারা এমন একটা ঘটনা মতান্তরে দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে। ঘটনার পর থেকেই নানা মহলে প্রশ্ন উঠেছে— মশা কেন বিমানে? প্রশ্নটা খুবই জটিল এবং কঠিন। ঠিকই তো, মশা কেন বিমানে উঠবে? মশার পাখা আছে না? এই প্রশ্ন শুনে আমার পরিচিত একজন বলে উঠল, পাখা থাকলে কি কেউ বিমানে ওঠে না? আমার ভাইয়েরও তো পাখা আছে। সে কি বিমানে ওঠে না? ভদ্রলোকের কথা শুনে আমার চোখ কপাল ছাড়িয়ে মাথায় ওঠার জোগাড়। বলে কী! আপনার ভাইয়ের পাখা আছে মানে? জবাব পাওয়া গেল, জি, আমার ভাইয়ের পাখা আছে। ছোট হাতপাখা। সব সময় ব্যাগের সাইড পকেটে রাখে। ছোট হোক বড় হোক, পাখা তো! আমার এক ছোটভাই বলল, মশা কেন বিমানে উঠবে না, তাই বলেন। আপনার আমার পা আছে। কেন আছে? হাঁটার জন্য। কিন্তু আমরা হাঁটি না। ঠাস করে রিকশায় উঠে পড়ি। পা থাকতেও আমরা যদি রিকশায় উঠতে পারি, তাহলে পাখা থাকতে মশা কেন বিমানে উঠবে না? মশার কি সাধ আহ্লাদ নেই? হ্যাঁ, এটা ঠিক, আমাদের কাছে রিকশায় চড়ার মতো ভাড়া থাকলেও মশাদের কাছে বিমানে চড়ার মতো ভাড়া নেই। আরে বাপুরে, ভাড়া থাকবে কীভাবে! মশাদের তো পকেটই নেই। মানিব্যাগ তো নেই-ই। আমার এক প্রতিবেশী বলল, শিল্পীরা যেমন এক দেশ থেকে আরেক দেশে যায় কনসার্টে অংশ নেওয়ার জন্য, আমার ধারণা মশারাও কনসার্টে অংশ নেওয়ার জন্যই একদেশ থেকে আরেক দেশে যেতে চাচ্ছিল বিমানে চড়ে। মশাদের সংগীতপ্রতিভা আছে, নিশ্চয়ই জেনে থাকবেন! তো এই প্রতিভা নিয়ে কি ঘরে বসে থাকলে চলে! দেশ-দেশান্তরে ছড়িয়ে দিতে হয় না? আমার এক বন্ধু বলল, মশাগুলোকে যে বিমান থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে, এটা একদম কাজের কাজ হয়েছে। আমি জানতে চাইলাম, কেন? বন্ধু বলল, মশাদের তো কোনো আদব-লেহাজ নেই। বিমানে চড়ার কিছুক্ষণ পরই হয়তো ভাড়া নিয়ে গড়িমসি শুরু করে দিত। বলত, আমরা মশা। স্টুডেন্ট মশা। অতএব হাফভাড়া রাখেন। আমার এক বড়ভাই বলল, আমরা কিন্তু কেরানিদের মোটেই দাম দিতে চাই না। কিন্তু দাম দেওয়া উচিত। কারণ, একমাত্র কেরানিদের পক্ষেই সম্ভব বিমানকে মশামুক্ত করা। তবে শর্ত হচ্ছে, তারা ‘মাছিমারা কেরানি’ হতে পারবে না। হতে হবে ‘মশামারা কেরানি’। আমার এক চাচা মশাসংক্রান্ত এই ঘটনাটা শুনে কিছুক্ষণ ঝিম ধরে বসে থাকলেন। তারপর বললেন, আমি যদি কোনো দিন বিমানে উঠি, তাইলে হাতুড়ি লইয়া উঠমু। আমি বললাম, হাতুড়ি দিয়ে কী করবেন? পিটিয়ে পিটিয়ে মশা মারবেন? চাচা বললেন, বেকুবের মতো কথা বলবি না। মশা থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হইল মশারি টানানো। আমি বিমানে মশারি টানানির ব্যবস্থা করমু। আমি বললাম, মশারি টানাবেন, সেটা ঠিক আছে। কিন্তু হাতুড়ি দিয়ে কী করবেন? চাচা বললেন, মশারির দড়ি বান্ধুম কই? পেরেক মারতে হইব না?

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর