আমাদের ইকু বরাবরই জনদরদি। অন্যের সেবায় নিয়োজিত প্রাণ। ওর ভালো নাম ইকবাল। এই ইকু বা ইকবাল একবার ঠিক করল হতাশাগ্রস্ত মানুষকে নিয়ে কাজ করবে। কোথা থেকে যেন কাউন্সিলিংয়ের কি একটা কোর্সও করে এলো। কোর্স সম্পন্ন করে আমাদের বন্ধু মহলে জানিয়ে দিল, কোনো হতাশাগ্রস্ত মানুষ পেলে তাকে যেন ইকুর কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আমরা ওর উদ্যোগকে গুরুত্বের সঙ্গে নিলাম। আজকাল হতাশা থেকে কত রকম দুর্ঘটনা ঘটছে। আশপাশে পাগল খুঁজলে হয়তো পাওয়া যাবে না কিন্তু হতাশাগ্রস্ত লোকের অভাব নেই। সুতরাং আমরা সবাই চোখ-কান খোলা রাখি। কারও মন খারাপ দেখলেই কাছে গিয়ে বোঝার চেষ্টা করি ব্যক্তিটি হতাশাগ্রস্ত কিনা। দুদিন পরে খোঁজ পেলাম ডিপার্টমেন্টের এক ছোট ভাই নাকি ইদানীং খুবই বিষণ্ন থাকে। কারও সঙ্গে কথাবার্তা তেমন বলে না। জিজ্ঞেস করে জানলাম ভাইটি হতাশাগ্রস্ত এবং সে এ অবস্থা থেকে বের হতে চায়। আমরা ওকে সোজা পাঠিয়ে দিলাম ইকুর কাছে। ইকু ওর সঙ্গে একান্ত সাক্ষাতের মাধ্যমে বিনামূল্যে হতাশা নির্মূল কার্যক্রম শুরু করল। এরপর সেই ছোট ভাইকে আমরা আর চোখের সামনে পাই না। আমাদের কাউকে দেখলেই দৌড়ে পালায়। যা হোক, আরও কয়েকজনকে হতাশামুক্ত করার উদ্দেশে আমরা ইকুর কাছে পাঠালাম। তাদের প্রত্যেকেই একই আচরণ করছে। আমাদের চোখের সামনে কেউ পড়ছে না। ঘটনা বুঝলাম না। এভাবে বেশ কিছু দিন চলার পর ইকু জানাল সে আর কাউন্সিলিং করবে না। কাউন্সিলিং এদেশের মানুষের জন্য নয়। তার কাছে যারা যায় তাদের বেশিরভাগই ঘুমিয়ে পড়ে। কেউ সিটিংয়ের মাঝখান থেকে উঠে চলে যায়। কেউ আসছি বলে আর আসে না। দুইয়ে দুইয়ে চার মিলিয়ে আমরা ঘটনা বুঝে নিলাম। ইদানীং ইকুকেই বেশ হতাশ লাগে। কারও সঙ্গে তেমন কথা বলে না। আমরা ওর জন্য একজন ভালো কাউন্সিলর খুঁজছি। পাঠকদের জানাশোনা কেউ থাকলে জানাবেন।