সোমবার, ২১ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

বখশিশ

বখশিশ

একটা চাকরির ইন্টারভিউ ছিল মে মাসের প্রথম সপ্তায়। নির্ধারিত দিনে  দুপুর আড়াইটায় গাড়িতে উঠলাম। সুদীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে রাত সাড়ে ৯টায় গাড়ি পৌঁছল। গাড়ি থেকে নেমে ক্লান্ত শরীরে এক হোটেলে  গেলাম। প্রতি সিট ভাড়া ১৮০ টাকা। তখন ঘড়িতে বাজে রাত পৌনে ১০টা। সিট খালি পেলাম না। হোটেল পরিচালককে বললাম, কোথায় সিট পাব? বললেন, পাশের হোটেলে যান। ভিআইপি সিট। অন্য হোটেলে কম ভাড়া পাবেন। কিন্তু ছারপোকার কামড় খেতে হবে!

এরপর একটু হেঁটে পাশের হোটেলে  গেলাম। ঘড়িতে সময় রাত ১০টা। হোটেলটি দেখে কার না প্রাণ জুড়ায়!  ভিআইপি মানুষ সেখানে থাকেন। এ সব মানুষের টাকার প্রতি কোনো দরদ নেই বললেই চলে। প্রতি সিট ভাড়া ৪০০ টাকা। সাধারণ মানুষ সিট ভাড়া শুনলে যে কেউ আঁতকে উঠবে। আমার মানিব্যাগে খুব বেশি টাকা ছিল না। এত্ত বেশি ভাড়া শুনে শিগগিরই প্রস্থান করলাম।

অবশেষে রাত সোয়া ১০টায় হোটেল আবাসিকে সিট পেলাম। পরিচালক আমার দুজন। সিট ভাড়া ২৫০ টাকা। ৫০০ টাকার নোট দিলাম। দ্বিতীয় পরিচালক ভাঙতি টাকা পেলেন না। নোটটি প্রথম পরিচালকের হাতে ধরিয়ে দিলেন। কিছুক্ষণ পর তিনি আমাকে বাকি টাকা ফেরত দিলেন। একটু পর দ্বিতীয় পরিচালক রুমে নিয়ে এলেন। সব কিছু বুঝিয়ে দিলেন।

: ৫০ টাকা বখশিশ দিন।

: কিসের বখশিশ?

: আপনার ১০০ টাকা কম করেছি।

: আমি তো গরিব ছাত্র!

: এ টাকা শুধুই কী আমার? দুজনের মধ্যে ২৫ টাকা করে ভাগাভাগি হবে।

ভাবলাম, এখানেও বখশিশ! অগত্যা তাকে বখশিশ দিলাম। পরিচালক রুমে একটা কয়েল দিতে চাইলেন। সেই যে চলে গেলেন, তিনি আর ফিরে এলেন না। অবশেষে ফ্রেশ হয়ে খাওয়া-দাওয়া সেরে বিছানায় শুয়েছি মাত্র। কিসে হাত পা কামড়ায়? তাকিয়ে দেখি ছারপোকা। একটা-দুটা না। হিসেবের বাইরে ছারপোকা। ভাবলাম, ছারপোকার বখশিশ! বখশিশের কতই সুবিধে পেলাম!

 

লেখা : শফিকুল ইসলাম শফিক

কনইল, ভীমপুর, নওগাঁ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর