শিরোনাম
সোমবার, ২৭ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

সুসময়ের বন্ধু

ইকবাল খন্দকার

সুসময়ের বন্ধু

কার্টুন : কাওছার মাহমুদ ► ডায়ালগ : তানভীর আহমেদ

আমার এক ভাবি বললেন, সুসময়ে বন্ধু বটে অনেকেই হয়, অসময়ে হায় হায় কেউ কারো নয়। এই লাইনগুলো শুনলে আমার স্টুডেন্ট লাইফের কথা মনে পড়ে। বিশেষ করে ওই সময়ে যার সঙ্গে প্রেম করতাম, তার কথা...

 

আমার এক বন্ধু বললো, সুসময়ে অনেকেই বন্ধু হয়। কিন্তু সময় একটু খারাপ হলেই সব শেষ। কেউ আর পাশে থাকে না। আর এটাই জগতের নিয়ম। এই নিয়ম যে কবে দূর হবে! আমি বললাম, দূর হবে না রে পাগলা, এই নিয়ম কোনো দিনই দূর হবে না। তবে হ্যাঁ, পরিস্থিতি একটু সহনীয় পর্যায়ে আনা যেতে পারে যদি তুই ওজনটা একটু কমাস। নইলে খারাপ সময়ে ভোগান্তি তোকে পোহাতেই হবে। কিচ্ছু করার নেই। বন্ধু বললো, বুঝলাম না তোর কথা। কোন প্রসঙ্গের মধ্যে কোন প্রসঙ্গ নিয়ে আসলি! আমি বললাম, কোন প্রসঙ্গের মধ্যে কোন প্রসঙ্গ এনেছি, তুই ভালো করেই বুঝতে পেরেছিস। কেন, ক’দিন আগে যে ফুটবল খেলতে গিয়ে পায়ে ব্যথা পেলি মনে নেই? তখন তুই বললি ধরাধরি করে রিকশায় উঠিয়ে তোকে বাড়িতে পাঠাতে। কিন্তু কেউ তোকে ধরলো না। মানে খারাপ সময়ে কেউ তোর পাশে থাকলো না। কেন থাকলো না? কারণ, তোকে ধরাধরি করে রিকশায় ওঠাতে গেলে কারো কোমরের হাড্ডি আস্ত থাকবে না। যেহেতু তোর ওজন ১০০ কেজির কাছাকাছি। এই জন্যই ওজন কমাতে হবে। আমার এক প্রতিবেশী বললো, অধিকাংশ মানুষই হলো মাছির মতো। দুধের গন্ধ পেলেই উড়ে চলে আসে। এ জন্য ‘দুধের মাছি’ কথাটার প্রচলন। এবার আরেক প্রতিবেশী বললেন, ঠিক আছে আপনার কথা। তবে মাছি শুধু দুধের গন্ধ পেলেই উড়ে আসে না, পচা জিনিসের গন্ধ পেলেও উড়ে আসে। গতকাল দুইটা আপেল পড়ে যাওয়ার পর টের পেলাম। আমার আরেক প্রতিবেশী বললেন, খারাপ সময় না এলে বন্ধু চেনা যায় না। আমি আমার বন্ধুদের খুব ভালো করেই চিনেছি। যেহেতু জীবনে অনেকবার খারাপ সময়ের মুখোমুখি হয়েছি। আমি জানতে চাইলাম, কী ধরনের খারাপ সময়ের মুখোমুখি হয়েছেন? প্রতিবেশী বললেন, লম্বা আলাপে না যাই। গতকালের একটা উদাহরণ দিই। গতকাল হঠাৎ করেই বৃষ্টি নামলো। আশপাশে কোনো ঘরবাড়ি না থাকায় দাঁড়ানোর সুযোগ ছিল না। আমার সঙ্গে তখন আমার এক বন্ধু। সে বললো কী, বৃষ্টিতে তার মাথা ভিজে গেলে নাকি সমস্যা। জ্বর আসবে। তাই সে করলো কী, টান দিয়ে আমার মাথার ক্যাপটা নিয়ে নিলো। তারপর তো বেইজ্জতি অবস্থা। আসলে এতদিন পাবলিক জানতো না আমার মাথায় যে এত বড় টাক। বোঝেন তাহলে অবস্থা! আমার এক ভাবি বললেন, সুসময়ে বন্ধু বটে অনেকেই হয়, অসময়ে হায় হায় কেউ কারো নয়। এই লাইনগুলো শুনলে আমার স্টুডেন্ট লাইফের কথা মনে পড়ে। বিশেষ করে ওই সময়ে যার সঙ্গে প্রেম করতাম, তার কথা। তার আর আমার নামের প্রথম অক্ষর একটা গাছে লেখা ছিল তো! অমুক প্লাস তমুক। আর এই লাইনগুলো শুনলে আমার সেই গাছটার কথাও মনে পড়ে। আমি বললাম, গাছের কথা মনে পড়ার কারণ? ভাবি বললেন, এই যে ‘বন্ধু বটে হয়’...। আর ওই গাছটা ‘বট’গাছ ছিল তো!

সর্বশেষ খবর