নদী হয়তো নারী হতে পারে না, নারী কিন্তু নদী হয় অবলীলায়,
উজানের ঢল নামে নারীর শরীরে, প্লাবনে পুষ্ট হয় পলিপড়া বুক,
নদীর ঘূর্ণি ওঠে চোখে, ঠোঁটের পাড় ভাঙে, ভুলো হাত ছুঁয়ে যায়দু’পাশের সবুজ শস্য, ফুলের পাপড়ির মতো খোলে জীবনের মুখ।
নদী নড়ে জলের স্রোতের কাছে, নারী নড়ে জ্যান্ত অজগরের মতো,
হিস্ হিস্ শব্দ ওঠে, উথাল-পাথাল করে শরীরের গোপনীয় কোষ,
একটা দরোজা খোলে আরেকটা দরোজার তালা, দোলে অবিরত
আঙ্গুলের ভাঁজ, তীব্র জলের মতো ছুটে আসে লাভার আক্রোশ।
মায়াবতী নারীর চোখ কখনও কখনও হয় উচ্ছল মায়াভরা নদী,
চাঁদের জোছনা নামে চোখে, ধবল বালিকা তোলে কীর্তনের সুর,
সেই সুরে ঢেউ ওঠে, জংলি তরঙ্গ তার দেহ ধুয়ে দেয় স্তন অবধি,
ঘর্মাক্ত বিছানা তার বেহুলার ভেলা হয়ে ভেসে যায় দক্ষিণের দূর।
নারী কেন নদী হয়, মাতাল জলের মতো মুছে দেয় জলরং ছবি?
বয়সের বন্যা আসে বার বার, ঘোলাজলে স্নান করে কামারের হাত,
কবিতার শব্দ খোঁজে একালের নেশাখোর কতিপয় বিস্মিত কবি,
অভিধানে ঘুঘু চরে, মেলে না শব্দজাল, নেমে আসে গোঙানির রাত।
নারীর যৌবন যদি নদীর প্লাবন হয়, তবু কিছু ভুল বুঝি থেকে যায়,
কেননা আকাশও বুভুক্ষু আজ, সব নীল অগোচরে চেটেপুটে খায়।
কিছু নীল গলে পড়ে নারীর জরায়ু মুখে, কিছু নীল জমা হয় ঠোঁটে,
এভাবেই প্রতিদিন বীর্যস্নানে ভোর হয়, চারদিকে কোটি ফুল ফোটে।