প্রত্যেক নারীর ভেতর একটা সোনার সিন্দুক থাকে।
খোলা আকাশ থেকে গোপনে সে তুলে আনে নানাবর্ণ রঙ,
কখনও ধবল জোছনা, কখনও গুঁড়ো গুঁড়ো জলবতী মেঘ,আঁজলায় বৃষ্টি এনে ভরে রাখে নিরাপদ সিন্দুকের খোপ।
ফুলের রহস্য বোঝার আগেই সে ফুলের সৌরভ দিয়ে
লেপে দেয় সিন্দুকের দেয়াল, পাখির কাকলিকে প্রেমের
গান ভেবে কপি করে রাখে হার্ডডিস্কে-সিডিতে, অরণ্যের
গহিন থেকে কিছু হিমশীতল নীরবতা আর মুঠো মুঠো
জোনাকির আলো এনে কয়েনের মতো লুকোয় একপাশে,
জল হয়ে নেমে আসার আগেই সবার চোখ এড়িয়ে ঠাণ্ডা
বরফের স্লাইস এনে বিছিয়ে দেয় সিন্দুকের তলায়,
ক্রমশ স্ফীত হয়ে ওঠার আগেই সে বুক থেকে সরিয়ে
রাখে সবুজ আপেল, চুম্বনের স্বাদ গ্রহণের অদ্ভুত কৌশল
চুরির আশঙ্কায় সে ঠোঁট থেকে মুছে ফেলে ক্ষুধার আগুন।
নিরাপদ নারী সিন্দুকের বিশাল ডালাটি টেনে বন্ধ করার
পরও তস্করের ভয়ে তালা লাগায়, স্পর্শহীন দরোজায়
বসিয়ে দেয় অদৃশ্য পাসওয়ার্ড, বাহকের সোনার সিন্দুক
যেন সাপের ছোবল থেকে নিরাপদ থাকে। বৃষ্টি ও
জোছনায় বহুদিন ভিজেছে সে, দংশনে বিক্ষত শরীর
থেকে শ্বাপদেরা খামচে নিয়ে গেছে রক্তের ঘ্রাণ, তবু
অলঙ্কারে পড়েনি হাত, সিন্দুকের ডালা খোলার কসরত
ব্যর্থ হয়ে গেছে।
হায়! কী যে হলো একদিন, চাবি ছাড়াই তালা খুলতে
থাকল একটার পর একটা, শরীর ফেটে বেরিয়ে এলো
বিন্দু বিন্দু স্বেদ, শিরার ভেতর ছুটতে থাকল রুদ্র চিতা,
জরায়ুমুখে ওষ্ঠের আগুন জ্বলে উঠতেই সিন্দুক ভেঙে ছুটে
এলো সর্বগ্রাসী নদীর প্লাবন, বেজে উঠল শঙ্খধ্বনি,
জমাট বরফ তরল মধুর মতো ঝরে পড়ল ঠোঁটের ওপর।