শেখ মুজিবের বজ্রকণ্ঠে
গর্জে ওঠে বাংলাদেশ—
‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রামএবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’
বীর বাঙালি শপথ করে
ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে।
পঁচিশে মার্চে কালরাতে
ঝাঁকে ঝাঁকে নামে কনভয়
ঘুমন্ত মানুষ কেঁপে ওঠে
ভয়, চোখে মুখে শুধু ভয়!
যেন খুনের নেশায়
যমদূতের হিংস্র কড়া নাড়া।
নবজাতকের আর্তনাদে
হায়! স্তব্ধ হয়ে যায় পাড়া।
লেলিহান শিখায় শহর বস্তি
ছাত্রাবাস যায় পুড়ে।
এ কেমন ভয় নামে ভয়!
আমার সবুজ দেশে
হলোকাস্ট বা ভিয়েতনাম আজ
গণহত্যার উপমা হয়!
পাখির পাখায় হাওয়ায় হাওয়ায়
গাঁয়ে গঞ্জে মাটিতে পাহাড়ে
পদ্মা মেঘনা যমুনার তীরে
উথাল ঢেউয়ে ছাব্বিশে মার্চ
শেখ মুজিবের ডাক আসে—
মুক্তি পাগল ভাইরে আমার
মুক্তি পাগল বোনরে আমার
এক হও জোট বাঁধো
কণ্ঠে তোলো জয় বাংলা
হাতে নাও যার যা আছে—
অস্ত্র ধরো অস্ত্র ধরো অস্ত্র ধরো...
বাংলাদেশ স্বাধীন করো।
সেই বসন্তে ঝরাপাতায়
রোদে জলে দিনে রাতে
অস্ত্র কাঁধে অস্ত্র হাতে
মুক্তিযুদ্ধ ছুুটে আসে।
পথে ঘাটে বন বাঁদাড়ে
নদীর বুকে ঝড় বাদলে
বাংলা মায়ের দামাল ছেলে
বাংলা মায়ের রুদ্র মেয়ে
জীবন দিয়ে সম্ভ্রম দিয়ে
গুলি বন্দুক গ্রেনেড ছুড়ে
যুদ্ধ করে... যুদ্ধ করে...
বীর বাঙালির মুক্তিযুদ্ধ।
যুদ্ধ শেষে মুক্ত দেশে
রক্তমাখা পুব আকাশে
আলোয় আলোয় স্বপ্ন ফোটে
ঘাসে গাছে ফুলে ফুলে
স্বাধীনতার সূর্য ওঠে
স্বাধীনতার সূর্য ওঠে।