এ নদীর কোনো নাম ছিল না; তথাপি নানাজনে
নানা নামে ডেকেছে। যে-আমগাছের তলায় আমার
নাড়ি পোঁতা, শৈশবের এ নদী সেখানে সঙ্গোপনেসন্ধ্যাজল দিয়ে আসে; আমের পাতা শিশুর গালের
মতো হয়ে এলে জলের পাঠ নিতে ব্রিজের ওপর
দাঁড়িয়ে আছি; বাতাসে মেলে দেয়া আরব্য-
উপন্যাসের পাতার মতো গড়িয়ে চলেছে ঢেউয়ের
পর ঢেউ; পুরো পাঠ নেয়ার আগেই উল্টে যায় পাতা।
দু’একটি মোটাদাগের শিরোনাম ছাড়া টুকে রাখা
যায় না কোনো বিবরণ। নর্তকীর ঘুঙুর আর সদাগরী
জাহাজের ছাপ স্পষ্ট হলেও প্লাবনসদৃশ একটা ছবি
দ্রুততায় দৃষ্টির অগোচর হয়েছে। অবাক করার
মতো ব্যাপার এই যে- জলপুস্তকের ভেতর হতে
বিচ্ছুরিত শুকনো ফুলের সুবাস ভরে তুলেছে সিক্ত
বাতাসের শরীর, নদীর দু’পাড়। আমবাগানের আড়ালে
কুয়াশার ফিনফিনে চাদর হাতে সন্ধ্যা এগিয়ে এলে,
দোলায়িত জলের সিলেবাসে চোখ আর মন বিভাজিত।