: ডাকিছে সুবর্ণগ্রাম। কপিলা ও কপিলা, চলো যাই।
-মাঝি, কোথায় তোমার সুবর্ণগ্রাম? জন্ম থেইক্কা দ্যাখতাছি চাইরপাশে অভাবের থকথইক্যা কাদা- মরা মহিষের নাড়িভুঁড়ির লাহান।
: ক্যান্ কপিলা কই নাই তুমারে- পদ্মার ওই পারে নতুন চরের মতো ডাক পাড়ে যেই সোনামাখা মাটি- যেইখানে শুইয়া আছে বাংলাদেশ- আমি তার নাম দিছি সুবর্ণগ্রাম।-পোড়া চোখ যেইদিকে যায়, মাঝি, আমি তো সবদিকে সারাক্ষণ ভয়ংকর কালো জলের ফণা দেখি আজদাহা সাপের মতন। ঘরেও বিভীষণ- পথে পথে কণ্টক বিছাইয়া রাখে! হেই পারে যাইব্যা কেমনে, মাঝি?
: মনে নাই, কপিলা তুমার মনে নাই, যখন পশ্চিমের আকাশ থাইক্যা ঝাঁক ঝাঁক শকুন নাইম্যা আইছিল- পদ্মার বুক লাল হইয়া গেছিল দজলা-ফোরাতের লাহান- তখন ক্ষ্যাপা জননীর মতো পদ্মা কি হুংকার দিয়া কয় নাই, ‘ওরে ভয় নাই বাছা ভয় নাই- সঙ্গে আছে মুজিবের নাও’।
-হেইডা তো মনে আছে, মাঝি, খুউব মনে আছে...।
: তয় কিসের ভয়? সম্মুখে চাইয়া দ্যাখো মুজিবের বেটি গইড়্যা দিছে কী আশ্চর্য এক সেতু- আন্ধারেও সোনার মালার মতন জ¦লজ¦ল করে পদ্মা মায়ের উত্তাল বুকখানি জুড়ে। এমন যে থুত্থুরে বুড়ি- আমগো বুড়িগঙ্গা- হেই বেডিও অহন কয় একবার টুঙ্গিপাড়ায় যামু তীর্থ দর্শনে।
-হ, আমরাও যামু মাঝি, ঈশ্বরী পাটুনি মাসিরেও সঙ্গে নিয়া যামু। বড় দুঃখ হ্যার বুকে।
: ডাকিছে সুবর্ণগ্রাম। কপিলা ও কপিলা, চলো যাই।