শুক্রবার, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
অন্যপ্রকাশের স্বত্বাধিকারী মাজহারুল ইসলাম

বইমেলা ও প্রকাশকের কথা

তানভীর আহমেদ

বইমেলা ও প্রকাশকের কথা

‘সবকিছুরই দাম বেড়েছে। কাগজের দাম একটু বেশি বেড়েছে। তবে আমার মনে হয় বইয়ের জন্য পাঠকের যে ভালোবাসা সেই ভালোবাসার জায়গা থেকে এই কাগজের মূল্যবৃদ্ধি কোনো অন্তরায় হয়ে  দাঁড়াবে না।  মূল্যবৃদ্ধি হলেও আমার ধারণা, বইয়ের প্রতি পাঠকের যে অপরিসীম ভালোবাসা তাতে বই সংগ্রহে তার সমস্যা হবে না।’

 

করোনা মহামারিতে থমকে গিয়েছিল গোটা বিশ্ব। পরপর দুই বছর বইমেলার উৎসবে অনেকটাই ভাটা পড়েছিল। পাঠক, লেখকরা মুখিয়ে ছিলেন এবারের বইমেলার জন্য। তার প্রমাণ মিলেছে মেলা শুরুর দিনেই। তিন বছর পর ভাষার মাসের প্রথম দিনই বইপ্রেমী মানুষের প্রাণের মেলা শুরু হয়েছে। উদ্বোধনের পর বইপ্রেমীরা দারুণ ভিড় করেছেন। আশাব্যঞ্জক এই পরিবেশ, বইমেলা ঘিরে প্রস্তুতি ও প্রত্যাশার কথা বলেছেন অন্যপ্রকাশের স্বত্বাধিকারী মাজহারুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘বইমেলা এবার স্বাভাবিক নিয়মে হচ্ছে। আশা করছি এবার পাঠকদের ভালো সমাগম হবে। পাঠকরাও দুই বছর পর তার প্রিয় লেখকদের বই কিনতে এবার আসতে পারছেন। করোনা মহামারিতে প্রকাশকরা তাদের কাক্সিক্ষত লাভ তুলতে পারেননি। করোনাকালীন প্রথম বছর মাঝামাঝি সময়ে মেলা স্থগিত হয়ে যায়। গত বছর শুরু হয় মার্চের মাঝামাঝি। সে কারণে এবারের মেলা নিয়ে আমি খুব আশাবাদী।’

করোনা মহামারি ও ইউক্রেনে যুদ্ধের কারণে গোটা বিশ্বই নানা ধরনের আর্থিক চ্যালেঞ্জের সঙ্গে লড়াই করছে। অন্যান্য পণ্যের মতো কাগজেরও দাম বেড়েছে। অনেকেই আশঙ্কা করছেন, কাগজের মূল্যবৃদ্ধি বই প্রকাশনাশিল্পে প্রভাব ফেলবে। এ প্রসঙ্গে মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘সবকিছুরই দাম বেড়েছে। কাগজের দাম একটু বেশি বেড়েছে। তবে আমার মনে হয়, বইয়ের জন্য পাঠকের যে ভালোবাসা সেই ভালোবাসার জায়গা থেকে এই কাগজের মূল্যবৃদ্ধি কোনো অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে না। মূল্যবৃদ্ধি হলেও আমার ধারণা, বইয়ের প্রতি পাঠকের যে অপরিসীম ভালোবাসা তাতে বই সংগ্রহে তার সমস্যা হবে না।’

প্রতি বছরই নতুন বইয়ের খোঁজ করেন পাঠকরা। প্রিয় লেখকের নতুন কোন কোন বই এসেছে তা আগে থেকে অনেকে তালিকা করে রওনা দেন বইমেলা প্রাঙ্গণে। অন্যপ্রকাশ মানসম্পন্ন বই প্রকাশের জন্য সমাদৃত। এবারও তারা খ্যাতিমান লেখকদের নতুন বই নিয়ে এসেছে। মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘বরাবরের মতো এবারও অন্যপ্রকাশে অনেক নতুন বই আসছে। গুরুত্বপূর্ণ যে কয়টি বইয়ের কথা বলতে হয় তার একটি সাদাত হোসাইনের ‘শঙ্খচূড়’। তরুণ জনপ্রিয় লেখক, কথাসাহিত্যিক তিনি। তার গুরুত্বপূর্ণ ‘শঙ্খচূড়’ উপন্যাসটি  বিশাল ক্যানভাসে লেখা। এই উপন্যাসটি প্রকাশ করছে অন্যপ্রকাশ। এ ছাড়া প্রথিতযশা লেখক হাসনাত আবদুল হাইয়ের নতুন গ্রন্থ ‘নদীপথে, সঙ্গে ইউলিসিস’ বইটি পাওয়া যাবে অন্যপ্রকাশে। ভ্রমণ বিশ্লেষণ বিষয়ক বই এটি। এ ধরনের আরও ৬০ থেকে ৭০টি নতুন বই এবারের মেলায় প্রকাশ করবে অন্যপ্রকাশ।’

পাঠকরা বইমেলার প্রাণ। তাদের উদ্দেশে মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘আপনারা মেলায় আসুন। আপনাদের প্রিয় লেখকের বই কিনুন। বই মানুষের মনন বিকাশ করে। বই কিনে, পড়ে পাঠকরা যেমন উপকৃত হবেন, লেখকরাও লিখতে উৎসাহিত হবেন, প্রকাশকরাও বই প্রকাশনায় উৎসাহিত হবেন।’

এবার বইমেলার আয়তন হচ্ছে সাড়ে ১১ লাখ বর্গফুট। বইমেলায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ১১২টি প্রতিষ্ঠানকে ১৬৫টি স্টল ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৪৮৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৩৬টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৩৮টি প্যাভিলিয়ন থাকবে। লিটলম্যাগ চত্বরে ঠাঁই পাবে ১৫৩টি স্টল। মাসব্যাপী এ মেলার প্রতিপাদ্য ঠিক হয়েছে ‘পড়ো বই গড়ো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর