শিরোনাম
শুক্রবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

তাজা বকুলের গন্ধ

হোসেন আবদুল মান্নান

তাজা বকুলের গন্ধ

হাই কোর্টের সুবিশাল প্রাঙ্গণ থেকে উত্তর দিকে এখন সোজা রাস্তা হয়েছে। আগে কখনো ছিল না। কাজেই দুই-তিন মিনিটের মধ্যে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের পাশ দিয়ে দ্রুত বের হয়ে আসে সাজু। মামলাটার সুসংবাদে আজ তার মনটাও বেশ ফুরফুরে সতেজ লাগছে। তার গন্তব্য ইস্কাটনের দিকে। প্রথমে সে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ডানে-বাঁয়ে তাকিয়ে চিন্তা করছিল রিকশার জন্য অপেক্ষা করার চেয়ে রমনা পার্কের ভেতরটায় প্রবেশ করাই ভালো। সে আরও ভাবছিল, এমন ঝলমলে উজ্জ্বল বিকালটা রমনার সবুজ বৃক্ষের সান্নিধ্যে কাটানোর সুযোগটা হাতছাড়া করা বোকামি হবে। আর রমনা মানে তো ঢাকা শহরের আস্ত একটা ইতিহাসকে মাথায় নিয়ে স্থির দাঁড়িয়ে থাকা একখন্ড সবুজ দ্বীপ। রাস্তা পার হয়ে সাজু পার্ক দিকে আনমনে হাঁটছে আর চিন্তা করছে, রমনা পার্কটা নাকি ৭০ একর জায়গাজুড়ে প্রসারিত। যা এখন ঢাকাবাসীর জন্য এক বিশাল অক্সিজেন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। আসলেই লাখো-কোটি মানুষের এই শহরে দুদন্ড হাঁফ ছেড়ে দাঁড়ানোর মতো আর নিরাপদ স্থানই বা আছে কোথায়? জানা যায়, ভারতবর্ষে মুঘলদের শাসনামলেই এ রমনার গোড়াপত্তন হয়েছিল ইত্যাদি ইত্যাদি। তা ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ে সাজু নিজেই জেনেছিল, এখানকার আশপাশের সব জমি, স্থাপনা সবই রমনার অধীন ছিল।

২.

সাজুর ভালো নাম শাজাহান হোসেন। উচ্চ শিক্ষিত হলেও চাকরি-বাকরি করেনি সে। নানা ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে দেশে-বিদেশে ঘোরাঘুরি করে। আজ ঢাকা তো কাল মালয়েশিয়ায়। কোম্পানি আইনের একটা মামলার কাজেই তাকে মাঝেমধ্যে হাই কোর্টে আসতে হয়। হাতে একখানা স্টিক নিয়ে একা হাঁটছে সে। তবে একা হলেও জনবিচ্ছিন্ন নয়। অগণন পথচারীর ভিড়ে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। মৎস্য ভবনের গেট দিয়ে পার্কের ভেতরে পা রেখেই ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের দিকে হেঁটে যাচ্ছে সে। কারণ ওপারেই তার আবাসিক ঠিকানা।

আজ সাজু লক্ষ করছে সব কিছুতে কেমন যেন একটু অন্যরকম লাগছে। অপরাহ্ণের এক প্রসন্ন ছায়া পড়ে আছে গোটা পার্কজুড়ে। লেকের জলের মৃদু তরঙ্গের দিকে দৃষ্টি দিয়ে নিরন্তর কথোপকথনে নিবিষ্ট হয়ে আছে থোকা থোকা যুবক-যুবতী। নির্ভার স্বাচ্ছন্দ্যে এদিক ওদিক অন্যমনস্ক ঘুরে বেড়াচ্ছে শত শত মানুষ। বিশেষ করে ছেলেমেয়েদের আড্ডা, সজোরে গানে টান দেওয়া, সেলফি, হৈ-হুল্লোড় সবই যেন নজরে পড়ার মতো। কিশোরদের কেউ কেউ ঢিল ছুড়ে গাছ থেকে পাকা জাম পাড়ার চেষ্টা করছিল। শাখায় শাখায় কালো জামগুলো পতনোন্মুখ হয়ে আছে। সাজু অচেনা এক পথিকের মতো বিস্ময়ভরা চোখ দিয়ে তাকিয়ে দেখছিল। ছায়া সুনিবিড় এ রমনায় কত জানা-অজানা জাতের ফলজ ও ঔষধিগাছ রয়েছে। কোথাও কোথাও পাখিদের কিচিরমিচির শব্দ তার কানে লাগছে। যা রাতে হাঁটার সময় তার একেবারেই খেয়ালে আসে না। সে মনে মনে বলছিল, এত বছর ধরে রমনায় দলবেঁধে হাঁটলাম, এমনভাবে তো কখনো পার্কের সৌন্দর্য পরখ করে দেখা হয়নি!

৩.

এখন বকুল ফুলের মৌসুম। গাছগুলো ফুলবতী হয়ে আছে। পার্কে অসংখ্য বকুলগাছের ছড়াছড়ি। ম ম গন্ধের মাতাল হাওয়ায় ধীর পায়ে একা হেঁটে যাচ্ছে সাজু। সে হাঁটছে আর গভীরভাবে ভাবছে, ঝরেপড়া বকুল ফুলের এমন গালিচা কী প্রাতঃভ্রমণকারী বা সান্ধ্যচারীদের দৃষ্টিতে পড়ে? নিশ্চয় পড়ে না। পড়লে তার দৃষ্টিতেও পড়তে পারত। আসলে কেউ খেয়াল করছে না রাতের আঁধারে নিঃশব্দে নিভৃতে ঝরে পড়ছে লাখ লাখ বকুলের ফুল। বকুলকে নাকি মায়াবতী বৃক্ষ বলা হয়। ওরা মা প্রকৃতির এক অপরূপ উপহার। ওরা অকাতরে গন্ধসুধা বিলিয়ে যাচ্ছে মানুষের জন্য। বকুলের গন্ধে পথচারীরা আকুল হয়, কখনোবা বিমোহিত হয়। অথচ রমনা পার্কের ভেতরের ঝরেপড়া বেশির ভাগ ফুলই প্রতি মুহূর্তে পদদলিত, মথিত হচ্ছে। কেউ হাত বাড়িয়ে সযতেœ তুলে নিচ্ছে না। নিরাপত্তার অজুহাতে এখানে ফুল কুড়ানোর মেয়েদেরও প্রবেশাধিকার দেওয়া হচ্ছে না। এসব অভাগা, অবহেলিত, অপমাণিত বকুলের কথা ভাবতে ভাবতে সাজুর হাঁটার সময়টা ফুরিয়ে যায়।

পার্কের শেষ প্রান্তে এসে পৌঁছানোর একটু আগে হঠাৎ একটা গাছের নিচে থেমে যায় সাজু। রাস্তার পাশে ঘাসের ওপর পড়ে থাকা কিছু বকুল ফুল কুড়িয়ে নিতে সে আভূমিনত হলো। এবং পরক্ষণেই ফুলগুলোকে মুষ্টিবদ্ধ করে উঠে দাঁড়াল। চারদিকটা একটু তাকিয়ে দেখে নিয়ে ডান হাতটা নাকের ডগায় স্পর্শ করতেই তার শরীরের অচেনা তন্ত্রিতে আচমকা যেন এক শিহরণ অনুভূত হলো। পার্কের একমুঠো তাজা বকুল তাকে সহসাই নিয়ে গেল কৈশোরের সেই স্মৃতিময় তার স্কুলের পেছনের বকুলতলায়। মুহূর্তে সাজু যেন এক অতুলনীয় নস্টালজিক সময়কে অনুভব করছিল।

৪.

একমুঠো ফুল হাতে দাঁড়িয়ে সাজু। সে কিছুই বুঝতে পারছে না, তার চোখ দুটো হঠাৎই সুদূর অতীতে ফিরে গেল। কৈশোরে গ্রামের হরিপুর হাইস্কুলে পড়ার সময় ক্লাসের বিরতিতে তারা দলবেঁধে প্রায়ই অধীরবাবুর বাড়ির বহিরাঙ্গনে নিঃসঙ্গ দাঁড়িয়ে থাকা বকুলগাছটির নিচে বসত। গাছ থেকে ঝরেপড়া তাজা বকুল কুড়িয়ে কতদিন নাকে লাগিয়ে সোঁদাগন্ধ নিয়েছে তার হিসাব নেই। আহা! কখনো মৃদু বাতাসে বকুল এসে গায়ের ওপর আছড়ে পড়ত। বকুল ফুল হাতে নিয়ে বন্ধু ও সহপাঠী মুবারকের সঙ্গে কত বিচিত্র গল্পে মেতে থাকত। আজ তার ফেলে আসা এসব কথা যেন সদ্য ঘটে যাওয়া কাহিনির মতো মনে পড়ছে।

বাসার দিকে হাঁটতে হাঁটতে তার আরও মনে পড়েছে, সেই মুবারক অকালপ্রয়াত হয়েছিল। অনেকদিন পরে সে নিজে জেনেছিল, তার বন্ধুটি মাত্র একদিনের জ্বরে আকস্মিকভাবে মৃত্যুবরণ করে। মুবারক লেখাপড়ায় তেমন মনযোগী ছিল না। কিন্তু সে খুব প্রাণখোলা ও হৃদয়বান ছিল। গান গাইত, হঠাৎ অট্টহাসিতে ফেটে পড়ত। যদিও সে স্কুলের গন্ডিটা অতিক্রম করতে পারেনি। সেবার সে এসএসসি পরীক্ষায় ফেল করেছিল। তার কথা সাজুর প্রায়ই মনে পড়ে। নবম-দশম শ্রেণির সময়ই তাকে ভীষণ বলিষ্ঠ ও শক্তিশালী এক যুবক মনে হতো। শ্যামলা গড়ন, গাঢ় কালো চুল, হাস্যোজ্বল মুখচ্ছবির জ্যোতি এখনো তার ক্লাসের সবার চোখে আলো হয়ে ভাসে। সাজুর মনে পড়ে, প্রতিদিন স্কুল থেকে ফেরার পথে অতীতপুর রেলস্টেশন পার হওয়ার সময় মুবারক রেলের পাথর নিয়ে ঢিল ছুড়ে অকল্পনীয় দূরে ফেলতে পারত। যা দেখে সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকত। ছাত্ররা বলাবলি করত, তার গায়ে একটা দানবের শক্তি আছে। কলেজে উঠে সাজু কথাশিল্পী শরৎচন্দ্রের কালজয়ী চরিত্র ইন্দ্রনাথের সঙ্গে মুবারকের একটা অসাধারণ সামঞ্জস্যতা খুঁজে পেয়েছিল।

৫.

স্কুলের সময়ে বকুলতলায় সাজুদের বসাটা অধীরবাবু কখনো ভালো চোখে দেখতেন না। ধুতির সঙ্গে সাদা হাতাওয়ালা গেঞ্জি ও পায়ে কাঠের খড়ম পরে তিনি সারাক্ষণ উচ্চস্বরে চিৎকার করতেন। মুখের ভেতরে পান নিয়ে বাড়ির চাকর-বাকরকে ডাকাডাকি, বকাবকি করার মাধ্যমে যেন পরোক্ষভাবে তাদেরই বারণ করতেন। কখনো পানের পিক ফেলে গলা ছেড়ে কাশি দিতেন। এলাকায় তিনি অধীর দত্ত নামেই ব্যাপকভাবে পরিচিত ছিলেন। তার সঙ্গে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের দহরমমহরম ভাব থাকায় তাঁকেও ছাত্রদের অনেক সমীহ করে চলতে হতো। তার চলনে-বলনে-কথনে এক ক্ষয়িষ্ণু জমিদারের আভিজাত্য ফুটে উঠত। কথা বলতেন নাটকের সংলাপের মতো করে। সবাই জানত সাজুদের স্কুলের জমিদাতা ছিলেন তারই নিজের পূর্বপুরুষগণ। আর এত বৃহদাকার জমি ছাড়া ষাটের দশকের মাঝামাঝিতে স্কুলটির স্থানান্তর কোনো ক্রমেই সম্ভব ছিল না। ফলে এই পরিবারের প্রতি ছাত্রছাত্রীদের প্রচ্ছন্ন কৃতজ্ঞতাবোধের কোনো সীমা ছিল না। এতকাল পরে এখন সাজু সহজেই অনুধাবন করতে পারে, একজন সংস্কৃতিমনস্ক ও মোটামুটি শিক্ষিত মানুষ হলেও অধীরবাবু ছিলেন খানিকটা সাম্প্রদায়িক এবং দুর্বিনীত স্বভাবের। তিনি বকুলগাছ আর উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত স্বচ্ছজলের পুকুরটির বাঁধাই করা ঘাটলায় দিনমজুর শ্রেণির লোকজন নিয়ে আড্ডা দিতেন। তার বাড়িতে বকুল ছাড়াও গন্ধরাজের বিরাট বাগান ছিল। পুরনো বটগাছ গজানো দ্বিতল অট্টালিকার পেছনে ছিল গহীন জঙ্গল। ক্লাসের ফাঁকে মেয়েরাও লুকিয়ে লুকিয়ে গন্ধরাজ তুলে নিয়ে চুলের খোঁপায় গুঁজে রাখত। মধ্যবয়সী অধীরবাবু তখনো নিঃসন্তান ছিলেন। এমনকি আমৃত্যু তা-ই ছিলেন। প্রচলিত আছে, সন্তানহীন মানুষের মধ্যে নিষ্ঠুরতা বাসা বাঁধে। তিনি সারা দিন ঘুরে ঘুরে বিশাল বাড়িটার চৌহদ্দি মেপে বেড়াতেন। ফুলের বাগানের দিকে তীক্ষè দৃষ্টি রাখাও তার অন্যতম প্রধান কাজ ছিল।

৬.

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ই সাজু আসল ঘটনা জানতে পারে, ১৯৪৭ সালের দেশভাগের সময় এবং পরবর্তী ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের আগে ও অব্যবহিত পরে অধীরবাবুর নিকটাত্মীয়রা ভারতের চলে যান। তখন তারা কেবল পার্শ্ববর্তী কলকাতায় নয়, কেউ কেউ দিল্লিতেও গিয়েছিলেন।

জনশ্রুতি আছে, যারা গিয়েছিলেন, সবাই রাতের আঁধারে স্বদেশ স্ব-ভূমি ত্যাগ করেছিলেন। দিনের আলোয় কাউকে পাওয়া যায়নি।

কিন্তু সাজু অনেকদিন পরে জেনেছিল, অধীরবাবুর বাড়িটার প্রকৃত মালিক যারা তাঁরা আর কখনো ফেরেননি। তবে এঁদের বংশলতিকার কেউ একজন দুয়েকবার এসে ভিটেমাটি এবং স্কুলটা দেখে গিয়েছিলেন। অধীর দত্ত এঁদের সরাসরি পরম্পরাগত স্বজন না হলেও কালক্রমে রক্তের সম্পর্কের উত্তরাধিকারী হয়ে যান। যদ্দুর জানা যায়, নিঃসন্তান হওয়ায় এখন আর এদের কেউ অবশিষ্ট নেই। বকুলতলার বাড়িটাও হাতবদল হয়ে হয়ে আগের জমিদারির শ্রী হারিয়ে তথাকথিত আধুনিক হয়েছে। এখন বোঝার উপায় নেই কে কার অলংকার। সেই বকুলগাছটির অস্তিত্ব নিয়েও সাজুর শঙ্কা আছে। সত্তর দশকের গোড়াতেই তারা বকুলগাছটাকে অনেক বয়স্ক তরু হিসেবেই পেয়েছিল। তখনই তার কান্ডে ও শাখায় বয়সের ছাপ পড়েছিল। স্বাধীনতা-পরবর্তী কালেও তাদের গ্রামের তথা এলাকার যুবসমাজের নাটক, থিয়েটার বা যাত্রা মঞ্চায়নের অন্যতম প্রধান কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছিল সেই বকুলতলা। এতে অবশ্য নাট্যজন অধীরবাবুর সরাসরি সম্পৃক্ততা ও সহযোগিতা থাকত। 

৭.

আজকাল মাঝেমধ্যে এমনটা ভেবে সাজু আকুল হয়। বকুল ফুলের সঙ্গে কীভাবে যেন তার জীবনের একটা অদৃশ্য বন্ধন স্থাপিত হয়ে আছে। সে যখন যেখানেই বকুল ফুল দেখেছে অন্তত ছুঁয়ে নিয়েছে এবং সোজা নাকের সঙ্গে স্পর্শ করিয়েছে। প্রকৃতির অন্য কোনো ফুল তাকে সেভাবে টানেনি বা আকৃষ্ট করতে পারেনি।

সেদিনই বাসায় প্রবেশ করতে সাজু বলছিল, বকুল ফুল তার বাবা মৌলানা ইকতিয়ার হোসেনকেও অনির্বচনীয়ভাবে আকৃষ্ট করত। শৈশবে সে তার বাবাকেও দেখেছে, পকেটে করে বকুলের মালা নিয়ে সর্বত্র ঘুরে বেড়াতে। এমনকি মাঝেমধ্যে তাঁর পাঞ্জাবির পকেটে শুকিয়ে শক্ত হয়ে মিশে থাকতো কিছু বিবর্ণ হয়ে যাওয়া বকুলের লালচে গুঁড়ো। তাহলে বকুলের গন্ধ কী তার বাবাকেও মুগ্ধতায় আচ্ছন্ন করত?

আজ এত বছর হয়ে গেল, সাজু দিব্যি প্রৌঢ়ত্ব পেরিয়ে বার্ধক্যের দ্বারপ্রান্তে এসে উপনীত হয়েও অধীরবাবুর সেই বকুলতলাকে ভুলতে পারেনি। বরঞ্চ যখনই যে অবস্থাতেই সে বকুলের গন্ধ নেয়, তার প্রধান ইন্দ্রিয় নাসিকার কোষগুলো যেন তৎক্ষণাৎ নেচে ওঠে। কী যে বিস্ময়কর ক্ষমতা বকুলের! সে তাকে নিমিষেই বহুদূর পেছনে নিয়ে যেতে পারে এবং হুবহু সেই মধ্য-দুপুরের প্রাণহরা অকৃত্রিম বিশুদ্ধ গন্ধটা ফিরিয়ে দেয়। সাজু এখন প্রায়শ বিনাকারণে ভাবে, স্কুলের সেই বকুলগাছটা কী আজও যথাস্থানে দাঁড়িয়ে? এখনো কী সে বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে ফুলবতী হয়ে মধুর গন্ধ বিলোতে সক্ষম? নাকি এতদিনে তার জীবনাবসান হয়েছে?

 

                লেখক : গল্পকার ও কলামিস্ট।

সর্বশেষ খবর