শুক্রবার, ২১ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা
কৃষণ চন্দের গল্প

স্বপ্নদর্শী

ভাষান্তর : শহীদ সাবের তুহিন

স্বপ্নদর্শী

পর্ব-১

চেহারাটা আমার এমন নয় যে কোনো মহিলা একবার দেখলে দ্বিতীয় বার আমার দিকে চোখ তুলে তাকাবে। তবু আমার স্ত্রীর ধারণা আমার জন্য দুনিয়ার প্রতিটি নারীর সতীত্ব বিপন্ন। সাধারণত মেয়েরা আমার সঙ্গে তেমনি আচরণ করে যেমনটি ওরা বাড়ির পুরনো ফার্নিচারের সঙ্গে করে; আমাকে এমনভাবে সম্ভাষণ করে যেন আমার মাথায় টুপি নয়, তরি তরকারির ঝাঁকা। তা সত্ত্বেও গিন্নি আমার জ্বলে পুড়ে ছাই হচ্ছে। হামেশাই আমাকে জিজ্ঞেস করে, ‘গুজ গুজ ফুসফুস করে কি বলছিল ও তোমাকে?’

‘বলছিল, মটরের দাম কেন এত বেড়ে গেছে?’

‘মিথ্যে কথা। ও তো তোমার গা ঘেঁষে বসে হেসে হেসে ঢলে ঢলে কথা বলছিল। কি কড়া মেকআপ করে এসেছে, কি ক্যাটকেটে বেগুনি রঙের শাড়ি পরেছে আর কেমন কড়া সেন্ট মেখে তোমায় ভোলাতে এসেছে, বেহায়া মাগি’।

‘আরে, ও যে আমার বন্ধুর স্ত্রী। সাত সাতটা ছেলেমেয়ের মা। সামনের ফেব্রুয়ারিতে ওর বড় মেয়ের বিয়ে। পঞ্চাশ বছর বয়স ভদ্রমহিলার। বলছিল, দাদা, আপনি...’ ।

‘দাদা! বটে! আমার স্ত্রী মুখ ভেঙিয়ে ব্যঙ্গ করল।

আমি আবার কথাগুলো বললাম, ‘বলছিল, দাদা, পুসির বিয়েতে আপনি কিন্তু শুরু থেকে শেষ অবধি দেখাশোনা করবেন, ওর সাথে সাথে সব কাজকর্ম আপনাকে করতে হবে’।

‘ওকে বলে দিও, ওর মেয়ের সাত পাকের সময় ও নিজেও যেন তোমার সঙ্গে সাত পাক সেরে নেয়’।

‘আরে, কী যা তা বলছ?’ রেগেমেগে আমি বলে উঠলাম, ‘একজন ভদ্রমহিলা সম্বন্ধে এ ধরনের নোংরা কুৎসা করতে তোমার লজ্জা হয় না?’

‘হারামজাদি, কুটনি, আসুক না আর একবার আমার বাড়িতে। ওর বেণী কেটে যদি না ছুঁড়ে ফেলি’।

‘তোমার কি মাথাটাথা খারাপ হয়ে গেছে? আমি প্রেম করব ওই পঞ্চাশ বছরের বুড়ির সঙ্গে?’

‘আরে যাও, যাও...তুমি তো মাটির পুতুল পেলেও তার সঙ্গে প্রেম করবে। তুমি তো আস্তাকুঁড়ের নোংরা জঘন্য ভিখিরি মেয়ে দেখলেও তার দিকে চোখ টিপবে। আমি কি দেখতে পাই না কেমন বেহায়ার মতো তুমি আমার বান্ধবীদের দিকে তাকাও। তুমি কি একটা মানুষ?’

‘কি তবে আমি? জানোয়ার?’

‘জানোয়ারেরও অধম’।

রেগে আগুন হয়ে আমি বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলাম। সারাটা দিন অফিসে ব্যস্ততার পরে আশা করে এসেছিলাম রমা সুন্দর শাড়ি পরে সেজেগুজে টি-পটে সুন্দর একটি চকচকে কাপে করে চমৎকার এককাপ চা করে খাওয়াবে। আর এসে দেখছি এই ফ্যাসাদ।

দুপদাপ করে পা ফেলে রাগে টগবগ করতে করতে আমি মোড়ের ইরানি রেস্টুরেন্টে চলে গেলাম। গিয়ে এক কাপ চায়ের অর্ডার দিলাম।

‘সিঙ্গল না ডবল?’ বয়টা জিজ্ঞেস করল।

‘সিঙ্গল’।

‘স্পেশ্যাল না অর্ডিনারি?’ বয়টা আবার জিজ্ঞেস করল।

‘অর্ডিনারি’

‘হালকা না কড়া?’

‘কড়া’। আমি ধমক দিয়ে উঠলাম। ছোড়াটা মুচকি মুচকি হাসতে হাসতে চলে গেল। কিচেনের কাউন্টারের বেয়ারাকে গিয়ে বলল, ‘সিঙ্গল, চালু, কড়া করে এক কাপ চা। দাদা আজ ফের বাড়িতে ঝগড়া করে এসেছেন’।

এ সংসার বড় কঠিন। কেউ যদি কল-কারখানায় কাজ করে তাহলে তাকে কলুর বলদের মতো ঘানির চারদিকে ঘোরানো হয়। অফিসে চাকরি করলে অফিসের টেবিলের উপরে ধোপার কাপড়ের মতো তাকে আছড়ানো হয়। ঘোরাঘুরির কাজকর্ম যদি হয় তাহলে এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় ছোটাছুটি করানো হয় আর ঘণ্টার পর ঘণ্টা অত্যন্ত যাচ্ছেতাই ব্যবহার করে দরজার বাইরে বসিয়ে রাখা হয়। এ বড় শক্ত দুনিয়া। প্রথম নজরেই প্রতিটি মানুষ আপনাকে দেখে এটাই ধরে নেবে যে আপনি ওর কাছে এসেছেন ওর পকেটটি মারতে। আর সত্যিই যদি খেয়াল করে দেখা যায়, দেখা যাবে যে, আমাদের মডার্ন বিজনেসটা এক ধরনের শোভন পকেটকাটা বই আর কিছু নয়। আর প্রতিযোগিতা বলতে তো এটাই বোঝায় যে, কে কার পকেট বেশি করে কাটতে পারে। কিন্তু আমাকে কি করে এসবের জন্য দায়ী করা যেতে পারে? আমি তো এই বিরাট বিশাল ভয়ানক যন্ত্রের একটি নগণ্য যন্ত্রাংশ মাত্র; একটি ছোট্ট তৃণখণ্ড, একটি ক্ষুদ্র কণিকা মাত্র। ওরা আমাকে পিটিয়ে, ঘষে, পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে ওদের যন্ত্রে একদম ফিট করে নিয়েছে। এখন আমার আগ্রহ শুধু এই যে, সংসারটা আমার কোনো মতে চলুক আর আমি কোনো মতে চলি। একটা যন্ত্রের একই জায়গায় একই পেঁচে ফিট করা একটা যন্ত্রাংশের মতো আমি চলতে থাকি। আমি জানি এভাবে দিনরাত হাড়ভাঙা খাটুনি খাটতে খাটতে ওই যন্ত্রের ভেতরেই ক্ষয়ে ক্ষয়ে একদিন আমি ভেঙে গুঁড়িয়ে যাব। সেদিন ওরা যন্ত্রের ভেতর থেকে বের করে আমাকে ছুড়ে ফেলে দেবে, আর আমার জায়গায় একটা নতুন যন্ত্রাংশ লাগিয়ে নেবে।

সেদিন আমার সংসার কী করে চলবে? কে ঘরের ভাড়া দেবে? রমার জন্য শাড়ি আমি কোথা থেকে আনব? কীভাবে ছোটো মেয়ের স্কুলের মাইনে আর বড় ছেলের কলেজের মাইনে দেব? আর ঐ ৩৫টি টাকা যা আমি প্রতিমাসে আমার বুড়ি মাকে মুজফফর গড় শহরে পাঠাই তাই বা কেমন করে পাঠাব? আমার কাছে এসবই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন, আর এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে খুঁজতে আমার চুল সব পেকে যাচ্ছে।

আমি ধমক দিয়ে উঠলাম। ছোড়াটা মুচকি মুচকি হাসতে হাসতে চলে গেল। কিচেনের কাউন্টারের বেয়ারাকে গিয়ে বলল, ‘সিঙ্গল, চালু, কড়া করে এককাপ চা। দাদা আজ ফের বাড়িতে ঝগড়া করে এসেছেন’।

এ সংসার বড় কঠিন। কেউ যদি কল-কারখানায় কাজ করে তাহলে তাকে কলুর বলদের মতো ঘানির চারদিকে ঘোরানো হয়। অফিসে চাকরি করলে অফিসের টেবিলের ওপর ধোপার কাপড়ের মতো তাকে আছড়ানো হয়। ঘোরাঘুরির কাজকর্ম যদি হয় তাহলে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ছোটাছুটি করানো হয় আর ঘণ্টার পর ঘণ্টা অত্যন্ত যাচ্ছেতাই ব্যবহার করে দরজার বাইরে বসিয়ে রাখা হয়। এ বড় শক্ত দুনিয়া। প্রথম নজরেই প্রতিটি মানুষ আপনাকে দেখে এটাই ধরে নেবে যে আপনি ওর কাছে এসেছেন ওর পকেটটি মারতে।

কিন্তু এসব প্রশ্নে, রমার কোনো উত্তর নেই। বাইরের ঐ দয়া-মায়াহীন, ভয়ানক জগৎ যে জগতে আমাকে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে রোজগার করতে হয়, সে জগৎ সম্বন্ধে ও কোনো ধারণাও করতে পারে না। ঘরে ফিরতে না ফিরতেই ও আমাকে খোঁচাতে শুরু করে।

এই তো যেদিন নতুন রেডিও কেনা নিয়ে ওর সঙ্গে আমার ঝগড়া হয়ে গেল। সেদিন ও কি সুন্দর একখানি ময়ূরকণ্ঠী শাড়ি পরে দরজায় দাঁড়িয়ে হাসি হাসি মুখে এক ভদ্রমহিলাকে বিদায় জানাচ্ছিল। ওর মুখে যেন মধু ঝরছিল, কি প্রাণজুড়ানো কথা। ওর হাসিখুশি মুড দেখে খুব খুশি হয়ে ভেবেছিলাম চায়ের সঙ্গে গাজরের হালুয়ার জন্য আবদার করব।

কিন্তু ঘটনা ঘটল অন্যরকম। ভদ্রমহিলা যেতে না যেতেই রমা ময়ূরকণ্ঠী শাড়িখানা ছেড়ে ফেলে তাড়াতাড়ি করে একখান মেটে রঙের ময়লা কাপড় পরে নিল। এ আমার মাথায় কিছুতেই আসে না আমাদের বাড়ির মেয়েরা শুধু অতিথি অভ্যাগতকে অভ্যর্থনা করতে কেন ভালো ভালো শাড়ি পরে, আর যেই অতিথি চলে যায়, শাড়ি খসে পড়ে, মুখের হাসিও খসে পড়ে, খুশি খুশি ভাবটাও খসে যায়, তারপরই সঙ্গে সঙ্গে ভুরু কুঁচকে ওঠে, কপালে কুঞ্চনরেখা দেখা দেয়। কোমরে হাত দিয়ে রমা খেঁক খেঁক করে উঠল, ‘জানো তুমি?’

মিন মিন করে বললাম, ‘কি?’

‘পুসির মা এসেছিল। ওরা একটা নতুন রেডিও কিনেছে’।

‘কিনেছে হয়তো পুসির বিয়েতে দেবার জন্য’।

‘পুসির বিয়ের জন্য তো একটা কিনেছেই। এটা কিনেছে ওদের নিজেদের জন্য। আর তুমি? আজ ছ’ বছর ধরে দেড়শ টাকার এই সেটটা আঁকড়ে ধরে আছ, এটাকে সারাই করাতে করাতে আমি দেউলে হয়ে গেলাম। কোনো স্টেশনই ঠিকমতো ধরে না ছাই। রেডিও সিলোন ধরতে গেলে কায়রো স্টেশন বাজতে শুরু করে। দেখবে একদিন তোমার এই রেডিওটাকে নিয়ে গিয়ে আমি ডাস্টবিনে ছুড়ে ফেলে দেব’।

‘বেশ তো, দাও না ফেলে’।

‘তুমি তাহলে আমাকে একটা রেডিও কেন কিনে দিচ্ছ না?’

‘দুই হাজার টাকা পাব কোথায় আমি?’

‘পুসির বাবা একটা বড় ফার্মে একজিকিউটিভ, তিন হাজার টাকা মাইনে পায়’।

‘তুমি তাহলে এই চাকরিটা ছেড়ে দিচ্ছ না কেন?’

‘এই চাকরি যে ছেড়ে দেব, আর একটা চাকরি কোথায় পাব?’

‘শান্তার বাবা কি করে পেল আর একটা? সাড়ে তিনশ টাকার চাকরি ছেড়ে দিয়ে কি করে সাড়ে সাতশ টাকার চাকরি পেল? তুমি কি খবর রাখ ওরা কিস্তিতে একটা ফ্রিজ নিয়ে এসেছে। শিগগিরই এই ফ্ল্যাটটা ছেড়ে দিয়ে ওরা একটা বড়সড়ো ফ্ল্যাটে চলে যাবে। আর তুমি?... যেদিন তোমার খুঁটিতে বাঁধা পড়েছি সেদিন থেকে এই ঘুপচি ঘরে আমাকে আটক করে রেখেছ।’

‘এই ফ্ল্যাটটাকে তুমি ঘুপচি ঘর বলছ?’ আমি রেগেমেগে বলে উঠলাম।

‘এই ঘুপচি ঘরটাকে ফ্ল্যাট বললে ফ্ল্যাট শব্দের বেইজ্জতি করা হয়।’ রমাও গরম হয়ে বলল, ‘দেয়ালে ফাটল, রান্নাঘরে আরশোলা, বারান্দায় অন্ধকার, স্যাঁতসেঁতে সব ঘর। এগুলো ঘর না কি গোয়াল আমার বাপের বাড়িতে চাকর বাকররাও এর চেয়ে ভালো ঘরে থাকে। ও বাড়ির কুকুরগুলোও এর চেয়ে বড় ঘরে গড়াগড়ি দেয়।’

‘কি আমি কুকুর?’ আমি রেগে চেঁচিয়ে উঠলাম।

‘কটকট কর না। আমি তোমাকে কুকুর বলিনি।’

‘আমি কটকট করছি। আমি ব্যাঙ।’ রাগে রক্ত আমার টগবগ করে ফুটতে লাগল। ‘আমি ব্যাঙ, আমি কুকুর, আমি জানোয়ার, তুমি তাহলে আমার সাথে থাকছ কেন?’

‘কে থাকছে তোমার সঙ্গে, আমি এক্ষুনি বাপের বাড়ি চলে যাচ্ছি।’ বলে রমা চাবির গোছাটাকে শাড়ি থেকে খুলে মেজেতে ঋণ করে ছুড়ে ফেলে দিয়ে ছল ছল চোখে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেল।

রমা বাড়ি থেকে বেরিয়ে সোজা মোড়ের ইরানি রেস্টুরেন্টে ঢুকে কাউন্টারের পাশে গিয়ে দাঁড়াল। চোখের জল চেপে, ঠোঁটে ঠোঁট চেপে দাঁড়িয়ে রইল। ফোন খালি হলে একটি বয়কে বলল, ‘রেলওয়ে বুকিং অফিসে একটা টেলিফোন কর তো, জিজ্ঞেস করো আজ রাতে লক্ষেèৗ যাবার গাড়িতে ফার্স্ট ক্লাসের টিকিট পাওয়া যাবে কিনা?’

ছেলেটি নম্বর ডায়াল করল। জিজ্ঞেস করে বলল, ‘দুটো টিকিট খালি আছে।’

‘বেশ।’

‘রিজার্ভ করাব?’ ছেলেটি জানতে চাইল।

‘না থাক। আমি নিজে গিয়ে করিয়ে নেব।’ রমা বেশ তিক্ত কণ্ঠে বলে রেস্টুরেন্ট থেকে বেরুতে যেতেই বয়টি বলে উঠল, ‘মেমসাব, টেলিফোনের পয়সাটা?’

‘আমাদের খাতায় লিখে রেখো।’ রমা বেরিয়ে যেতে যেতে বলল।

হোটেলের বয়টি কাউন্টারে গিয়ে বলল, ‘টেলিফোনের পয়সা দাদার খাতায় লিখে রাখুন। দাদার গিন্নি বাপের বাড়ি যাচ্ছেন।’

কিন্তু বাপের বাড়ি, সে তো একটা অস্থায়ী আশ্রয়। বাপের বাড়ি গেলেও আজ হোক কাল হোক ফিরে আসতে হয়। স্বপ্নলোক থেকে বাস্তব জগতে ফিরে আসতে হয়। স্বপ্নলোক আর বাস্তব জগতের মধ্যে এতটাই প্রভেদ যে আমি বিভ্রান্ত হয়ে পড়ি, আমি বুঝতে পারি না আমি কার কাছে কার অবিশ্বাসের জন্য অনুযোগ করব, কার বদমেজাজের অপবাদ দেব। কখনো সখনো আমার মনে হয় যেন রমা এ যুগের নারী নয়। না ওর আকৃতি না ওর প্রকৃতি, না ওর প্রবৃত্তি ওর ব্যক্তিত্বের কোনো দিকই এ যুগের নয়। ওর সমস্ত স্বপ্নই সেই অতীতের স্বপ্ন যে অতীতে রঙিন চিকের আড়ালে সরসর করা রেশমি পর্দার ভেতরে মোমবাতি আলো ছড়ায়, দালানে দালানে পর্দার পরে পর্দা পড়তে থাকে আর সরু গলা কুঁজোর চারপাশে বেলফুলের মালা জড়ানো হয়। আর গোলাপের মতো বাটিতে সব সুগন্ধি সাজিয়ে বাঁদীরা রুপোর থালা সাজিয়ে এক মুঘল শাহজাদির মতো কবি মেজাজের রমার প্রসাধনে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।

যদিও বিংশ শতাব্দীর এই যন্ত্রসভ্যতায়, কুকুরের মতো একটি অন্যটির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়া আকাক্সক্ষার জগতে, এসব কি করে সম্ভব, কজনের পক্ষে সম্ভব আর কেমন কেমন কোমল সব ভাবনার উপরে নিরপরাধ সব জীবনের কণ্ঠরোধ করতে পারা সম্ভব? এ দুঃখ আমি কাকেই বা জানাই, কাকেই বা বোঝাই আর কার কাছেই বা বর্ণনা করি? কারণ আমার আশপাশে এমন কে আছে যে এ ধরনের ব্যর্থ স্বপ্নবিলাসে বিভোর নয়। আর এমন কে আছে যে আপন ক্ষেত্রে আপন পরিবেশে আপন জীবন নিয়ে এমন একটি নিরর্থক বৈভবশালী স্বপ্ন দেখে না এবং এই স্বপ্নের চারপাশে চক্কর কাটতে কাটতে অর্ধেক বাস্তব আর অর্ধেক কল্পনার রৌদ্রছায়ার মাঝে তার সম্পূর্ণ জীবনটা কাটিয়ে দেয় না। 

[চলবে]

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর