তার নাম চেতা নিলওয়াতি। আচমকা দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে চেতার জীবনটা থমকে যেতে পারত কিন্তু সেটা তিনি হতে দেননি। চেতা নিলওয়াতি। যিনি ইন্দোনেশিয়ার একটি বিখ্যাত ম্যাগাজিনের নারী সাংবাদিক। সাংবাদিকতা পেশায় দীর্ঘ ১০ বছর তিনি কাজ করার পর হঠাৎ ২০১৬ সালে তার জীবনে নেমে আসে ঝড়। ক্রমশ দৃষ্টিশক্তি কমে আসতে থাকে চেতা নিলওয়াতির। ডাক্তারের শরণাপন্ন হলে দেখা গেল চেতার চোখের রেটিনায় সমস্যা হয়েছে। ডায়াবেটিস রেটিনোপ্যাথির কারণে চোখের বল থেকে রেটিনা সরে যাচ্ছিল ক্রমশ। সে বছরেরই শেষদিকে গিয়ে পুরোপুরি অন্ধ হয়ে যান চেতা। তার জীবনে নেমে আসে অন্ধকার। এমন হলে সাধারণত মানুষ অসহায় হয়ে পড়ে। কিন্তু চেতা নিলওয়াতি থেমে যাওয়ার পাত্রী নন। যিনি এত বছর ধরে চুটিয়ে সাংবাদিকতা করেছেন সমাজের অসংগতিকে নিজের চোখ দিয়ে দেখে তুলে এনেছেন মানুষের চোখের সামনে, তিনি দমে যেতে রাজি নন। পুরোপুরি দৃষ্টিহীন হয়েও চেতা পুরোদমে সাংবাদিকতা পেশায় নিয়োজিত করেছেন নিজেকে। আগের মতোই সংবাদের পেছনে ছুটে যাচ্ছেন, ওয়েবসাইট ডেভেলপ করছেন। সামনে করোনা কেটে গেলে অস্ট্রেলিয়ায় মাস্টার্স করতে যাবেন বলেও জানিয়েছেন গণমাধ্যমকে। এখন তার কাজ দেখে কে বলবে তিনি চোখে দেখতে পান না? চোখের আলো নেই বলে থেমে থাকে না জীবন। জ্ঞানের আলো যদি থাকে অফুরন্ত আর জ্ঞানের ভান্ডার যদি থাকে সমৃদ্ধ তাহলে দৃষ্টিহীনতা কোনো বাধা হতে পারে না।
প্রজ্ঞার শক্তি পৃথিবীর সবকিছুকে জয় করতে পারে, তাই দেখিয়েছে জ্ঞানপিয়াসী অদম্য দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরা। এমন উদাহরণ অনেক রয়েছে। অন্ধ ব্যক্তিদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ছিলেন ইংরেজ কবি জন মিলটন, গ্রিক কবি হোমার, ফারসি কবি রুদাকি এবং হেলেন কিলার। এ ছাড়াও আরবি সাহিত্যের খ্যাতনামা কবি বাশশার বিন বোরদসহ অনেকেই রয়েছেন।