শনিবার, ৬ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

বিশ্ববিজ্ঞান একাডেমির ফেলো বাংলাদেশি ড. তোফাজ্জল

শনিবারের সকাল ডেস্ক

বিশ্ববিজ্ঞান একাডেমির ফেলো বাংলাদেশি ড. তোফাজ্জল

বিশ্ববিজ্ঞান একাডেমির (টিডব্লিউএএস) ফেলো নির্বাচিত হয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের (আইবিজিই) প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. তোফাজ্জল ইসলাম।

১ নভেম্বর বিশ্ববিজ্ঞান একাডেমির সদর দফতর ইতালি থেকে সংস্থাটির সভাপতি এবং নির্বাহী পরিচালকের পাঠানো এক অভিনন্দন বার্তায় অধ্যাপক ড. তোফাজ্জল ইসলামকে এ তথ্য জানানো হয়।

বিশ্বজ্ঞানভান্ডারে অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রতি বছর বিশ্ববিজ্ঞান একাডেমির ফেলোদের ভোটে নতুন ফেলো নির্বাচন করা হয়।

এ ছাড়া সম্প্রতি স্টানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের প্লস বায়োলজিতে প্রকাশিত বিজ্ঞানীদের ডাটাবেস সম্পর্কিত এক প্রবন্ধে তিনি বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ দুই শতাংশ বিজ্ঞানীর একজন এবং বাংলাদেশে জীবপ্রযুক্তি, কৌলিতত্ত্ব এবং অণুপ্রাণবিজ্ঞানে দেশের শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানীর স্থান লাভ করেন। অধ্যাপনা এবং গবেষণায় অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ইতিপূর্বে অধ্যাপক তোফাজ্জল ২০১৬ সালে বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমিরও ফেলো নির্বাচিত হন।

২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে তিনি আজীবনের জন্য বিশ্ববিজ্ঞান সংস্থাটির ফেলো হিসেবে উন্নয়নশীল দেশসমূহের বিজ্ঞান উন্নয়নে কাজ করবেন। নতুন বছরের শুরুতে ইতালিতে নতুন ফেলো হিসেবে তাঁর অভিষেক অনুষ্ঠান হবে। বাংলাদেশে আধুনিক বায়োটেকনোলজির প্রয়োগে কৃষিতে একটি নতুন বিপ্লব ঘটাতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন অধ্যাপক ড. মো. তোফাজ্জল ইসলাম।

অধ্যাপক ড. মো. তোফাজ্জল ইসলাম

২০১৬ সালে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ৮ জেলায়  ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে ঘটে যাওয়া গমের মহামারীর সংকটকালে তিনিই প্রথম রোগজীবাণু ছত্রাকটির জীবনরহস্য বিশ্লষণের মাধ্যমে গমের শত্রু চিহ্নিত করে আলোড়ন সৃষ্টি করেন। ওই যুগান্তকারী গবেষণায় তিনি চারটি মহাদেশের ৩১ জন বিজ্ঞানীকে সম্পৃক্ত করে একটি জাতীয় সমস্যার সমাধান করেন। তাঁর এ আবিষ্কারের ফলে রোগটির মোকাবিলা করার জন্য কৃষকদের যথাযথ পরামর্শ দেওয়ায় পরবর্তী বছর গম ফসলের ক্ষতি হ্রাস করা সম্ভব হয়।

বর্তমানে খাদ্য নিরাপত্তার জন্য চরম হুমকি গমের ব্লাস্ট রোগটি মোকাবিলায় তিনি জিন এডিটিং, ন্যানোটেকনোলজি, প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়াসহ আধুনিক বায়োটেকনোলজি প্রয়োগে অগ্রগতি লাখ করেছেন। সম্প্রতি তিনি গমের ব্লাস্ট রোগ দ্রুত শনাক্তকরণের জন্য একটি সহজ জীবপ্রযুক্তি আবিষ্কার করেছেন যা বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের গম আমদানি-রপ্তানিতে গবেষণায় এবং কৃষকের মাঠে ব্যাপক ব্যবহার হবে। এ ছাড়াও তিনি ধান, গম এবং স্ট্রবেরি-তে রাসায়নিক সারের বিকল্প হিসেবে সাশ্রয়ী প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া প্রযুক্তি আবিষ্কার করে কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ভেষজ উদ্ভিদ এবং অণুজীব থেকে এ পর্যন্ত তিনি ৫০টির অধিক রোগজীবাণু প্রতিরোধী নতুন প্রাকৃতিক যৌগ বা অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কার করেন। মৌলিক গবেষণায় অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ দেশে-বিদেশে তিনি অনেক পুরষ্কার, গোল্ড মেডেল এবং অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন।  অধ্যাপক ড. মো. তোফাজ্জল ইসলাম ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্মগ্রহণ করেন।

সর্বশেষ খবর