শনিবার, ২৮ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

নিভৃত পল্লীতে আলো ছড়ানো জহির

মো. মারুফ মজুমদার

নিভৃত পল্লীতে আলো ছড়ানো জহির

করোনা মহামারিতে পুরো পৃথিবীতে যখন স্থবির হয়ে পড়েছিল তখন অসহায় মানুষের সেবায় এগিয়ে আসেন কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া এক তরুণ তুর্কি। গড়ে তোলেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘সংশপ্তক’। বলছিলাম জহিরুল ইসলামের কথা। প্রথমে একাই মাইকিং, লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে মানুষকে সচেতনতা কার্যক্রম চালান, হাট-বাজার, বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষকে সচেতন করে তোলেন। পরবর্তীতে ২৩ মার্চ ২০২০ সালে শিক্ষার্থীদের নিয়ে তৈরি করে স্বেচ্ছাসেবী টিম সংশপ্তক। ২৬৬ জন সাধারণ শিক্ষার্থী, ১৩ জন ডাক্তার এবং ৪১ জন মেডিকেল শিক্ষার্থীকে নিয়ে কাজ শুরু করলেও বর্তমান সদস্য সংখ্যা ১২৩৫ জন শিক্ষার্থী। করোনার শুরুতেই টিমের সদস্যের নিজস্ব অর্থায়নে একযোগে ১৬ ইউনিয়ন ও পৌরসভার বাজারে ও গ্রামে গ্রামে জীবাণুনাশক প্রয়োগ, বিনামূল্যে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ, মাইকিংসহ নানা কার্যক্রম চালান। জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমের পাশাপাশি বিদেশ ফেরত ব্যক্তিদের সচেতন করে তোলা, বাড়িতে অবস্থান করায় তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী কিনে দেওয়াসহ আরও সহায়ক কার্যক্রম চালায় টিম সংশপ্তক। ২ হাজারেরও অধিক মানুষকে দেওয়া হয় বিনামূল্যে টেলিমেডিসিন সেবা।

লকডাউনে কর্মহীন ১৭০০ দরিদ্র পরিবারকে খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হয়। কর্মহীন মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য চালু করা হয় বিনামূল্যে খাবার পৌঁছে দেওয়ার সেবা ‘হ্যালো সংশপ্তক’। এর মাধ্যমে দুই শতাধিক মানুষকে খাদ্য সামগ্রী দেয় তারা। লাল সবুজের ঘর করে দেন পাঁচ কন্যা সন্তান নিয়ে অসহায় জীবনযাপন করা এক বিধবা নারীকে। দেওয়া হয় খাদ্যসামগ্রী ও সেলাই মেশিন। নিরাপদে মানুষ করোনা টেস্ট করানোর জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স একটি করোনা নমুনা সংগ্রহ বুথ নির্মাণ করে সংশপ্তক। করোনা আক্রান্ত রোগীদের উপহার দেওয়া হয়েছে ফল ও খাদ্যসামগ্রী। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলাকালীন গত বছর রমজানের লকডাউনে ১৫ শতাধিক ভাসমান ও ছিন্নমূল অসহায় মানুষকে সাহরি ও ইফতার উপহার দেন। ১৫ জন পথশিশুকে ঈদের জামা-কাপড় ও দেড় শতাধিক মানুষকে ঈদ সামগ্রী দেন। ঈদুল আজহায় পশুর হাটগুলোতে মাইকিং, লিফলেট ও মাস্ক বিতরণ করে। চার শতাধিকেরও অধিক মানুষকে দেওয়া হয় বিনামূল্যে অক্সিজেন সেবা।

সর্বশেষ খবর