সালটা তখন ২০১৫। আমি শিক্ষকতার খাতিরে তখন বান্দরবানের লামায় ছিলাম। আমার স্কুলের নাম ছিল কোয়ান্টাম কসমো স্কুল। আমার সহকর্মী ছিলেন রাজ্জাক স্যার। তিনি আবার নিউমারোলজি সম্পর্কে মোটামুটি ভালো জানতেন। নিউমারোলজি হচ্ছে ‘সংখ্যা বিজ্ঞান’। মানুষের নামকে যে সংখ্যায় প্রকাশ করা যায় সেই বিষয়টি আমাকে সুন্দরভাবে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন রাজ্জাক স্যার। আসলে নামেই আমাদের পরিচয়। নাম ছাড়া কোনো মানুষের কথা চিন্তা করা যায় না। সংখ্যাবিজ্ঞানের আলোকে একটু গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করলে আমরা দেখতে পাব আপাত নিরীহ নামের মাঝেই সুপ্ত রয়েছে অনাগত ভবিষ্যতের ইঙ্গিত। আমি আরও কৃতজ্ঞ মহাজাতক শহীদ আল বোখারির কাছে। উনার নিউমারোলজির ওপর বই অধ্যয়ন করেই সংখ্যাবিজ্ঞানের অতি সহজ একটি বই আমিও লিখেছি। যার নাম ‘নামে সর্বনাশ’। নামে অনায়াসে সংখ্যায় প্রকাশ করা যায়। নামে ব্যবহৃত প্রতিটি হরফের জন্যও রয়েছে নির্দিষ্ট সংখ্যা। নামে ব্যবহৃত হরফের সংখ্যাগুলো পাশাপাশি যোগ করলেই বেরিয়ে আসবে নামের সংখ্যা। আর নামের সংখ্যাগুলোই বলে দেবে একজন ব্যক্তির অনাগত ভবিষ্যতের কথা। সংখ্যা বিজ্ঞানে হরফের সংখ্যা নিরূপণে একাধিক মত রয়েছে। তবে এর মধ্যে সবচেয়ে বৈজ্ঞানিক ও বেশিরভাগ সংখ্যা বিজ্ঞানী অনুসৃত মত হচ্ছে কিরোর মত। কিরো প্রতিটি ইংরেজি হরফের জন্য একটি করে সংখ্যা নির্দিষ্ট করেছেন। এই সংখ্যাগুলো হচ্ছে-
A=1, B=2, C=3, D=4, E=5, F=8, G=3, H=5, I=1, J=1, K=2, L=3, M=4, N=5, O=7, P=8, Q=1, R=2, S=3, T=4, U=6, V=6, W=6, X=5, Y=1, Z=7
নামের সংখ্যা বের করার জন্য প্রথম নামটি ইংরেজি হরফে লিখুন। নাম লেখার সময় সাধারণত যে বানান ব্যবহার করেন, সে বানানই লিখুন। ইংরেজিতে নাম লিখে তার নিচে প্রতিটি হরফের সমমানের সংখ্যা বসান। সংখ্যাগুলো পাশাপাশি যোগ করুন। সংখ্যাগুলোর যোগফলই নামের সংখ্যা।উদাহরণস্বরূপ একটি নাম নেওয়া যাক। হেনা দাস। ইংরেজিতে-
HENA DAS
5551 413
16 8
(1+6)=7 8
7+8=15
এখানে ৮ ঝুঁকিপূর্ণ সংখ্যা, ১৫ অত্যন্ত শুভ সংখ্যা। কিন্তু ১৬ অত্যন্ত অশুভ সংখ্যা।
নামের শুভ অশুভ সংখ্যাগুলো আমার ‘নামের সর্বনাশ’ বই এ উল্লিখিত রয়েছে।
পৃথিবীর শতকরা ৯৯ ভাগ মানুষ তার নামে ব্যবহৃত সংখ্যাগুলো জানে না।
সংখ্যাগুলো শুভ না অশুভ সেই বিষয়ে তারা অজ্ঞ। অনেক বিখ্যাত মানুষের নামের সংখ্যাগুলো অশুভ রয়েছে। যেমন : সৌরভ গাঙ্গুলী, অমিতাভ বচ্চন, করণ জোহর, উদিত নারায়ণ, কপিল শর্মা, কোবি ব্রায়ান্ট যশ গেট্স, লিওনেল মেসি, নিতা আম্বানি ও বিল গেটস ইত্যাদি।
সাধারণত নিরীহ নামের মাঝেই লুকিয়ে থাকে অনাগত ভবিষ্যতের ইঙ্গিত। এই ইঙ্গিত ভালো হলে আমরা যেমন খুশি হই, তেমনি-মন্দ হলে আমরা চিন্তাগ্রস্ত হব -এটাই স্বাভাবিক। তবে এই অশুভ প্রভাব কাটানো যায়। কখনো নামের হরফ বদল করে, কখনো হরফ বাদ দিয়ে এবং কখনো হরফ যোগ করে আমরা নামের শুভ প্রভাব আনতে পারি। ভারতীয় অভিনেত্রী ঐশ্বরিয়া রাই তার কন্যার ক্ষেত্রে নামের সংখ্যাগত ভুল করেছেন।
তার মেয়ের নাম আরাধ্যা বচ্চন।
ইংরেজিতে-
Aaradhya Bachchan
11214511 21353515
16 25
(1+6=7 (2+5)=7
(7+7)=14
আরাধ্যা বচ্চনের নামের সংখ্যাগুলো হলো ১৬, ২৫, ১৪। তার নামের মাঝে অত্যন্ত অশুভ সংখ্যা ১৬ রয়েছে। যা কোনোমতেই কাম্য নয়। সংখ্যা বিজ্ঞানের এটি ভয়াবহতম ভুল।
বাংলাদেশ ওয়ানডে ক্রিকেট দলের অধিনায়ক লিটন দাস। টেলিভিশনে যখন আমরা ক্রিকেট খেলা উপভোগ করি তখন লিটনের জার্সির দিকে যদি খেয়াল করি তখন দেখা যায় তার জার্সির গায়ে ইংরেজিতে লেখা DAS , এখন DAS
পদবিটির যদি সংখ্যা বের করতে চাই, তাহলে আসে-
(D=4, A=1, S=3) = (4+1+3)=8
আর ৮ হচ্ছে শনির প্রতীক। নিজের অজান্তেই লিটন দাস নামের মধ্যে ৮ সংখ্যা অর্থাৎ শনির প্রভাব নিয়ে আসছেন।
লিটন দাসের নাম ইংরেজিতে
LITTON DAS
314475 413
24 8
তাই লিটনের জার্সির গায়ে লেখা উচিত শুধু LITTON পরিশেষে বলতে হচ্ছে নিউমারোলজি বা সংখ্যাবিজ্ঞান জানা থাকলে নামের মাঝে শুভ-অশুভ সংখ্যাগুলো চিহ্নিত করা যায়। তাতে নামটি সঠিক হয়। তাই কারও নাম বিকৃতভাবে বা অর্থহীন ডাক নামে ডাকা উচিত নয়।