শনিবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

বাহারি ফুলে রঙিন উত্তরা গণভবন

নাটোর প্রতিনিধি

বাহারি ফুলে রঙিন উত্তরা গণভবন

সবুজের বুকে লাল, নীল, হলুদ, সাদাসহ নানা প্রজাতির ফুল দর্শনার্থীদের হাত বাড়িয়ে ডাকছে। ফুলের মিষ্টি গন্ধে মুখরিত হয়ে উঠেছে গণভবন চত্বর। সেই গন্ধে ফুলে ফুলে ঘুরছে মৌমাছি-প্রজাপতি। কর্তৃপক্ষের দাবি, শীতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত দর্শনার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।

 

গোলাপ, ডালিয়া, নয়নতারা, সিলভিয়া, জিনিয়া, চন্দ্রমল্লিকা আর হলদে গাঁদা ফুলে ছেয়ে গেছে নাটোরের উত্তরা গণভবনের বাগান। নতুন রূপে ফুলে ফুলে শোভিত প্রধানমন্ত্রীর দ্বিতীয় বাসভবন ‘উত্তরা গণভবন’ দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন হাজার হাজার দর্শনার্থী। গণভবনের মূল ফটক দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করতেই দুই পাশের সারি সারি গাঁদা ফুল দর্শনার্থীদের বরণ করছে। এসব বাহারি প্রজাতির ফুল ঘোষণা দিচ্ছে ঋতুরাজ বসন্তের আগমনী বার্তা। সবুজের বুকে লাল, নীল, হলুদ, সাদাসহ নানা প্রজাতির ফুল দর্শনার্থীদের হাত বাড়িয়ে ডাকছে। ফুলের মিষ্টি গন্ধে মুখরিত হয়ে উঠেছে গণভবন চত্বর। সেই গন্ধে ফুলে ফুলে ঘুরছে মৌমাছি-প্রজাপতি। কর্তৃপক্ষের দাবি, শীতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত দর্শনার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। সূর্য ডুবে গেলেই সেখানকার ভবনগুলো রঙিন বাতিতে ঝলমল করে উঠছে। দেশি-বিদেশি অসংখ্য ফুল ও ফলের গাছ, সুদীর্ঘ লেক, পুকুর, ইতালিয়ান গার্ডেন ও নয়নাভিরাম একাধিক ভবন নিয়ে উত্তরা গণভবন দর্শনার্থীদের বেড়ানোর জন্য পছন্দের জায়গা। উত্তরা গণভবনের মূল প্যালেসের পাশের রানীমহল, গ্র্যান্ড মাদার মহলের পাশের অংশ ও ইতালিয়ান গার্ডেনের ভিতরে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের গাছ। এগুলোতে ফুটে আছে নানা রং ও বর্ণের দৃষ্টিনন্দন ফুল।

সরেজমিন দেখা যায়, উত্তরা গণভবনের মূল ফটক পেরোলেই দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে ভিতরে দুই পাশের সারি সারি ফুলের গাছ। প্রতিটি গাছেই এসেছে ফুল। কিছু দূর এগোলেই বড় গাছগুলোতে দেখা যাচ্ছে থোকা থোকা ফুল। এ বছর উত্তরা গণভবন চত্বরজুড়ে ২১ প্রজাতির ২৫ হাজার ফুল গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে- গোলাপ, গাঁদা, ডালিয়া, নয়নতারা, সিলভিয়া, জিনিয়া, চন্দ্রমল্লিকাসহ নানা প্রজাতির ফুল। এ ছাড়া দেশ-বিদেশের বিরল প্রজাতির ফুলও ফুটেছে। যার মধ্যে- সাদা অ্যারামন্ডা, হোয়াইট পয়েন্সেটিয়া, পারিজাতসহ বাহারি প্রজাতির ফুল।

মাগুরার কলেজছাত্রী রুপালী বেগম জানান, উত্তরা গণভবন আমার পছন্দের একটি পর্যটন স্থান। শীত মৌসুমে উত্তরা গণভবনে প্রচুর ফুলের গাছ রোপণ করা হয়েছে। এতে করে গণভবনের সৌন্দর্য কয়েক গুণ বাড়িয়েছে।

বগুড়া থেকে উত্তরা গণভবন ঘুরতে আসা গৃহবধূ রোজিনা তাসনিম জানান, প্রতি শীতে উত্তরা গণভবনে বেড়াতে আসি। ফুলে ফুলে শোভিত গণভবন দেখতে খুব ভালো লাগে।

নাটোর জেলা সদর থেকে প্রায় ১ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার উত্তরে নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের পাশে দিঘাপতিয়া গ্রামে উত্তরা গণভবনের অবস্থান। পুরনো ইতিহাস ঘেঁটে জানা গেছে, ১৮০২ সালে রাজা রামজীবন ৪২ একর জমির ওপর রাজপ্রাসাদটি নির্মাণ করেন। ১৮৯৭ সালের ভূমিক¤েপ প্রাসাদটি ধ্বংস হলে ১৮৯৭ থেকে ১৯০৮ সাল পর্যন্ত সময় বিদেশি প্রকৌশলী ও বিশেষজ্ঞ শিল্পীদের সহায়তায় দিঘাপতিয়া রাজবংশের ষষ্ঠ রাজা প্রমদানাথ রায় আজকের এ রাজপ্রাসাদটি নতুনভাবে নির্মাণ করেন।

প্রাসাদের নির্মাণশৈলী এবং ভবনের কারুকার্যে মুঘল ও পাশ্চাত্য স্থাপত্যকলার মিশ্রণ দেখা যায়।

রাজপ্রাসাদে মোট ভবন আছে ১২টি। এর মধ্যে অন্যতম হলো প্রধান প্রাসাদ ভবন, কুমার প্যালেস, প্রধান কাচারি ভবন, কর্তারানি বাড়ি (গ্র্যান্ড মাদার হাউস), রন্ধনশালা, প্রধান ফটক ইত্যাদি।

গণভবনের তত্ত্বাবধায়ক খায়রুল বাশার জানান, আগে প্রতিদিন ৪০০-৫০০ দর্শনার্থী আসত এখানে। সেই সংখ্যা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০০ থেকে ১০০০। এবারের শীত মৌসুম থেকেই দর্শনার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে দাবি তার।

সর্বশেষ খবর