শনিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

বাহারি ফুলের শহীদ মিনার

আবদুল কাদের

বাহারি ফুলের শহীদ মিনার

তাজা রঙিন ফুলের শহীদ মিনার। ভাবতে যেমন শিহরণ জাগে, ফুলেল শহীদ মিনারটি দেখতেও তেমনি রোমাঞ্চকর। মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ভাষাশহীদদের স্মরণে বানানো হয়েছে এই ফুলের তৈরি শহীদ মিনার। এটি দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন অসংখ্য দর্শনার্থী। অসাধারণ এই প্রতিকৃতির দেখা মিলবে গুলশানের বেরাইদে, ঠিকানা রিসোর্টে। দৈর্ঘ্যে ২২০ ফুট ও প্রস্থে ৩৪ ফুট এই শহীদ বেদি। যেখানে ব্যবহার করা হয়েছে ১২ হাজারের বেশি টব। যার প্রতিটিতে রয়েছে ২০টি করে ফুল।  সাত রকমের ফুলে নির্মাণ করা হয়েছে এই সৃজনশীল শহীদ মিনার। ব্যতিক্রমধর্মী এই শহীদ বেদি বানানোর মূল পরিকল্পনাকারী আফরিন তাইবা আলিফ। তিনি বেসরকারি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে তিনি বলেন, ‘আমি প্রকৃতি ও ফুল নিয়ে কাজ করি। তাই চেয়েছি ইতিহাসকেও ফুলের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতে। ভাবলাম ভাষার মাস আসছে, ভাষাশহীদদের প্রতি ফুলেল শুভেচ্ছা হিসেবে একটি শহীদ বেদি নির্মাণ করি। উদ্দেশ্য, গোটা বিশ্ব যেন এই সৃজনশীল কাজ সম্পর্কে জানতে পারে। শহীদ মিনার নির্মাণ করতে গিয়ে দেখলাম, অনেক ফুল প্রয়োজন। এমন বড় স্মৃতিস্তম্ভ এশিয়ার কোথাও নেই। তখনই মাথায় আসে গিনেস ওয়ার্ল্ড বুক রেকর্ডে নাম লেখানোর। গিনেসে নাম লেখানোর আগ্রহ দেখানোর পর তারা আমাদের থেকে কিছু ডকুমেন্ট চেয়েছে। ছবি, ভিডিও ফুটেজসহ আরও বেশ কিছু কাগজপত্র চেয়েছে। এখানে কী পরিমাণ ফুল লেগেছে, কত রকমের ফুল আর শহীদ মিনারের আকৃতি বা আয়তন ইত্যাদির সব তথ্য ওদের সরবরাহ করি। ওরা যাচাই করার জন্য আসবে। সেটা যে কোনো সময় হতে পারে। এর জন্য আমরা অপেক্ষা করছি।’ বিশাল এই শহীদ বেদি সম্পর্কে তাইবা আলিফ বলেন, ‘শহীদ বেদিটি মূলত কাঠ ও বাঁশের অবকাঠামোতে তৈরি। এরপর আমরা একে ফুল দিয়ে সাজাই। মাসখানেক লেগেছে এটি তৈরিতে। ফুল সংগ্রহ করেছি নার্সারি থেকে। ২০ জন মানুষ এই বেদি তৈরিতে মেধা ও শ্রম দিয়েছেন। পাঁচ থেকে সাত রকমের ফুল ব্যবহার করা হয়েছে এতে। আর সপ্তাহখানেক লেগেছে শহীদ বেদিকে ফুলের সাজে সাজাতে। সাধারণ দর্শনার্থীরাও এই শহীদ মিনারকে বেশ সাদরে গ্রহণ করেছেন।’ তাইবা আলিফ আরও বলেন, ‘২০১৯ সালে শুরু হয় ফুল দিয়ে সাজানো ঠিকানার পথচলা। এর অবকাঠামো মুন্সীগঞ্জ থেকে আনা। এটি মূলত একটি বসবাসযোগ্য বাড়ি। আমরা একে রেস্টুরেন্টে পরিবর্তন করি। এরপর একে ফুল দিয়ে সাজানো হয়। জাপানি ফুল পিটুনিয়া ও গাঁদা ফুল। সাধারণ দর্শনার্থীরা এই পরিবর্তনটা বেশ সাদরে গ্রহণ করেন। মানুষের প্রকৃতির প্রতি এমন ভালোবাসা থেকে ঠিকানাকে ফুলে আবৃত করার পরিকল্পনা করি। ২০২১ সালে পিটুনিয়া ফুলের পাশাপাশি ডায়ানথাস, চন্দ্রমল্লিকা, গাঁদা ফুল অর্থাৎ শীত মৌসুমের ফুলগুলো দিয়ে রাঙানো  হয় ঠিকানাকে। বলে রাখি- শীত মৌসুমে ঠিকানায় চলে ফ্লাওয়ার ফেস্টিভ্যাল। তখন দর্শনার্থীর ভিড়ও থাকে বেশি।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর