শনিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
নওগাঁর ডা. মঞ্জুর

প্রথম শহীদ মিনার নির্মাতাদের একজন

বাবুল আখতার রানা, নওগাঁ

প্রথম শহীদ মিনার নির্মাতাদের একজন

দেশের প্রথম শহীদ মিনার যাঁদের হাতে তৈরি করা হয়েছিল তাঁদেরই একজন ভাষাসংগ্রামী ডা. মঞ্জুর হোসেন। নওগাঁ সদর উপজেলার সুলতানপুর এলাকার সন্তান ডা. মঞ্জুর হোসেন। বাবা মোবারক আলী ও মা নুরুন নাহারের আট সন্তানের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। মঞ্জুরের জন্ম ১৯২৮ সালের ১৫ জুন। ১৯৬৮ সালের ৪ ডিসেম্বর ৪০ বছর বয়সে তিনি মারা যান। বাড়ির পাশে পারিবারিক কবরস্থানে চিরনিদ্র্রায় শায়িত তিনি। জানা গেছে, ১৯৪৩ সালে নওগাঁ কেডি সরকারি উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি, ১৯৪৫ সালে কলকাতা থেকে ইন্টারমিডিয়েট এবং ১৯৫৯ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন। চিকিৎসাবিজ্ঞানে ডিগ্রি অর্জন করেও চাকরি না করে আজীবন সাধারণ মানুষের সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন। এমবিবিএস পাস করে নিজ জন্মস্থানে পেশাজীবন শুরু করেন। তাঁর চার ছেলে ও দুই মেয়ে। ডা. মঞ্জুর তখন ঢাকা মেডিকেলের শেষ বর্ষের ছাত্র। ১৯৪৯ সালে সরকারি স্বেচ্ছাচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ দিবসে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ১৯৫২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে গোলাম মাওলার কক্ষে ১৪৪ ধারা ভাঙার সিদ্ধান্ত হয়। এতে সংগ্রাম কমিটিতে মতবিরোধ দেখা দেয়। সেখানে তিনি বলেছিলেন, ৪৪ ধারা ভাঙবই ভাঙব। মেডিকেল ব্যারাকে এক স্বতঃস্ফূর্ত সমাবেশে প্রতিবাদী বক্তব্য দিয়েছিলেন ডা. মঞ্জুর হোসেন। রাতে ফজলুল হক হলের পুকুরপাড়ে ১১ জন ছাত্রনেতা ১৪৪ ধারা ভাঙার সিদ্ধান্ত নিতে গোপন বৈঠকে বসেন। সেখানে ঢাকা মেডিকেল কলেজের একমাত্র প্রতিনিধি ছিলেন তিনি। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে শিক্ষার্থীরা চারজন করে ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে সত্যাগ্রহে অংশ নেন।  স্লোগান দিয়ে বের হলে পুলিশ ছাত্রদের গ্রেফতার করে ট্রাকে তোলে। একপর্যায়ে প্রায় ১০ হাজারের বেশি ছাত্রছাত্রী গ্রেফতার, লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাসের মধ্য দিয়ে মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গণে আসেন। বেলা ৩টায় পরিষদের অধিবেশনের আগেই ছাত্র-পুলিশ সংঘর্ষ শুরু হয়। একপর্যায়ে পুলিশ বিকাল ৪টার দিকে গুলি চালায়। এতে অনেকেই শহীদ হন।

সর্বশেষ খবর