শনিবার, ৮ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

লাল মাটির পাহাড়ে সবুজ চা পাতার হাসি

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

লাল মাটির পাহাড়ে সবুজ চা পাতার হাসি

দুটি পাতা একটি কুঁড়ি। এটি বলতেই আমরা বুঝি সিলেটের কথা বলা হচ্ছে। এবার প্রথমবারের মতো কুমিল্লার লালমাই পাহাড় থেকে দুটি পাতা একটি কুঁড়ি সংগ্রহ করা হচ্ছে। কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার বড় ধর্মপুর এলাকার লালমাই পাহাড় থেকে এই চা পাতা সংগ্রহ করা হয়। ২০২১ সালে চাষ করা হলেও এবার প্রথম চা পাতা সংগ্রহ করা হচ্ছে। বাগানটি দেখতে প্রায়ই বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থীরা আসছেন। বড় ধর্মপুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, এখানে মাথা তুলে আছে ছোট বড় পাহাড়। পাহাড়ের ওপরে ও ঢালুতে চা গাছের চারা লাগানো হয়েছে। চৈত্রের গরমেও ¯িœগ্ধতা ছড়াচ্ছে সবুজ চা গাছ। কয়েকজন শ্রমিক চা পাতা তুলছেন। পাহাড়ের ওপরে বসানো হয়েছে পানির ট্যাংকি। সেখান থেকে পাইপ দিয়ে পানি বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়। চা বাগানে শেড ট্রি হিসেবে শজিনা ও কড়ই গাছ লাগানো হয়েছে। যা চা গাছকে ছায়া দিচ্ছে। কয়েকটি নাম না জানা পাখি বিভিন্ন শব্দ তুলে মনের আনন্দে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। চা শ্রমিক রাজু সিং বলেন, তার বাড়ি শ্রীমঙ্গলে। এখানে থেকে চা গাছের পরিচর্যা ও পাতা তোলেন। ইতোমধ্যে হাজার কেজি পাতা তুলেছেন। চা বাগানের উদ্যোক্তা তারিকুল ইসলাম মজুমদার জানান, তার এক বন্ধু আছেন মৌলভীবাজার কমলগঞ্জ উপজেলার খাসিয়া সম্প্রদায়ের একটি পুঞ্জীর মন্ত্রী জিডি সান। তিনি একদিন তার লালমাই পাহাড়ের ভূমি ঘুরে দেখেন। জিডি সান মতামত দেন এখানে চা চাষ সম্ভব। তার পরামর্শে তিনি ২০২১ সালের মার্চে ৩ হাজার চা গাছ লাগান। এখন বাগানে তার ১০ হাজার চারা রয়েছে। এখানে তার এক সঙ্গে সাড়ে ছয় একর ভূমি আছে। তিনি পুরো ভূমিতে চা বাগান করবেন বলেও পরিকল্পনা নিয়েছেন। তিনি কিছুদিনের মধ্যে আরও ২০ হাজার চারা লাগাবেন। শিগগিরই চা পাতা প্রস্তুতের মেশিনও স্থাপন করবেন। তিনি চান অন্যরা যেন তার মতো এগিয়ে আসে। স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি অফিসার এম এম শাহারিয়ার ভূঁইয়া বলেন, উদ্যোক্তা তারিকুল ইসলাম মজুমদার তিনি সৃজনশীল মানুষ। আমরা কৃষি বিভাগ থেকে তাকে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। সদর দক্ষিণ উপজেলার কৃষি অফিসার হাবিবুল বাশার চৌধুরী বলেন, পাহাড়ে বড় ধর্মপুরে প্রথমবারের মতো চা চাষ হয়েছে। এখানে চা উৎপাদনে মাটির যে ক্ষার থাকার কথা তা রয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর কুমিল্লার উপ-পরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, বৃষ্টির পরিমাণ বাড়লে এখানে চা চাষ আরও ভালো হবে।

সর্বশেষ খবর