শনিবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

প্রথম পরিবেশবান্ধব মসজিদ

আবু সিদ্দিক, চরফ্যাশন (ভোলা)

প্রথম পরিবেশবান্ধব মসজিদ

ঐতিহ্য আর আধুনিকতার মেলবন্ধনে বাংলাদেশে প্রথম পরিবেশবান্ধব খাসমহল জামে মসজিদ। অত্যন্ত সৌন্দর্যমন্ডিত স্থাপনার এই মসজিদ ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় জ্যাকব টাওয়ার সংলগ্নে অবস্থিত। দেয়ালে সিরামিক ইটের গাঁথুনির ফাঁকে ফাঁকে প্রকৃতির নির্মল বাতাস। ওপরে মাকড়সা আকৃতির কাচের গম্বুজ ভেদ করে সূর্যের আলোকরশ্মি ছড়াচ্ছে মসজিদজুড়ে। ভিতর বাহিরে নান্দনিক লাইটিং আর প্রকৃতিবান্ধব নির্মাণশৈলীর এই মসজিদটি ধর্মপ্রাণ মানুষকে আকৃষ্ট করছে। গ্রাউন্ড ফ্লোরসহ তিন তলায় ৪ হাজার ৫০০ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন। উপজেলা পর্যায়ে এই মসজিদে মহিলাদের নামাজের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আন্ডার গ্রাউন্ডে তাপমাত্রা সহনীয় রাখতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা রয়েছে। টানা প্রায় পাঁচ বছর চলছে মসজিদের নির্মাণকাজ। চরফ্যাশন পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসান বলেন, ১৭ হাজার বর্গফুট এই মসজিদের চার দিকের দেয়ালে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন স্টোন চিপসের সমন্বয়ে ফেয়ার ফেস সাদা সিমেন্টের প্লাস্টার দ্বারা পরিবেশবান্ধব এই মসজিদের প্রতিটি দেয়াল সিরামিক ইটের গাঁথুনি। ফেয়ার ফেস প্লাস্টার স্থায়িত্ব ১০০ বছর। যা সম্পূর্ণ প্রকৃতিবান্ধব। চরফ্যাশন পৌরসভা থেকে জ্যাকব টাওয়ার ও খাসমহল মসজিদের আশপাশে নান্দনিক সৌন্দর্য বর্ধনে মাঠ, রাস্তা ও ফুলের বাগানের বেষ্টনীর কাজ চলমান রয়েছে। চরফ্যাশন পৌরসভার মেয়র মো. মোরশেদ বলেন, ‘২০১৮ সালে ভোলা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবের উদ্যোগ ও পরিকল্পনায় দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদের নির্মাণকাজ শুরু হয়। পরিবেশবান্ধব এই মসজিদ বাংলাদেশে বিস্ময়। মাহে রমজান উপলক্ষে ১৭ মার্চ অনানুষ্ঠানিকভাবে এটি চালু করা হয়েছে। পরিবেশবান্ধব এই মসজিদে বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত মুসল্লিরা নামাজ আদায় করে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন। ইতোমধ্যে মসজিদের নির্মাণকাজ ৯০ ভাগ শেষ হয়েছে। দেশের বিশিষ্ট আলেম ওলামাদের নিয়ে এই মসজিদ চালু হবে ইনশা আল্লাহ।’ মসজিদ কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল নোমান বলেন, দিনের বেলায় মসজিদে কোনো বৈদ্যুতিক বাতি জ্বালানো লাগবে না। প্রতিটি ফ্লোরে সূর্যের আলো ছড়াবে এবং মসজিদে বসেই সরাসরি এ আলো থেকে ভিটামিন ‘ডি’ পাওয়া যাবে। একত্রে নামাজরত মুসল্লিদের শ্বাস-প্রশ্বাস বহির্গমনে ওপরে এবং নিচে সেন্ট্রাল অ্যাডজাস্ট ফ্যান ও পাইপ রয়েছে। তিনদিকে দেয়ালের সিরামিক ইটের গাঁথুনি নির্মাণশৈলীতে এমনভাবে ফাঁকা রাখা হয়েছে তাতে সার্বক্ষণিক তাপমাত্রা সহনীয় থাকবে এবং বৈদ্যুতিক পাখা ছাড়া কোনো শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন হবে না। এতে বিদ্যুতের ব্যবহার কম হবে।’

সর্বশেষ খবর