শনিবার, ১৩ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

সাগর পাড়ের রাঙ্গাবালীতে মুগ্ধ সবাই

কুয়াকাটার সঙ্গে রাঙ্গাবালীর নৌ-রুট তৈরি হলে রাঙ্গাবালী হবে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন কেন্দ্র। ইকো ট্যুরিজমের মাধ্যমে উন্নয়ন হলে এ অঞ্চলে ব্যাপক কর্মসংস্থান হবে...

সিকদার জোবায়ের, রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী)

সাগর পাড়ের রাঙ্গাবালীতে মুগ্ধ সবাই

বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে জেগে ওঠা রাঙ্গাবালীর সৌন্দর্য যেন পর্যটকদের মন কাড়ছে। সাগরের আছড়ে পড়া ঢেউ দেখে যেন মনে হবে কোনো চিত্রশিল্পীর রংতুলির পরশ। দুই চোখ যেদিকে চায় চারদিকে শুধু সাগর আর নদী। মাঝখানে কেবল প্রকৃতি। বাতাসের হিমেল আমেজ। পাখির কলকাকলিতে মুখরিত ভোর। নাম না জানা হাজার রকমের অতিথি পাখি মুখর করে তোলে রাঙ্গাবালীর রাঙ্গা সকালকে। জেগে ওঠা নতুন চারটি সি-বিচ, জোয়ার-ভাটার লুকোচুরি, জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য, লাল কাঁকড়ার খুনশুটি, সবুজ বনায়ন পর্যটকদের মন আকৃষ্ট করার পাশাপাশি এখানকার মানুষের বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরিতে ভূমিকা রাখছে। হোটেল মোটেল গড়ে উঠলে পুরো রাঙ্গাবালীই হবে একটি আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র। এখানে রয়েছে দৃশ্যমান চারটি দর্শনীয় স্থান। সোনারচর, হেয়ারদ্বীপ, জাহাজমারা, চর তুফানিয়া। এ চারটি দ্বীপের প্রতিটিতেই রয়েছে আকর্ষণীয় সি-বিচ। বিচের একই স্থানে দাঁড়িয়ে দেখা যায় সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত। উপভোগ করা যায় সাগরের আছড়েপড়া ঢেউ ও প্রাকৃতিক দৃশ্য; যা দেখে মনে হবে কোনো চিত্রশিল্পীর রংতুলির আঁচড়। হেয়ারদ্বীপে ঝাউবাগানের ভিতর দিয়ে বয়ে চলা বাতাসের শো শো আওয়াজ বিমোহিত করে প্রকৃতিপ্রেমীদের। নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের যাবতীয় আয়োজন সাজিয়ে বসেছে সাগরপাড়ের রাঙ্গাবালী।

যেভাবে আসা যাবে রাঙ্গাবালী : ঢাকার সদরঘাট থেকে প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টায় লঞ্চ ছেড়ে আসে। সে লঞ্চে চড়ে আসতে হবে রাঙ্গাবালীর গহীনখালী অথবা চরমোন্তাজ ঘাটে। সেখান থেকে জেলে নৌকা অথবা ট্রলার নিয়ে ঘুরে দেখা যাবে সোনারচর, হেয়ারদ্বীপ, জাহাজমারা, চর তুফানিয়া। আরও দেখা যাবে, চরমোন্তাজ জেলে পল্লীতে জেলেদের আনন্দ-উল্লাসে মেতে ওঠা রাতের দৃশ্য, মানতা পল্লীর মান্তাদের জল ও ডাঙ্গায় বসবাসের দৃশ্য। জানা যাবে, মান্তা পরিবারগুলোর বসবাস ও জীবন-মৃত্যু ছিল পানিতে। তারা কীভাবে পেল স্বাভাবিক জীবনযাপনের অধিকার। দেখা যাবে প্রাকৃতিক পরিবেশে শুঁটকি পরিশোধন। শোনা যাবে সাগরপাড়ের নারীদের মাছের মাথা কেটে সংসার পরিচালনার গল্প।

থাকার ব্যবস্থা : পর্যটকদের থাকার জন্য এখনো সেভাবে গড়ে ওঠেনি কোনো হোটেল মোটেল। তবে ভালো পরিবেশে থাকতে হলে উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সের বাউন্ডারির মধ্যেই রয়েছে জেলা পরিষদ ডাকবাংলো। এ ছাড়াও রাঙ্গাবালী উপজেলা সদর ও চরমোন্তাজে রয়েছে ছোটখাটো কয়েকটি হোটেল। এসব হোটেলে মোটামুটি দু-এক রাত থাকা যাবে। 

কুয়াকাটার সঙ্গে রাঙ্গাবালীর নৌ-রুট তৈরি হলে রাঙ্গাবালী হবে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন কেন্দ্র। পর্যটন স্পটকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠবে সরকারি-বেসরকারি নানান স্থাপনা।

এ অঞ্চলের মানুষের ব্যাপক কর্মসংস্থান হবে। সমুদ্র উপকূলবর্তী এ দ্বীপ ঘিরে সমুদ্র অর্থনীতি হাতছানি দিচ্ছে। ইকো ট্যুরিজম মেনে এখানে অবকাঠামোর উন্নয়ন করা গেলে পর্যটকরা ঘুরতে আসার ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে উঠবেন।

সর্বশেষ খবর