বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতরা নানা ক্ষেত্রে রাখছেন সফলতার স্বাক্ষর। তাদেরই একজন বাংলাদেশি-আমেরিকান কাইরান কাজী। সম্প্রতি ইলন মাস্কের মহাকাশবিষয়ক প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সের প্রকৌশলী হিসেবে যোগ দিয়েছেন তিনি। স্পেসএক্সের ‘প্রযুক্তিগতভাবে চ্যালেঞ্জিং কিন্তু মজার’ সাক্ষাৎকার পর্ব সফলভাবেই মোকাবিলা করেন কাইরান। সান্তা ক্লারা ইউনিভার্সিটি স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করার পরপরই তিনি ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠানটিতে কাজ শুরু করবেন বলে জানা যায়।

স্পেসএক্সের স্টারলিংক টিমে যোগদানের ব্যাপারে উচ্ছ্বসিত কাইরান বৃহস্পতিবার লিংকডইনে লিখেছেন, তিনি বিশ্বের সবচেয়ে সেরা কোম্পানির স্টারলিংক ইঞ্জিনিয়ারিং টিমে যোগ দিতে যাচ্ছেন। কাইরান আরও লিখেছেন, স্পেসএক্স সেই সব বিরল কোম্পানির মধ্যে একটি যারা কিনা তার বয়সের মতো পুরনো মানদণ্ড দিয়ে তার সক্ষমতা ও পরিপক্বতা বিবেচনা করেনি। জানা যায়, স্টারলিংক স্পেসএক্সের স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পরিষেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান।

কাইরানের আশা, মানুষের মঙ্গল অভিযানে নিজের বিদ্যা-বুদ্ধি খাটিয়ে বিশেষ ছাপ রাখতে পারবেন তিনি।

কাইরানের বাবা-মা জানিয়েছেন, ছোট থেকেই বিশ্বের নানা বিষয়ে কৌতূহল কাইরানের। দুই বছর বয়সের মধ্যেই পুরো বাক্যে কথা বলতে পারত সে। সে যখন থার্ড গ্রেডে পড়ে তখন সে বাড়িতে জানায় স্কুলের পাঠ্যক্রম তার খুব সহজ লাগছে। তারপরই তাকে কমিউনিটি কলেজে ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নেন তার বাবা-মা। অবসর সময়ে ঐতিহাসিক ঘটনার ছায়ায় তৈরি কম্পিউটার গেম খেলতে ভালোবাসেন কাইরান। বই পড়ার ক্ষেত্রে কল্পবিজ্ঞানের পোকা। তার প্রিয় লেখক ফিলিপ কে ডিক। সাংবাদিকদের মধ্যে তার প্রিয় অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ মাইকেল লুইস।

কাইরান ইন্টেন ল্যাবসাতে একজন এআই রিসার্চ কো-অপ ফেলো হিসেবে ইন্টার্নশিপ করেন এবং মাত্র ১১ বছর বয়সে কম্পিউটার সায়েন্স এবং ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ভর্তি হন।

কাইরান কাজীর লিংকডইন প্রোফাইল অনুসারে, গত বছর ব্ল্যাকবার্ড ডট এআই নামের এক সাইবার ইন্টেলিজেন্স ফার্মে চার মাস মেশিন লার্নিংয়ের ইন্টার্ন হিসেবে কাজ করেন। সেখানে তিনি সামাজিক মাধ্যমের আধেয় ভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে কি না, তা শনাক্তের পরিসংখ্যানগত পদ্ধতি তৈরি করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম এলএ টাইমসের তথ্যানুসারে, বাংলাদেশি পিতা-মাতা মুস্তাহিদ এবং জুলিয়া কাজীর ঘরে জন্ম কাইরান কাজীর। কাইরানের মা জুলিয়া চৌধুরী কাজী ওয়াল স্ট্রিটের একজন এক্সিকিউটিভ। তিনি তার ছেলে কাইরানের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোর বে এলাকায় থাকেন। কাইরানের বাবা মুস্তাহিদ কাজী মূলত মানিকগঞ্জের বাসিন্দা এবং বর্তমানে প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত।