শনিবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

পথশিশু নয় নগরফুল

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

পথশিশু নয় নগরফুল

পথশিশু, শিশুশ্রমিক, সুবিধাবঞ্চিত শিশু, অসহায়-গরিব মানেই সমাজে অবহেলিত। ঝরে পড়ছে শিক্ষা থেকে। বঞ্চিত মৌলিক অধিকার থেকে। যাদের জীবনে অনুপস্থিত নাগরিক চাহিদা। কিন্তু এমন সুবিধাবঞ্চিত শিশু-কিশোরদের আশার আলো হয়ে আছে নগরফুল। সুবিধাবঞ্চিত ও পথশিশুদের জীবনমান উন্নয়নের মাধ্যমে তাদের নগরের ফুল হিসেবে গড়তে কাজ করছে নগরফুল। নগরফুলের কাছে সুবিধাবঞ্চিতরা বোঝা নয়, নগরফুল। শিক্ষা-স্বাস্থ্যসহ নানা সুবিধা দিয়ে তাদের সমাজের মূলস্রোতধারায় ফিরিয়ে আনছে।

জানা যায়, ২০১৫ সালের ১৯ জুন দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপের তরুণ বায়েজিদ সুমন নগরফুল প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই নগরের ছিন্নমূল, অবহেলিত, সুবিধাবঞ্চিত, পথশিশু, গরিব ও অসহায়দের জীবনমান উন্নয়নে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বস্ত্র ও খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করছে। প্রতি শুক্রবার পরিচালিত হচ্ছে ‘নগরফুল হলিডে স্কুল’। আছে চরকুটুম পাঠশালা, স্বাবলম্বী প্রজেক্ট, ওয়ান চাইল্ড ওয়ান ডোনার প্রজেক্ট, হেলথ অ্যান্ড নিউট্রিশন টিম, সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রিসার্চ প্রজেক্ট ও নগরফুল কালচারাল টিম শীর্ষক কর্মসূচি।

নগরফুলের প্রতিষ্ঠাতা বায়েজিদ সুমন বলেন, নগরফুল হলিডে স্কুলে শিশুদের প্রাক প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতকরণ, স্কুলে ভর্তি উপযোগী করে গড়ে তোলা, ভর্তি করা, ঝরে পড়া শিশুদের পুনরায় স্কুলমুখী করা ও অবহেলিত শিশুদের নিয়মিত অনুপ্রেরণা দিয়ে যাওয়া। বর্তমানে চট্টগ্রাম নগরের সিআরবি শিরীষতলা, ডিসিহিল, ষোলশহর রেলস্টেশন, আগ্রাবাদ ও আমিন বাজার ক্যান্টনমেন্ট রেলস্টেশন প্ল্যাটফরমে হলিডে স্কুল পরিচালিত হচ্ছে। নগরের বাইরে পটিয়া রেলস্টেশন ও কুমিল্লা শাসনগাছা রেলস্টেশনে দুটি হলিডে স্কুল পরিচালিত হচ্ছে। সবখানে প্রায় ৮ শতাধিক শিশু পড়াশোনা করছে। তাদের পাঠদান করছেন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী। প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রাক প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করে ৫ শতাধিক শিশুকে স্কুলে ভর্তি ও ২ শতাধিক ঝরে পড়া শিশুকে পুনরায় স্কুলমুখী করা হয়েছে।

বর্তমানে শতাধিক শিশুকে স্কুলে যাওয়ার উপযোগীকরণের কার্যক্রম চলমান। তাছাড়া, গত এসএসসি পরীক্ষায় চারজন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে সফলতা পান। নগরফুলের স্বপ্ন সুবিধাবঞ্চিত ও পথশিশু শব্দটি মুছে দিয়ে তাদের একটি সুন্দর-স্বাভাবিক জীবন উপহার দিয়ে দেশের সম্পদ হিসেবে তৈরি করা। জানা যায়, শিশুশ্রম বন্ধ ও পড়াশোনা নিশ্চিতে পরিচালিত হচ্ছে প্রজেক্ট স্বাবলম্বী। এখানে বাচ্চাদের পড়াশোনার নিশ্চয়তা প্রদানের মাধ্যমে পরিবারের বাবা কিংবা মাকে আয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ১২ শিশু এই প্রকল্পের আওতায় এসেছে। প্রতিটি পরিবারে আয়ের উৎস হিসেবে ভ্যান, রিকশা কিংবা সেলাই মেশিন দেওয়া হয়েছে। ২০ জন শিশু এ প্রকল্পের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে। আছে শিশুদের দীর্ঘমেয়াদি শিক্ষা নিশ্চিতে ‘ওয়ান চাইল্ড ওয়ান ডোনার প্রজেক্ট’। আছে স্বাস্থ্য-সুরক্ষা, খাদ্য-পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতে হেলথ অ্যান্ড নিউট্রিশন টিম ও ‘সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রিসার্চ’ শীর্ষক প্রকল্প।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর