শনিবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

দীঘিনালা থেকে সুইজারল্যান্ডে তুফান চাকমা

শনিবারের সকাল ডেস্ক

দীঘিনালা থেকে সুইজারল্যান্ডে তুফান চাকমা

শৈশব থেকেই ছবি আঁকার প্রতি বেশি ঝোঁক তুফান চাকমার। টুকরা কাগজ কিংবা বইয়ের সাদা পাতা পেলেই পাহাড়ের কোলে, গাছের ছায়ায় বসে ছবি আঁকতেন। পাহাড়ের প্রকৃতি তাকে রসদ জুগিয়েছে, শিল্পী হিসেবে গড়ে উঠতে প্রেরণা দিয়েছে। তুফান চাকমার বেড়ে ওঠা খাগড়াছড়ির দীঘিনালার উদালবাগান গ্রামে। এখন পড়ছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগে। মা, বাবা ও দুই ভাইকে নিয়ে তাদের ছোট্ট সংসার। বাবা অশ্বত্থামা চাকমা একজন কৃষক, নিজেদের প্রয়োজনীয় ফসল নিজেরাই উৎপাদন করেন।

ছেলের পড়াশোনার খরচ জোগানোর সামর্থ্য বাবার ছিল না। তবে তুফান থেমে থাকেননি। তাদের বংশে তিনিই প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন। নিজের আঁকা ছবি তুফানকে দিয়েছে নিজস্ব পরিচয়। ছবির মাধ্যমে তিনি তুলে ধরেছেন পাহাড়ি জীবন। আঁকাআঁকিই তার প্রতিবাদের ভাষা। ছবি এঁকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দেন নিয়মিত। নিজের ফেসবুক পেজ ‘তুফানস আর্টবিন’-এ ছবি পোস্ট করেন তিনি। এবার তার ছবি এনেছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। জাতিসংঘের ‘ইন্টারন্যাশনাল আর্ট কনটেস্ট ফর মাইনরিটি আর্টিস্ট ওয়ার্কিং অন ইন্টারসেকশনালিটি থিমস’ প্রতিযোগিতায় তরুণ আর্টিস্ট হিসেবে ইন্টারন্যাশনাল রিকগনিশন অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এই শিক্ষার্থী। প্রতিযোগিতায় ৩৫টি দেশের ৮০ জন আর্টিস্ট অংশগ্রহণ করেন। তাদের মধ্যে চূড়ান্তভাবে চারজনকে পুরস্কৃত করা হয়। তুফান চাকমা তাদেরই একজন। এই প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশে বসবাসরত আদিবাসীদের সংস্কৃতি ও জীবনযাত্রার বাস্তবতা নিয়ে আঁকা কয়েকটি ছবি তুলে ধরেন তুফান। তুফান বলেন, ২০১৪ সালে ঢাকায় প্রথমবারের মতো পা রেখে এ পর্যন্ত আসা মোটেও মসৃণ ছিল না। মা-বাবার অপ্রতিরোধ্য স্বপ্ন এবং নিজের ইচ্ছাশক্তি আমাকে মানুষের ভালোবাসা পেতে সাহায্য করেছে। নানা অর্জন আমাকে কাজের প্রতি নিবেদিতপ্রাণ হতে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। তিনি বলেন, বিশ্বমঞ্চে নিজের জাতি এবং দেশকে উপস্থাপন করা আমার জীবনের এক আকাক্সিক্ষত স্বপ্নপূরণ। এ অর্জন আমার কাজের প্রতি নিষ্ঠা আরও শতগুণ বাড়াবে।

 

 

সর্বশেষ খবর