শনিবার, ১৩ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

ভেনিসের আদলে নৌকা চলবে তিন খালে

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

ভেনিসের আদলে নৌকা চলবে তিন খালে

চট্টগ্রাম নগরীতে আছে ছোট-বড় ৫৭টি খাল। এর মধ্যে ৩৬টি খাল সংস্কার-উন্নয়ন করা হচ্ছে। বাকি ২১ খালও সংস্কারের উদ্যোগ নিচ্ছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। কিন্তু সংস্কারের পর কী হবে খালগুলোর। আবারও কি বেদখল-দূষণের কবলে পড়বে? এ প্রশ্নই সামনে আসছে। তবে সংস্কারকৃত খালগুলো পরিচ্ছন্ন ও দখলমুক্ত রাখতে চসিক প্রাথমিকভাবে তিনটি খালে পর্যটন নৌকা ও স্পিড বোট চালানোর উদ্যোগ নিয়েছে। খাল তিনটি হলো- বাকলিয়া এলাকার রাজাখালী-১, রাজাখালী-২ এবং রাজাখালী-৩। খাল তিনটি ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) মেগা প্রকল্পের অধীন সংস্কার করা হয়। গত ৫ ডিসেম্বর চসিক মেয়র খালগুলো সরেজমিনে পরিদর্শন করেন।

জানা যায়, সিডিএর জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় খনন করা নগরীর বাকলিয়া এলাকার রাজাখালী-১, রাজাখালী-২ এবং রাজাখালী-৩, এই তিনটি খাল একটি অন্যটির সঙ্গে যুক্ত। ৩০-৩২ ফুট প্রস্থের এ তিন খালের দৈর্ঘ্য প্রায় ৪ কিলোমিটার। ইতোমধ্যে খাল তিনটির খনন কাজের পাশাপাশি দুই পাড়ে রিটেইনিং ওয়াল, রেলিং নির্মাণ করা হয়েছে। এ ছাড়া খাল দখল ঠেকাতে দুই পাশে নির্মাণ করা হয়েছে সড়ক। উন্নয়ন কাজ শেষ হওয়ায় প্রতিদিন বিকালে রাজাখালীর খালগুলোতে প্রচুর লোকজনের সমাগম হচ্ছে। তৈরি হয়েছে  ঘোরাঘুরির সুন্দর একটি পরিবেশ।

চসিকের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের অধীনে ৩৬টি খাল পরিষ্কার করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে তিনটি খালের কাজ প্রায় শেষ। পূর্ণাঙ্গ কাজ শেষ হলে প্রাথমিক পর্যায়ে তিনটি খালে নৌকা ও স্পিড বোট চালানো হবে। এর মাধ্যমে খালগুলো পরিষ্কার ও দখল-দূষণমুক্ত থাকবে, সঙ্গে মানুষও বিনোদনের একটা জায়গা খুঁজে পাবে। তিনি বলেন, এখন খালের আশপাশের মানুষের অভ্যাস হলো খালেই ময়লা ফেলা। কিন্তু খালের পানি যখন স্বচ্ছ ও জলপ্রবাহে বিনোদনের উৎস খুঁজে পাবে, তখন মানুষ আর খালে ময়লা ফেলবেন না।

এর মাধ্যমে খালটি যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিষ্কারে রুটিন ওয়ার্ক পরিচালনা করা হবে, চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতাও কমবে। তাছাড়া প্রকল্পগুলোর আওতায় খালপাড়ে নির্মিত সড়ক ও কালভার্টের কারণে নগরীর যোগাযোগ সক্ষমতা আরও বাড়বে। মেয়র বলেন, এ তিনটি খালে এখনই প্রতিদিন বিকালে অনেক মানুষ ঘুরতে আসেন। নৌকা, স্পিড বোট চালু হলে মানুষ আরও বাড়বে। এর মাধ্যমে খালগুলোতে ময়লা-আবর্জনা ফেলার পরিমাণ শূন্যে নেমে আসবে। পর্যায়ক্রমে অন্য খালগুলোতেও নৌকা চালানোর মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পরিবেশবাদী সংগঠন পিপলস ভয়েসের সাধারণ সম্পাদক এস এম আতিকুর রহমান বলেন, খাল সংস্কার করা হয়েছে। এরপর সংস্কারকৃত খালগুলোকে পরিষ্কার ও দখলমুক্ত রাখতে নৌকা চলাচলের সিদ্ধান্তটি ইতিবাচক ও প্রশংসনীয়। তবে এ ব্যাপারে চসিকসহ সবাইকে সচেতন থাকতে হবে যেন খালগুলো ফের দখল না হয়, খাল দখল করে স্থাপনা নির্মাণ না করা হয় এবং দূষণমুক্ত রাখতে প্রয়োজনীয় কার্যকর উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে।

সর্বশেষ খবর