শনিবার, ২০ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

রেডিওথেরাপিতে আশার আলো

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

রেডিওথেরাপিতে আশার আলো

চট্টগ্রামে প্রতিনিয়তই বাড়ছে ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী। ক্যান্সার রোগের অন্যতম চিকিৎসা রেডিওথেরাপি। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে একটি মেশিন থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। কিন্তু বেসরকারি একটি হাসপাতালে থাকলেও তা বেশ ব্যয়বহুল। ফলে ক্যান্সার চিকিৎসায় রেডিওথেরাপির প্রয়োজন হওয়া রোগীদের নানাভাবে সমস্যায় পড়তে হয়। 

তবে মানুষের সহযোগিতায় পরিচালিত চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের ক্যান্সার ইনস্টিটিউট অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার নতুন করে বসানো হয়েছে আমেরিকার তৈরি ৩০ কোটি টাকার  অত্যাধুনিক প্রযুক্তির রেডিওথেরাপি মেশিন। গত ১৪ জানুয়ারি এটি আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করা হয়। এর মাধ্যমে তুলনামূলক কমমূল্যে ক্যান্সার রোগীরা এখানে রেডিওথেরাপি সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। এখানে দৈনিক ৫০ জন রোগী রেডিওথেরাপি গ্রহণ করতে পারছেন। ফলে ক্যান্সার রোগীরা এই রেডিওথেরাপিতে আশার আলো দেখছেন। ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে রেডিওথেরাপি প্রদান শুরু হয়। তুলনামূলক ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কমমূল্যে এখানে থেরাপি গ্রহণ করা যায়।

চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম আজাদ বলেন, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের ক্যান্সার ইনস্টিটিউট অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারটি আমাদের অনেক স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘদিনের শ্রম এবং মানুষের সহযোগিতায় এটি চালু করা সম্ভব হয়েছে। ক্যান্সার ব্যয়বহুল চিকিৎসা। সব মানুষের পক্ষে এর চিকিৎসা করা সম্ভব হয় না। আমরা চাই, সব শ্রেণির মানুষ হাসপাতালের রেডিওথেরাপি মেশিন থেকে সেবা গ্রহণ করুক।

চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের রেডিওথেরাপি বিভাগের চিফ মেডিকেল পিজিসিস্ট নজরুল ইসলাম বলেন, মেশিনটি সর্বাধুনিক প্রযুক্তির। এখন পর্যন্ত ১৫ জন রোগী থেরাপি গ্রহণ করছেন। তবে এ মেশিনে যথাযথ মান রক্ষা করে দৈনিক ৫০ জন রোগীকে থেরাপি প্রদান করা যাবে। তিনি বলেন, তুলনামূলক কমমূল্যে এখানে রেডিওথেরাপি প্রদান করা যাচ্ছে। দৈনিক একজন রোগীর ৩-ডিসিআরটি থেরাপির মূল্য ৩ হাজার টাকা, আইএমআরটি থেরাপির মূল্য ৪ হাজার টাকা ও ভিএমএটি থেরাপির মূল্য প্রায় ৫ হাজার টাকা।

জানা যায়, দক্ষিণ চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার অঞ্চলের মানুষের খাদ্যাভ্যাসের কারণে এখানকার মানুষ ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ২০২২-২৩ সালে এক বছরে ৬ হাজার ৫১০ জন রোগী নতুন করে ক্যান্সার আক্রান্ত হয়। ওই বছর চমেক হাসপাতালে প্রায় ২০ হাজার রোগী রেডিওথেরাপি নিয়েছেন। নতুন আক্রান্ত হওয়াদের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৭ শতাংশই খাদ্যনালির ক্যান্সার।

এরপর আছে মুখগহ্বর ও গলার ক্যান্সার, প্রায় ১৫ শতাংশ। এরপর আছে স্তন, ফুসফুস ও জরায়ু ক্যান্সার। তবে চট্টগ্রামে ক্যান্সার চিকিৎসায় বিশেষায়িত সেবা না থাকায় প্রতিনিয়তই বাড়ছে এ রোগী। অন্যদিকে ক্যান্সার রোগীদের জন্য রেডিওথেরাপি প্রয়োজনীয় একটি চিকিৎসা। চমেক হাসপাতালে এজন্য খরচ পড়ে প্রায় ৮ হাজার টাকা। চট্টগ্রামে বেসরকারি পর্যায়ে একটি হাসপাতালে এ সুবিধা থাকলেও তা ব্যয়বহুল। ক্যান্সার রোগ শনাক্তে অতি জরুরি পরীক্ষা প্যাট সিটিস্ক্যানের ব্যবস্থাও নেই চট্টগ্রামে।

সর্বশেষ খবর