শনিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

২৫ টাকায় ফিজিওথেরাপি

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

২৫ টাকায় ফিজিওথেরাপি

খেটে খাওয়া অসহায় মরিয়ম বিবি। হাঁটুর ব্যথায় কাতর হয়ে চিকিৎসা নেন জেনারেল হাসপাতালের ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগে। চিকিৎসক তাকে থেরাপি দেওয়ার পরামর্শ দেন। পরে তিনি হাসপাতালের ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের ফিজিওথেরাপি সেন্টারে মাত্র ২৫ টাকা দিয়ে থেরাপি সেবা গ্রহণ করেন। মরিয়ম বলেন, আমার বয়স ৪৫ বছর। এখনো কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করি। হাঁটুর ব্যথার জন্য হাসপাতালে এলে থেরাপির পরামর্শ দেন। এখানে মাত্র ২৫ টাকা দিয়ে থেরাপি সেবা গ্রহণ করেছি। এখানে না থাকলে অত টাকা দিয়ে বাইরে দেওয়ার মতো সামর্থ্য ছিল না আমার।

জানা যায়, জেনারেল হাসপাতালের বর্তমান তত্ত্বাবধায়কের উদ্যোগে গত ১৫ নভেম্বর সীমিত আকারে চালু করা হয় বিভাগটি। এরপর বিভাগের অধীন স্থানীয় উদ্যোগে চালু করা হয় ফিজিওথেরাপি সেন্টার। এখানে দৈনিক ২৫ থেকে ৩০ জন রোগী থেরাপি সেবা গ্রহণ করেন। মাসিক রাজস্ব আদায় হয় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। তাছাড়া, ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগে প্রতিদিন বহির্বিভাগে চিকিৎসা গ্রহণ করেন ৩০ থেকে ৩৫ জন। তবে এখানে নেই পর্যাপ্ত জনবল, অবকাঠামো এবং থেরাপি উপকরণ। ফলে অনেক সময় রোগীদের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়ে ফিরে যেতে হয়। বর্তমানে হাসপাতালের ফিজিওথেরাপি সেন্টারে ২৫ টাকায় দেওয়া হয় এনডব্লিউডি থেরাপি, এসডব্লিউডি থেরাপি, টেনস, কার্ভিক্যাল ট্র্যাকশন, ইএসটি ও আইআরআর থেরাপি। ৩৫ টাকায় দেওয়া যায় ওয়াক্স বাথ ও ইউএসটি থেরাপি এবং ৫০ টাকায় দেওয়া যায় পেলভিক ট্রাকশন থেরাপি।

হাসপাতালের ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের কনসালট্যান্ট ডা. পলাশ নাগ বলেন, করোনার পর নানা কারণে এখন ফিজিক্যাল মেডিসিনের রোগী বেশি। এটি নতুন হলেও অনেক রোগী। কিন্তু এখানে জনবল, স্থান ও চিকিৎসা উপকরণের সংকট আছে। বর্তমানে একজন কনসালট্যান্ট (ফিজিক্যাল মেডিসিন), একজন ফিজিওথেরাপিস্ট ও একজন সিনিয়র স্টাফ নার্স দিয়ে চলছে বিভাগটি। এখানে প্রয়োজন আরও তিনজন মেডিকেল অফিসার, চারজন ফিজিওথেরাপিস্ট ও চারজন এমএলএসএস।

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, রোগী কল্যাণ সমিতি ও স্থানীয় উদ্যোগে ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগটি চালু করা হয়েছে। এখানে জনবল ও স্থান সংকট আছে। তবে এখন প্রেষণে জনবল নিয়োগ দিতে না পারায় এ সমস্যা দেখা দিয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি পর্যায়ক্রমে প্রয়োজনীয় সংকট নিরসনের। জানা যায়, জেনারেল হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা হয় ১৯০১ সালে। ১৯৮৭ সালে হাসপাতালটিকে ৮০ শয্যায়, পরে ১৫০ শয্যায় এবং ২০১২ সালে ২৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। ২৫০ শয্যার হাসপাতাল হলেও বর্তমানে চলছে ১৫০ শয্যার জনবল দিয়ে। তবে বৈশি^ক মহামারি করোনার সময় এটি চট্টগ্রামবাসীর জন্য আশীর্বাদ হয়। ২০২০ সালের মার্চে এটিকে চট্টগ্রামের করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

সর্বশেষ খবর