শনিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

ব্যতিক্রমী এক অলিম্পিয়াড

দেশে প্রথম এই আয়োজনে অংশ নেয় ৬০০ মেডিকেল শিক্ষার্থী

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

ব্যতিক্রমী এক অলিম্পিয়াড

মেডিকেল শিক্ষার্থীদের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এনাটমি। গুরুত্বপূর্ণ হলেও একাডেমিক শিক্ষার বাইরে এ নিয়ে কোনো আয়োজন ছিল বিরল। তদুপরি, ফিজিক্স, ম্যাথ, বায়োলজি কিংবা ইংরেজি নিয়ে নানা আয়োজন-অলিম্পিয়াড হয়। কিন্তু এনাটমি অলিম্পিয়াড দেখা যায় না। এমনকি দেশের  বাইরেও এমন মেডিকেল অলিম্পিয়াডের আয়োজনের কথা কমই শোনা যায়। 

তবে দেশে এবার প্রথমবারের মতো আয়োজন করা হলো এনাটমি অলিম্পিয়াডের। চট্টগ্রামের সরকারি বেসরকারি ১৪টি মেডিকেল কলেজের ৬ শতাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় এনাটমি অলিম্পিয়াডের। মেডিকেলভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ওয়াই স্যাবের একাডেমিক প্ল্যাটফরম হেলথ স্কুল এবং  চট্টগ্রামের একমাত্র আইএসও এক্রিডিটেশন প্রাপ্ত ল্যাব এপিক হেলথ কেয়ারের যৌথ উদ্যোগে এ অলিম্পিয়াডের আয়োজন করা হয়।

জানা যায়, চট্টগ্রাম বিভাগের ১৪টি মেডিকেল কলেজের ৬ শতাধিক মেডিকেল  শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম রিজিওনাল এনাটমি অলিম্পিয়াড। গত ১৬ জানুয়ারি হতে ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রথম পর্যায়ে অংশগ্রহণকারী মেডিকেল কলেজগুলোতে অনুষ্ঠিত হয় বাছাই পর্ব। পরে প্রতি মেডিকেল কলেজ থেকে নির্বাচিত সেরা পাঁচজন করে মোট ৫৫ জনকে নিয়ে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় চূড়ান্ত পর্ব। চূড়ান্ত পর্বের প্রথম রাউন্ডে ১৪ মেডিকেল কলেজ থেকে নির্বাচিত মোট ৫৫ জনের মধ্যে থেকে সেরা দশজন এবং সেরা দশজনের মধ্য থেকে একজন চ্যাম্পিয়ন ও একজন রানারআপকে পুরস্কৃত ও সম্মাননা ক্রেস্ট দেওয়া হয়। প্রথমবারের মতো অলিম্পিয়াড আয়োজিত হওয়ায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে আনন্দ-উৎসব ও উদ্দীপনার অন্ত ছিল না।   

এনাটমি অলিম্পিয়াডের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. সুলতানা রুমা আলম বলেন, আমরা মনে করি এনাটমি অলিম্পিয়াড মেডিকেল শিক্ষায় ব্যতিক্রমী একটি আয়োজন। এই অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করে শিক্ষার্থীরা একাডেমিক পাঠের বাইরেও অনেক কিছু শিখতে পেরেছে। তাই বলব, এনাটমি অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণকারীদের জন্য আয়োজনটি ব্যতিক্রম ও কার্যকর প্রতিযোগিতা। আশা করি, এমন আয়োজনের ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে। 

চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মুসলিম উদ্দিন সবুজ বলেন, এত বছরের মেডিকেল জীবনে আমার দেখা এটি প্রথম কোনো মেডিকেল অলিম্পিয়াড। তাও আবার মেডিকেল সায়েন্সের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি সাবজেক্ট এনাটমিকে নিয়ে। নিশ্চয়ই এটি অন্যরকম এক আয়োজন।

এপিক হেলথ কেয়ারের ডিরেক্টর অপারেশন্স ডা. সাইফুদ্দীন মো. খালেদ বলেন, মেডিকেল শিক্ষা জীবনের শুরু থেকেই পেশাদার মনোভাব তৈরি করা এবং মেডিকেল শিক্ষাকে আরও আনন্দময় করে তুলতে এনাটমি অলিম্পিয়াডের মতো আয়োজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এই অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সহশিক্ষাক্রম কার্যাবলিতে দক্ষতা বাড়বে। সঙ্গে অসুস্থ প্রতিযোগিতা কমবে। 

হেলথ স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ডা. হামিদ হোছাইন আজাদ বলেন, মেডিকেল শিক্ষার্থীদের মেধা-মনন, সহনশীলতা, সৃৃজনশীলতা, যোগাযোগ দক্ষতা, সমস্যা সমাধান করার ক্ষমতা ও নেতৃত্ব চর্চার গুণাবলি বাড়াতে নিয়মিত প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি পারিপার্শ্বিক জ্ঞান অর্জনও গুরুত্বপূর্ণ। একাডেমিক শিক্ষার বাইরের জগৎ নিয়েও শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধি এখন সময়ের দাবি। তাই আমরা মেডিকেল শিক্ষার্থীদের জন্য এনাটমি অলিম্পিয়াড আয়োজনের মাধ্যমে ভবিষ্যতে দক্ষ পেশাজীবন গড়ে তোলার একটা পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছি।

সর্বশেষ খবর