শিরোনাম
শনিবার, ২৯ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

বিনা চিনাবাদাম-৬ এর রেকর্ড ফলন

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

বিনা চিনাবাদাম-৬ এর রেকর্ড ফলন

বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) উদ্ভাবিত ‘বিনা চিনাবাদাম-৬’ একটি উচ্চ ফলনশীল চিনাবাদামের জাত।

এ জাতের চিনাবাদাম হেক্টরে সর্বোচ্চ দুই টন ৯০০ কেজি ফলন দিতে সক্ষম। কিন্তু গোপালগঞ্জে এ বিনা চিনাবাদাম দুই টন ৯৫৮ কেজি ফলন দিয়েছে। এটি বিনা চিনাবাদাম-৬ জাতের রেকর্ড পরিমাণ ফলন। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মানিকহার গ্রামের কৃষক সাইফুল আলম খান বিনা চিনাবাদাম চাষ করে দুই টন ৯৫৮ কেজি ফলন পেয়েছেন।

কৃষক সাইফুল আলম খান বলেন, আমি গোপালগঞ্জ বিনা উপকেন্দ্র থেকে বিনামূল্যে বীজ ও সার পেয়ে আমার ১৫০ শতাংশ জমিতে বাদামের আবাদ করি। প্রতি শতাংশে এ জাতের বাদাম ১২ কেজি ফলন পেয়েছি। সে হিসাবে ২৪৬.৫১ শতাংশের ১ হেক্টরে এ বাদাম ফলন দিয়েছে দুই টন ৯৫৮.১২ কেজি। এটি রেকর্ড ফলন বলে মন্তব্য করেন ওই কৃষক।

এ জাতের চিনাবাদাম হেক্টরে সর্বোচ্চ দুই টন ৯০০ কেজি ফলন দিতে সক্ষম। কিন্তু গোপালগঞ্জে এ বিনা চিনাবাদাম দুই টন ৯৫৮ কেজি ফলন দিয়েছে। এটি বিনা চিনাবাদাম-৬ জাতের রেকর্ড পরিমাণ ফলন।

সাইফুল আলম খান আরও বলেন, আমার দেড় একর জমিতে বাদাম আবাদে খরচ হয়েছে ৬০ হাজার টাকা। এখান থেকে আমি ১ হাজার ৮০০ কেজি বাদাম পেয়েছি। প্রতি কেজি বাদাম ১০০ টাকা দরে বিক্রি করতে পারব। উৎপাদিত বাদাম ১ লাখ ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি হবে। খরচ বাদে লাভ হবে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। ধান ও পাটের তুলনায় বাদামে লাভ অনেক বেশি। বাদামের পর আমি বিনা আমন ধান করব। আমন কেটে স্বল্পজীবনকাল সম্পন্ন বিনা সরিষা চাষ করে আসছি। বিনার শস্যবিন্যাস অনুসরণ করে আমি প্রতি বছর একই জমিতে তিনটি ফসল করতে পারছি। এতে আমার আয় বেড়েছে। আর্থসামাজিক অবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন ঘটাতে পেরেছি। একই গ্রামের বাদাম চাষি প্রহল্লাদ বিশ্বাস বলেন, আমাদের গ্রামে অধিকাংশ কৃষক বাদাম চাষ করেন। আমরা লাভজনক বিনা চিনাবাদাম-৬ আবাদ করতে চাই। কিন্তু বিনা আমাদের বীজ দিতে পারে না। তাই এ জাতের বাদামের আবাদ আমরা সম্প্রসারণ করতে পারছি না। তিনি বীজ প্রাপ্তি নিশ্চিতের দাবি জানান।

গোপালগঞ্জ বিএডিসির উপপরিচালক সঞ্জয় কুমার দেবনাথ বলেন, বিনা চিনাবাদাম-৬ এর বীজ বিএডিসি উৎপাদন করে। বাদাম আবাদের আগে কৃষক আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমরা সরকার নির্ধারিত মূল্যে মানসম্পন্ন বিনা চিনাবাদাম-৬ এর বীজ সরবরাহ করতে পারব। এতে এ জাতের বাদামের চাষাবাদ সম্প্রসারিত হবে। ভালো ফলন পেয়ে কৃষক লাভবান হবেন। দেশে ভোজ্য তেলের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। বিনা গোপালগঞ্জ উপকেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ইনচার্জ ড. মো. কামরুজ্জামান বলেন, বিনা চিনাবাদাম-৬ হেক্টরে দুই টন ৯০০ কেজি পর্যন্ত ফলন দিতে পারে। কিন্তু কৃষক সাইফুল এ বাদাম চাষ করে বাড়তি পরিচর্যা করেছেন। তাই তিনি রেকর্ড পরিমাণ দুই টন ৯৫৮ কেজি ফলন পেয়েছেন। এ চিনাবাদামের জীবনকাল ১৪০ থেকে ১৫০ দিন। বাদামের ভিতরের দানা পুষ্ট। তাই তেলের পরিমাণ ৪৮ শতাংশ। এ বাদাম আবাদ করে কৃষক লাভবান হচ্ছেন।

সর্বশেষ খবর