শনিবার, ৬ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

চুয়াডাঙ্গার ব্র্যান্ডিং ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল

জামান আখতার, চুয়াডাঙ্গা

চুয়াডাঙ্গার ব্র্যান্ডিং ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল

বিশ্ববিখ্যাত ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের ছাগল সম্প্রসারণ ও সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি উন্নয়ন সংস্থা ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নিজস্ব প্রজনন খামারের মাধ্যমে দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে এ জাতের ছাগল। এর ফলে গ্রামীণ পর্যায়ে তৃণমূল নারীদের অর্থনৈতিক সক্ষমতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারিভাবে এ উদ্যোগ ঐতিহ্যবাহী এ জাতের ছাগল টিকিয়ে রাখতে সহায়তা করবে।

ওয়েভ সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কোষাঘাটায় গড়ে তোলা হয়েছে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল প্রজনন খামার। এখানে বর্তমানে ২৫০টি ছোট-বড় ছাগি ও পাঁঠা রয়েছে। যার সবই ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের। এ ছাড়াও জেলাজুড়ে গ্রামীণ পর্যায়ে রয়েছে ৩৫০টি ক্ষুদ্র খামার। এসব খামারেও রয়েছে ৫ হাজারের বেশি ছাগল। এসব ছাগল থেকে উৎপাদিত বাচ্চা, ছাগি ও পাঁঠা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে দেশব্যাপী।

খামারিরা মনে করেন, ব্যক্তিপর্যায়ে ছাগল পালনের জন্য সরকারি খামার থেকে ছাগল পেতে মানতে হয় বেশ কিছু নিয়ম। এ অবস্থায় আগ্রহী খামারিদের সহজে ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের ছাগল সরবরাহ করে থাকে ওয়েভ ফাউন্ডেশন। পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় এ কাজ করছে তারা। এতে গ্রামীণ পর্যায়ে নারীরা অর্থনৈতিকভাবেও স্বাবলম্বী হচ্ছে। ওয়েভ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ছাগল খামার করলে বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা করে সংস্থাটি।

ওয়েভ ফাউন্ডেশনের সিনিয়র সমন্বয়কারী কামরুজ্জামান বলেন, বর্তমানে দেশের অনেক জেলার ছোট-বড় খামারিরা তাদের কাছ থেকে ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের ছাগল সংগ্রহ করছেন। কোষাঘাটা গ্রামে অবস্থিত গো-গ্রিন সেন্টারের অভ্যন্তরে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল প্রজনন খামারের পাশাপাশি গ্রামীণ পর্যায়ের ক্ষুদ্র খামার থেকে এসব ছাগলের জোগান দেওয়া হচ্ছে।

বেসরকারি এ প্রজনন খামারটি বৈজ্ঞানিক পন্থায় মাচা পদ্ধতিতে ছাগল পালন করে। ক্ষুদ্র খামারিদেরও এ পদ্ধতি অনুসরণে উদ্বুদ্ধ করা হয়। এতে ছাগলের মৃত্যুহার কমে আসে, লাভবান হয় খামারিরা। ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের ছাগলের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বেশি। ওয়েভ ফাউন্ডেশনের উপনির্বাহী পরিচালক নাসিফা আলী বলেন, বিশ্ববিখ্যাত ছাগলের জাতটি হারিয়ে যেতে বসেছিল। এ অবস্থায় ২০০৮ সালে পিকেএসএফের সহায়তায় ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের ছাগল সম্প্রসারণ ও সংরক্ষণে কাজ শুরু করে ওয়েভ ফাউন্ডেশন। এখন পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা জেলায় ১৮ হাজারের বেশি ব্যক্তিকে ছাগল খামার করতে সহযোগিতা করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের উপপরিচালক ডা. এ এইচ এম শামিমুজ্জামান বলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলায় সাত লাখের বেশি ছাগল রয়েছে। যার বেশির ভাগই ব্ল্যাক বেঙ্গল। ‘জেলা ব্র্যান্ডিং’ এ জাতের ছাগল নিয়ে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে কাজ হচ্ছে। ওয়েভ ফাউন্ডেশন এ জাত সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করছে। তিনি বলেন, চুয়াডাঙ্গাসহ পাশের জেলাগুলো ব্ল্যাক বেঙ্গলের উৎকৃষ্ট অঞ্চল হওয়ার এখান থেকে এ জাতের ছাগল সম্প্রসারণ সহজ হবে। এ জাতের ছাগল সংরক্ষণে সরকারিভাবেও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর