শনিবার, ২০ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

কোরাল মাছ চাষে ভাগ্য বদল

আবু সিদ্দিক, চরফ্যাশন (ভোলা)

কোরাল মাছ চাষে ভাগ্য বদল

পুকুরে বাণিজ্যিকভাবে কোরাল মাছ চাষ করে স্বাবলম্বী মৎস্য চাষিরা! ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় কোরাল বা ভেটকি মাছ চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার ঘটনা এখন গল্প নয় সত্যি। কোরাল মাছের অভূতপূর্ব চাষ পদ্ধতি দেখতে মৎস্যজীবীরা চরফ্যাশন আসছেন। উপজেলার কুকরিমুকরি, চর মানিকা, জাহানপুর, শশীভূষণ, নজরুল নগর, জিন্নাগড় ও হাজারিগঞ্জ ইউনিয়নে প্রায় ১২০ একর পুকুরে কোরাল মাছ চাষ করে ভাগ্য বদল হয়েছে এখানকার মৎস্য চাষিদের। বাণিজ্যিকভাবে কোরাল চাষ করে একদিকে যেমন স্বাবলম্বী হচ্ছেন চাষিরা অন্যদিকে মাছ উৎপাদন, আহরণ পরিবহনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে অসংখ্য বেকার যুবকের কর্মসংস্থান হয়েছে। জানা যায়, পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)-এর সমন্বিত কৃষি ইউনিট (মৎস্য খাত) এর অর্থায়নে ও কারিগরি সহায়তায়, চরফ্যাশনে পরিবার উন্নয়ন সংস্থার (এফডিএ) প্রশিক্ষণ ও কর্মীদের সার্বিক মনিটরিংয়ের কারণে কোরাল মাছ চাষিদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেছে।

মৎস্য চাষি হারুন বলেন, এনালগ পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে লোকসান গুনতে হতো প্রতি বছর। আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে লাভবান হওয়া যায় সে সম্পর্কে আমাদের কোনো ধারণা ছিল না। এফডিএ আমাদের আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত কোরাল মাছ চাষের ওপর প্রশিক্ষণ দিয়েছে। বর্তমানে তাদের কারিগরি সহায়তা, পরামর্শকেন্দ্রের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নিয়ে কোরাল মাছ চাষে উদ্বুদ্ধ হয়েছি।

তিনি আরও জানান, স্থানীয়ভাবে কোরালের চাহিদা পূরণ করে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় কোরাল বিক্রি করে আমার ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে। পরিবারে আর্থিক সক্ষমতা অর্জন করেছি। খরচ পুষিয়ে বছরে আমার ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা লাভ হয়।

পরিবার উন্নয়ন সংস্থার মেহেদী আজম বলেন, কোরাল মাছ সহজে পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারে। এ মাছ পুকুর বা ঝিলে বেশি ঘনত্বেও চাষ করা যায়। সারা বছর ডিম দিয়ে থাকে। এপ্রিল থেকে আগস্ট মাস এদের মূল প্রজননকাল। মৎস্য চাষিকে গতানুগতিক পদ্ধতি থেকে বের করে উন্নত ও আধুনিক মৎস্য চাষ পদ্ধতির মাধ্যমে স্বাবলম্বী করার প্রশিক্ষণ দিয়ে কোরাল মাছ চাষে উদ্বুদ্ধ করছি। কোরাল চাষ করে অনেক চাষি সফল হয়েছেন।

চরফ্যাশন সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মারুফ হোসেন মিনার জানায়, কোরাল চাষের কতগুলো সুবিধার মধ্যে রয়েছে লবণাক্ততাসহিষ্ণু হাওর নদী, নদীর মোহনা এবং উপকূলীয় এলাকার জলাভূমিতে সহজে চাষ করা যায়। সহজে খাপ খাইয়ে নিতে পারে এবং এদের বেশি ঘনত্বে চাষ করা যায়। কোরাল মাছ বৃদ্ধির হার বেশি এবং প্রতি ছয় মাস থেকে দুই বছরের মধ্যে এদের প্রতিটির ওজন ৩৫০ গ্রাম থেকে ৩ কেজি পর্যন্ত হয়। এ উপজেলায় পর্যায়ক্রমে কোরাল চাষ করে মৎস্যজীবীরা অর্থনীতিতে অবদান রাখবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর