সোমবার, ২১ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

আলোর ঝলকানি পাহাড় দ্বীপে

নিজস্ব প্রতিবেদক

আলোর ঝলকানি পাহাড় দ্বীপে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি হিসেবে বিদ্যুতের আলো এরই মধ্যে চলে গেছে দেশের প্রত্যন্ত চরাঞ্চল, দ্বীপ ও দুর্গম পাহাড়ি এলাকায়। বিদ্যুৎবিহীন ও যোগাযোগবিচ্ছিন্ন এই এলাকাগুলোর বাসিন্দারা দীর্ঘ সময় অন্ধকারে কাটালেও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এসে বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত। অবকাঠামোগত সমস্যার কারণে যেসব চর এলাকায় যুগের পর যুগ বিদ্যুতের আলো পৌঁছায়নি এবার বিদ্যুৎ-বঞ্চিত সেই এলাকার বাসিন্দাদের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যে, কিছু দুর্গম পার্বত্য এলাকা বাদে এরই মধ্যে দেশের ৯৯ দশমিক ৮৫ ভাগ এলাকা বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসে পড়েছে। আর বিদ্যুৎ পৌঁছে যাওয়ায় প্রত্যন্ত এসব অঞ্চলের শিক্ষা, কৃষি, দৈনন্দিন কাজকর্ম ও অর্থনীতিতেও ফিরেছে চাঞ্চল্য। বৈদ্যুতিক আলোর ঝলকানিতে হাসি ফুটেছে শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার মুখে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দেশজুড়ে বিদ্যুতায়নের ফলে গ্রামাঞ্চলের হাট-বাজারগুলোতে কর্মচঞ্চলতা ফিরেছে। ঘরবাড়িগুলোতে বিদ্যুতের আলো এসেছে। আগে সন্ধ্যা নামতেই যে গ্রামগুলো নীরব হয়ে যেত এখন সে গ্রামগুলোতেই রাত ১২টা পর্যন্ত হাট-বাজার কর্মব্যস্ত থাকে। গ্রামে চরাঞ্চল পর্যন্ত সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে আমরা বিদ্যুৎ পৌঁছে দিচ্ছি। পাহাড়ে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে সৌরবিদ্যুতের মাধ্যমে। প্রত্যন্ত এলাকায় মানুষ এখন টিভি দেখাসহ ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারছে। এর মাধ্যমে সারা বিশ্বের খবর জানা যাচ্ছে। সব মিলিয়ে বিদ্যুতের আলো মানুষকে সাহসী করে তুলেছে।

পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বর্তমানে দেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের কিছু দুর্গম এলাকা ছাড়া সবখানেই বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছে গেছে। সন্দ্বীপে সাবমেরিন ক্যাবল দিয়ে বিদ্যুৎ টেনে নেওয়া হয়েছে। হাতিয়ায় আলাদা জেনারেটর বসানো হয়েছে। রাঙ্গাবালীতে সাবমেরিন ক্যাবলে বিদ্যুৎ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। বিচ্ছিন্ন ও ছোট চরগুলোতে সৌরবিদ্যুৎ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে পার্বত্য যে এলাকাগুলো বাকি আছে সেখানেও দ্রুত সৌরবিদ্যুৎ চলে যাবে।

রাঙামাটি পার্বত্য জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার প্রান্তিক ইউনিয়ন সাজেক। বিগত কয়েক বছরে সাজেক ভ্যালি পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। জেনারেটরের মাধ্যমে রাতের অল্প কিছু সময় আলোকিত থাকলেও সেখানে অধিকাংশ সময় বিরাজ করত ভুতুড়ে অন্ধকার। দীর্ঘ সময় এই জনপদ বিদ্যুৎবিহীন থাকলেও এখানে প্রয়োজন দেখা দিল বিদ্যুতের। এরই মধ্যে তিনটি পার্বত্য জেলায় বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। সাজেক দুর্গম এলাকা এবং দূরে হওয়ায় প্রকল্পের আওতায় এখানে বিদ্যুতায়ন করার বিষয়টি কঠিন ছিল। কিন্তু বিদ্যুৎ বিভাগের নির্দেশনায় সাজেকে বিদ্যুতায়নের ব্যবস্থা নেওয়া হয়। নিয়ম মেনে সার্ভেসহ লাইন নির্মাণকাজ শুরু হয়। ঠিকাদার ও বিদ্যুৎকর্মীদের নিরলস প্রচেষ্টায় অল্প দিনেই সেখানে বিদ্যুতের লাইন নির্মাণ করা হয়। ট্রান্সফরমার স্থাপনে বেশ সমস্যায় পড়তে হয়। বৈদ্যুতিক ভারী যন্ত্রগুলো খাড়া রুইলুই পাহাড়ে ওঠানো ছিল কষ্টসাধ্য কাজ।

সর্বশেষ খবর