বাংলাদেশের ৫০ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ঘটনা হচ্ছে, দেশের সব গ্রামে এবং প্রতিটি বাড়িতে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে। আর এই আনন্দের দাবিদার বাংলাদেশের সব মানুষ। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার যে স্বপ্ন, তার প্রথম ধাপ পূর্ণ হলো। শতভাগ বিদ্যুতায়নের পর আমাদের বিদ্যুৎ বিভাগের মূল কাজ হবে সরবরাহকৃত বিদ্যুৎ যাতে নিরবচ্ছিন্ন থাকে তা নিশ্চিত করা। একই সঙ্গে সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ নিশ্চিত করাও আমাদের অন্যতম লক্ষ্য থাকবে। আর এটি বাস্তবায়ন করাই হবে আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
তিনি বলেন, যদি আমরা জিডিপির দিকে লক্ষ্য করি তাহলে বলতেই হবে এই অগ্রগতির পেছনে বিদ্যুৎ-জ্বালানির ভূমিকা রয়েছে। দেশজুড়ে বিদ্যুতায়নের ফলে গ্রামাঞ্চলের হাট-বাজারগুলোতে কর্মচাঞ্চল্য ফিরেছে। ঘরবাড়িগুলোতে বিদ্যুতের আলো এসেছে। আগে সন্ধ্যা নামতেই যে গ্রামগুলো নীরব হয়ে যেত এখন সে গ্রামগুলোতেই রাত ১২টা পর্যন্ত হাট-বাজার কর্মব্যস্ত থাকে। এ ছাড়া খেত-খামারগুলোতে পাম্প মেশিন এখন রাতভর বিদ্যুতে চলে। আগে এগুলো তেলে চলত, খরচও বেশি ছিল। কিন্তু এসব কাজে বিদ্যুৎ ব্যবহারে এখন ভর্তুকি পাওয়া যায়। এর পাশাপাশি আমরা সৌরবিদ্যুতেরও ব্যবস্থা করেছি। এতে কৃষি উৎপাদনে বিরাট সুবিধা হয়েছে। আবার বিভিন্ন এলাকায় এখন বরফ কল খোলা হচ্ছে। কোল্ড স্টোরেজ হচ্ছে। আর সবই সম্ভব হচ্ছে বিদ্যুতের কারণে। বিদ্যুতের প্রভাবে আমাদের অর্থনীতিতে বড় ধরনের ইতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। আগামী তিন বছরের মধ্যে বাংলাদেশের চেহারা আমূল পরিবর্তন হবে। গ্রামে চরাঞ্চল পর্যন্ত সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে আমরা বিদ্যুৎ পৌঁছে দিচ্ছি। পাহাড়ে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে সৌরবিদ্যুতের মাধ্যমে। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সারা দেশের সঙ্গে কানেকটিভি তৈরি হয়েছে। বিদ্যুতের মাধ্যমে মোবাইল ফোন চার্জ দেওয়ায় এটি সম্ভব হয়েছে। প্রত্যন্ত এলাকায় মানুষ এখন টিভি দেখাসহ ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারছেন। এর মাধ্যমে সারাবিশ্বের খবর জানা যাচ্ছে। সবমিলিয়ে বিদ্যুতের আলো মানুষকে সাহসী করে তুলেছে।