মঙ্গলবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা
সাক্ষাৎকার

চলতি বছর দেশে অন্তত ৫ লাখ ইউনিট এসি বিক্রি হবে

মো. তানভীর রহমান, চিফ বিজনেস অফিসার, ওয়ালটন এয়ারকন্ডিশনার

নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি বছর দেশে অন্তত ৫ লাখ ইউনিট এসি বিক্রি হবে

আবহাওয়ার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে হুট করেই বেড়ে গেছে এসির চাহিদা। দেশীয় বাজারের অন্যতম উৎপাদক, বিপণনকারী ও রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন। ২০১১ সালে বাংলাদেশে প্রথম এয়ারকন্ডিশনার প্রোডাকশন প্ল্যান্ট স্থাপন করে ওয়ালটন। বাজারের বর্তমান অবস্থা ও সার্বিক অবস্থা নিয়ে কথা বলেছেন ওয়ালটন এয়ারকন্ডিশনারের চিফ বিজনেস অফিসার তানভীর রহমান। জানিয়েছেন প্রযুক্তিগত ও বাণিজ্যিক নানা দিক।

 

ওয়ালটন এয়ারকন্ডিশনার উৎপাদন আপনাদের বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা জানতে চাই

গ্রাহক চাহিদা ও প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী ওয়ালটনের নিজস্ব সুদক্ষ গবেষণা ও উদ্ভাবন (রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন) নিরলস গবেষণার মাধ্যমে তৈরি করছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন এয়ারকন্ডিশনার। দেশে এসি উৎপাদন কারখানা স্থাপনের ফলে এ খাতে বাংলাদেশ আজ স্বয়ংসম্পূর্ণ। এর ফলে যেমন বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হচ্ছে, তেমনি কর্মসংস্থান হচ্ছে। বাড়ছে রপ্তানি আয়। বিশ্বের মাত্র ৯টি দেশ ভিআরএফ উৎপাদন করে। তার মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশের ওয়ালটন। বর্তমানে আমাদের বার্ষিক ২ লাখ ইউনিট এয়ারকন্ডিশনার উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে।

 

সাম্প্রতিক সময়ে দেশে এসির বাজার কেমন বাড়ছে? বছর কী পরিমাণ এসি বিক্রি হতে পারে?

দেশে এয়ারকন্ডিশনারের চাহিদা ক্রমাগত বাড়ছে। ২০২২ সালে বাংলাদেশের এসির বাজারের ৩০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আমরা আশা করছি চলতি বছর দেশে অন্তত ৫,০০,০০০ ইউনিট এসি বিক্রি হবে। যা প্রায় গত বছরের চেয়ে ১৫-২০ শতাংশ বেশি।

 

ওয়ালটন এসি রপ্তানি কার্যক্রম কেমন চলছে?

স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এসিসহ অন্যান্য পণ্য রপ্তানি করছে ওয়ালটন। ওইএম (অরিজিনাল ইক্যুইপমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার) এর আওতায় এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এয়ারকন্ডিশনার রপ্তানি হচ্ছে। পাশাপাশি গ্লোবাল মার্কেটে নিজস্ব ব্র্যান্ড বিজনেস সম্প্রসারণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি আমরা। এরই প্রেক্ষিতে নেপাল, মালদ্বীপ, ভুটান, মালি, ইয়েমেন, তিমুর ইত্যাদি দেশে ওয়ালটন ব্র্যান্ডের এসি রপ্তানি হচ্ছে।

 

বর্তমানে ক্রেতাদের জন্য আপনাদের কী ধরনের এসি রয়েছে?

সব শ্রেণির ক্রেতার জন্য ওয়ালটনের রয়েছে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মডেল ও অত্যাধুনিক ফিচারসমৃদ্ধ এসি। বাসাবাড়িতে ব্যবহারের জন্য রয়েছে ১ থেকে ২.৫ টনের ৪৯ মডেলের স্প্লিট এসি। ছোট, মাঝারি ও বড় স্থাপনার জন্য রয়েছে ১.৫ টন থেকে ৫ টনের ১৯ মডেলের ক্যাসেট ও সিলিং টাইপ কমার্শিয়াল এসি। যা শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, অফিস, কমিউনিটি সেন্টার, রেস্টুরেন্ট ইত্যাদি মাঝারি স্থাপনায় ব্যবহারের জন্য আদর্শ। আর অতি বৃহৎ স্থাপনার জন্য রয়েছে ভিআরএফ এবং চিলার।

 

অতিরিক্ত বিদ্যুৎ খরচের আশঙ্কায় অনেকেই সামর্থ্য ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও এসি কেনা নিয়ে দ্বিধায় ভোগেন বিষয়ে আপনার অভিমত কী?

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী এয়ারকন্ডিশনার উৎপাদনে আমরা বরাবরই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে আসছি। ওয়ালটনই বাংলাদেশে প্রথম নিয়ে এসেছে বাংলাদেশ স্টার রেটিং স্ট্যান্ডার্ড অনুসারে ফাইভ পয়েন্ট ফাইভ স্টার (৫.৫) রেটেড স্প্লিট এয়ারকন্ডিশনার, যা বিএসটিআই সার্টিফাইড স্টার রেটিং মানদন্ডে বিশ্বের অন্যতম সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী।

 

ওয়ালটন এসিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন প্রযুক্তি সম্পর্কে বলুন-

বিশ্বে সর্বপ্রথম ওয়ালটনই উদ্ভাবন করেছে অফলাইন ভয়েস কন্ট্রোল এসি। ওয়ালটন স্মার্ট এসি পৃথিবীর যে কোনো প্রান্ত থেকে মুঠোফোনের মাধ্যমে চালু এবং বন্ধ করাসহ বিদ্যুৎ বিলের হিসাবও সহজেই বের করা যায়। ওয়ালটন এসি সর্বাধুনিক ফ্রস্ট ক্লিন টেকনোলজিসম্পন্ন। এয়ার প্লাজমা প্রযুক্তি পজিটিভ হাইড্রোজেন আয়ন এবং নেগেটিভ আয়ন তৈরির মাধ্যমে বাতাসে বিদ্যমান ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস ধ্বংস করে রুমের পরিবেশকে রাখে নির্মল ও স্বাস্থ্যকর।

 

সম্প্রতি ইউরোপীয় ব্র্যান্ড এসিসির এসি বাজারে ছেড়েছেন বিষয়টি নিয়ে কিছু বলুন

এসিসি বিপুল জনপ্রিয় গ্লোবাল ব্র্যান্ড। ১৯৬৮ সাল থেকে ইউরোপে ব্যাপক সুনাম ও ঐতিহ্যের সঙ্গে এসিসির পণ্য বাজারজাত হয়ে আসছে। গত বছর আন্তর্জাতিক বিডিংয়ে বেশ কিছু নামকরা বৈশ্বিক কোম্পানিকে হটিয়ে এসিসিসহ অর্ধশতাধিক বছরের ঐতিহ্যবাহী ইউরোপীয় তিনটি ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ডের স্বত্ব লাভ করে ওয়ালটন।

 

ওয়ালটন এসির ওয়ারেন্টি-গ্যারান্টি বিক্রয়োত্তর সেবা সম্পর্কে বলুন

ওয়ালটন এসিতে এক বছরের রিপ্লেসমেন্টের পাশাপাশি ইনভার্টার এসির কম্প্রেসারে রয়েছে ১০ বছর পর্যন্ত ওয়ারেন্টি। আইএসও সনদপ্রাপ্ত সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের আওতায় সারা দেশে ৭৯টি সার্ভিস সেন্টারের পাশাপাশি ৪০০ এরও বেশি সার্ভিস পার্টনারের মাধ্যমে দেশব্যাপী এসির গ্রাহকদের আমরা সেবা দিচ্ছি।

 

এই ঈদে ক্রেতাদের জন্য এসি কেনায় কী কী বিশেষ সুবিধা দিচ্ছেন?

‘এসি এক্সচেঞ্জ অফার’ এর আওতায় যে কোনো ব্র্র্যান্ডের পুরাতন এসির বদলে ওয়ালটনের নতুন এসি কেনায় গ্রাহকরা ৩৬,৩৬০ টাকা পর্যন্ত মূল্যছাড় পাচ্ছেন। এর পাশাপাশি ডিজিটাল ক্যাম্পেইন সিজন-১৭ ওয়ালটন এসি ক্রয়ে থাকছে বাড়িভর্তি নির্দিষ্ট মডেলের ১০১টি ফ্রি পণ্য ও নিশ্চিত লক্ষ লক্ষ উপহার। আর ঈদ উপলক্ষে ওয়ালটন ই-প্লাজা থেকে নির্দিষ্ট মডেলের এসি ক্রয়ে ২০ শতাংশ পর্যন্ত ডিসকাউন্ট পাচ্ছেন ক্রেতারা। এ ছাড়া ওয়ালটন এসিতে ফ্রি ইন্সটলেশন, জিরো ইন্টারেস্টে ১২ মাসের ইএমআই এবং সহজ কিস্তি সুবিধা ইত্যাদি।

সর্বশেষ খবর