শুক্রবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক

পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ
তৃষ্ণা মেটাতে অনেকেই অনিরাপদ পানি পান ও অস্বাস্থ্যকর খাবার খাচ্ছেন। এতে ফুড পয়জনিং থেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। এ ছাড়া ভালোভাবে হাত ধোয়া ও অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না...

ঢাকা, আশেপাশের এলাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের অন্যান্য জায়গায় ডায়রিয়া রোগী বাড়ছে। গরমে তৃষ্ণায় দূষিত পানি পান করে ডায়রিয়া, জন্ডিস, হেপাটাইটিস রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। ফুটপাতে, রাস্তার ধারে আখের রস, লেবুর শরবতে মেশানো নোংরা পানি ডেকে আনছে বিপদ।

রাজধানীর মহাখালীর আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) হাসপাতালে প্রতিদিন চিকিৎসা নিচ্ছে পাঁচ শতাধিক রোগী। আইসিডিডিআরবি সূত্র জানায়, সাধারণ সময়ে গড়ে সাড়ে তিনশ রোগী ডায়রিয়া নিয়ে হাসপাতালটিতে আসে। অথচ গত এক সপ্তাহে গড়ে প্রতিদিন চিকিৎসা নিচ্ছেন পাঁচ শতাধিক রোগী। যার অধিকাংশই শিশু। গত ১০ এপ্রিল ৫৩৪ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হন। এরপর ১১ এপ্রিল ৪৮৪ জন, ১২ এপ্রিল ৪৯১ জন, ১৩ এপ্রিল ৫১৫ জন, ১৪ এপ্রিল ৫৩০ জন, ১৫ এপ্রিল ৫৬৫ জন, ১৬ এপ্রিল ৫২২ জন, ১৭ এপ্রিল ৫৩৪ রোগী ভর্তি হয়েছেন।

চিকিৎসকরা বলেন, গত কয়েকদিনে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় রোগী কিছুটা বেড়েছে। কারণ, গরম এলে সব বয়সীরাই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন। গরমের কারণে সবাই পিপাসার্ত থাকেন। তৃষ্ণা মেটাতে অনেকেই অনিরাপদ পানি পান ও অস্বাস্থ্যকর খাবার খাচ্ছেন। এতে ফুড পয়জনিং থেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। এ ছাড়া ভালোভাবে হাত ধোয়া ও অন্য স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। অনেকে রাস্তার পাশের দোকান বা ফুটপাত থেকে অনিরাপদ পানি ও শরবত পান করছেন। এ সময় প্রয়োজন সুপেয় পানি। সেই পানি অনেক সময় পায় না মানুষ। ফলে ডায়রিয়ার প্রকোপ কিছুটা বেড়েছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি ডিভিশনের প্রধান অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘এই গরমে অতিরিক্ত ঘাম থেকে ডিহাইড্রেশন দেখা দিতে পারে। তাই রোদ এড়িয়ে চলতে হবে। তাছাড়া শরীরে যদি বেশি ঘাম ঝরে, তাহলে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার স্যালাইন গ্রহণ করা প্রয়োজন। তবে পানি আর পানীয়র ব্যাপারে সাবধান।’ তিনি আরও বলেন, ‘ বেশি পানি আর পানীয় খেতে গিয়ে আবার না হেপাটাইটিস এ আর হেপাটাইটিস ই ভাইরাস সংক্রমণ থেকে জন্ডিস কিংবা ডায়রিয়া-কলেরা দেখা দেয়। কারণ এই রোগগুলোর তো ছড়ানোর রাস্তা একটাই আর তা হলো দূষিত পানি আর দূষিত খাবার। পানি আর পানীয়র উৎসটা যেন বিশুদ্ধ হয় সেটা মাথায় রাখা জরুরি। ডাবের পানি খাওয়াটা নিরাপদ। অন্য ফলের রসেও সমস্যা নেই যদি সেই রসে মেশানো পানিটা হয় নিরাপদ। মনে রাখতে হবে সামান্য কিছু সচেতনতাই রক্ষা করতে পারে বড় ধরনের বিপদ থেকে।’

গত কয়েকদিনে চট্টগ্রামের হাসপাতালগুলোতে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী বাড়ছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলতি মাসে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪০ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে। ফৌজদারহাটের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) হাসপাতালে গত ১৬ এপ্রিল ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে ৬৬ জন রোগী ভর্তি হয়। চট্টগ্রাম জেলায়ও বেড়েছে ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা।

সর্বশেষ খবর