রবিবার, ২৮ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিক্রয়োত্তর সেবাকে গুরুত্ব দিচ্ছে সুজুকি

এ কে এম তৌহিদুর রহমান, চিফ অপারেটিং অফিসার (সি ও ও), র‌্যানকন মোটর বাইকস লিমিটেড

শাহেদ আলী ইরশাদ

বিক্রয়োত্তর সেবাকে গুরুত্ব দিচ্ছে সুজুকি

জাপানের সুজুকি মোটরসাইকেলের একমাত্র উৎপাদন ও বিপণন প্রতিষ্ঠান র‌্যানকন মোটর বাইকস লিমিটেড-এর চিফ অপারেটিং অফিসার (সি ও ও) এ কে এম তৌহিদুর রহমান বলেছেন, বিক্রয়োত্তর সেবায় বেশি গুরুত্ব দিয়েছি আমরা। বাইক বিক্রি করেই আমাদের দায়িত্ব শেষ না। কাস্টমার যেন বাইক স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যবহার করতে পারে সেদিকেও লক্ষ্য রেখে যে কোনো ধরনের সমস্যা নিয়ে সার্ভিস সেন্টারে আসার সঙ্গে সঙ্গে সার্ভিস দেওয়া হয়। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। তৌহিদুর রহমান বলেন, দুই বছর ধরে আমরা ফোকাস করছি আমাদের নেটওয়ার্কে এবং বাইকটা যেন খুব দ্রুত সার্ভিস সেন্টার ও শোরুমে মিট করতে পারে। আমাদের সার্ভিস সেন্টারে এক্সপার্ট টেকনিশিয়ান আছে। সার্ভিস সেন্টারের ডিজাইন করা হয়েছে এমনভাবে। যাতে কাস্টমার এখানে এসে স্বাচ্ছন্দ্যে বসে রিলাক্সে সময় কাটাতে পারে। এতে যেন কাস্টমারের টাইমটাও নষ্ট না হয়। আমাদের শোরুম এবং সেলস সেন্টারের পুরো ডিজাইনটা করা হয়েছে কাস্টমার কম্ফোর্টেবল।

তিনি আরও বলেন, মার্কেট ধরতে বা নম্বর ওয়ান হতে প্রত্যেক কোম্পানির আলাদা পরিকল্পনা থাকে। অবশ্যই আমরা নম্বর ওয়ান হতে চাই। আমরা খুব বেশি ফোকাস দিচ্ছি যারা আমাদের বাইক কিনছেন তারা কীভাবে ইনজয় করছেন। বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি আমরা আফটার সেল সার্ভিসে। সার্ভিসে একটা বিষয় আমরা দেখছি, ব্যবহার এবং ভালো সলিউশন পাচ্ছে কি না। এসব বিষয়ে আমরা এসিওর করি। সবকিছু ঠিকমতো চললে আমি বিশ্বাস করি আমরা নম্বর ওয়ানে পৌঁছাব।

তিনি আরও বলেন, দুই বছর ধরে বিশ্ববাজারের সঙ্গে বাংলাদেশের বাইকাররাও নতুন নতুন মডেলের বাইক পাচ্ছেন। আগে আন্তর্জাতিক বাজারে সুজুকির বাইক লঞ্চ হওয়ার দীর্ঘ সময় পরে বাংলাদেশে লঞ্চ করা হতো। আমরা এই সময়ের ব্যবধানটা এক মাসে নিয়ে এসেছি। মানে সুজুকির কোনো বাইক বিশ্ববাজারে আসার এক মাস পরে বাংলাদেশের বাজারেও পাওয়া যাচ্ছে। তৌহিদুর রহমান বলেন, বর্তমানে সুজুকির ১৫টি মডেলের অনেকগুলো কালারের ১৫০ সিসি সেগমেন্ট, ১২৫ এবং ১০০ সিসির বাইক বাজারে রয়েছে। কাস্টমারের সবচেয়ে বেশি পছন্দ সুজুকির ১৫০ সিসির বাইক। স্পোর্টস ও প্রিমিয়াম বাইকের চাহিদাটা বেশি। বিশেষ করে জিক্সার সিরিজের বাইক অনেক ফেমাস। এ ছাড়াও হায়াতি মডেলের বাইক প্রায় সব শ্রেণির মানুষ ব্যবহার করেন। ১৫০ সিসির সুজুকি সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে। কাস্টমারের সবচেয়ে বেশি পছন্দ জিক্সার মনোটন। ব্যবহারকারী অনেক বেশি। গত দুই-তিন মাসে প্রচুর সাড়া ফেলেছে এই বাইকটি। স্পোর্টস এবং কমফোর্টেবল বাইকটির ব্যবহারকারী বেড়েছে অনেক। আমাদের প্রধান কাস্টমার তরুণরা। এ ছাড়া প্রফেশনাল, ব্যাংকার, পুরো করপোরেট লেভেলেও সুজুকির বাইক ব্যবহার করেন। অনেক জ্যেষ্ঠ নাগরিকও আমাদের বাইক ক্রয় করেন এটা ভালো থিম। আমাদের স্কুটার সবাই ইউজ করছেন। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে ৬০ বছরের বেশি বয়সীরাও ব্যবহার করেন। তিনি বলেন, জিক্সার ও জিক্সার এসএফ আছে এফ আই, এ বি এস, কার্বোরেটেড দুটি প্রিমিয়াম বাইক বাজারে আছে। প্রিমিয়াম সেগমেন্টে অনেক ভ্যারাইটি অব প্রোডাক্ট রয়েছে সুজুকির। এই দুটো মডেল মার্কেটে ভালো অবস্থানে রয়েছে। একই সময়ে স্কুটারের চাহিদাও আস্তে আস্তে বাড়ছে। সুজুকির অ্যাক্সেস মডেলের স্কুটিটা ভালো চলছে। স্কুটির চাহিদা যেমন বাড়ছে তেমন সুজুকির বিক্রয়ও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১১০ ও ১২৫ সিসির বাইকে আমরা একটু পিছিয়ে আছি। ধীরে ধীরে সুজুকি ব্যান্ডের স্ট্যান্ড বৃদ্ধি হচ্ছে। তারপরও দিন দিন কাস্টমার বাড়ছে। আমরা কাস্টমারের জন্য বিভিন্ন ধরনের ভেরিয়েশনের বাইক আনার চিন্তা করছি যেটা টেকনোলজিক্যালি হবে এবং এফোর্টেবলও হবে। বাইক বিক্রির সঙ্গে লাইসেন্সের কোনো সম্পর্ক আছে বলে আমার কাছে মনে হয় না। বাইক ক্রয় করার জন্য লাইসেন্স লাগবে এটা বিশ্বের অন্য কোথাও আছে কি না আমার জানা নেই। সরকার যে উদ্দেশ্যে এই শর্তটা দিয়েছে এতে কোনো সমাধান আসবে কি না আমি জানি না। বরং আমরা বাইক রেজিস্ট্রেশনের জন্য কী কী ডকুমেন্ট লাগে সেটা নিশ্চিত করতে সহযোগিতা করতে পারি।

একই সঙ্গে রেস্পন্সিবল মানুষ দেখে যেন সরকার লাইসেন্স দেয় তাহলে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা কমে আসবে। আমাদের তরফ থেকে আমরা অনেক ধরনের প্রোগ্রাম করেছি, আমরা সেফটি অ্যাওয়ারনেস নিয়ে কাজ করছি। আমরা বিভিন্ন প্রোগ্রাম করেছি সেখানে শুধু বাইক চালানোর বিভিন্ন রুলস অ্যান্ড রেগুলেশন নিয়েও থিউরিটিক্যাল ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন পয়েন্টে গিয়ে আমরা এ কাজ করছি। আমরা যখন বাইক সেল করি তখন সেফটি অ্যাওয়ারনেস সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করি। সেফটি নিয়ে আমরা কাজ করছি। আমার মনে হয় সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সচেতনতামূলক কর্মসূচি নেওয়া উচিত। আমরা খুশি হব যদি সরকার এ বিষয়ে আমাদের আহ্বান করে। দুর্ঘটনা কমাতে মানুষকে সচেতন করতে পারব।

সর্বশেষ খবর