শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ২২ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

সরকারের ক্যাশলেস লেনদেনের সহযোগী নগদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকারের ক্যাশলেস লেনদেনের সহযোগী নগদ

তানভীর এ মিশুক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক নগদ

চলতি বছর মার্চে সরকার বাংলাকিউআর কোড পেমেন্টের যে উদ্যোগ নিয়েছে তার সঙ্গে শামিল হয়েছে নগদ। সর্বোচ্চ অফার দিয়ে গ্রাহককে কিউআর কোডে পেমেন্টে উৎসাহ দিয়ে আসছি।  তারই অংশ হিসেবে আমরা নগদ দিয়ে পেমেন্ট করলে বিএমডব্লিউ গাড়ি জেতার সুযোগ অফার করেছি। বিএমডব্লিউ গাড়ি উপহার শুধু এশিয়া মহাদেশে নয়, পুরো বিশ্বে কোনো কোম্পানি এ ধরনের ক্যাম্পেইন ঘোষণা করেনি। গাড়ি উপহারের ঘোষণা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা মানুষের মধ্যে অনেক পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছি। আগে যেখানে দিনে নগদ দিয়ে পেমেন্ট হতো ১ থেকে ২ কোটি টাকা। ক্যাম্পেইন ঘোষণার পর থেকে দিনে ৩০-৪০ কোটি টাকা লেনদেন হচ্ছে। এটা সম্ভব হয়েছে শুধু এই ক্যাম্পেইনটা নিয়ে আসার কারণে। এটা শুধু নগদ একা করলে হবে না। অন্য ব্যাংক, এমএফএসগুলোকেও এগিয়ে আসতে হবে। ডিজিটাল পেমেন্ট করতে গ্রাহককে উৎসাহ দিতে হবে। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

তানভীর এ মিশুক বলেন, কভিডের সময় মানুষ বাধ্য হয়ে অনলাইনে লেনদেন করেছে। ওই সময়ে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে গেছে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস। কোনো বিকল্প না থাকায় কভিড পরীক্ষা করাতে হলে তখন নগদ ব্যবহার করতে হয়েছে। ক্যাশ টাকা নেওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না। ওই সময়ে মানুষ অনলাইন ডেলিভারিতে অভ্যস্ত হয়েছে। সেটা এখনো চলমান। কমেনি। অনলাইনে কেনাকাটা এখনো চলছে। ক্যাশলেস সমাজের দিকে যাওয়ার জন্য কভিড একটা আশীর্বাদ ছিল। ২০২৩ সালের আগেও মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস খাতে অ্যাপ এবং কিউআর কোডভিত্তিক লেনদেন ছিল ২ থেকে ৩ শতাংশ। পেমেন্ট হতোই না। লেনদেন বলতে ছিল এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় টাকা পাঠানো। তিনি বলেন, ২০১৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ই-কেওয়াইসির পাইলট যাত্রা শুরু করি। তখন ই-কেওয়াইসি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো পলিসিই ছিল না। এটা অনেক বেশি সিকিউরড ও বিশ্বাসযোগ্য। তখন অনেকেই অনেক কথা বলেছে। অর্থ পাচার বেড়ে যাবে। এটা বোঝাতেই তিন-চার মাস সময় লেগেছে। যখন সবাই বুঝতে পেরেছে, তখন সবাই এটাই ফলো করা শুরু করেছে। মেজর চেঞ্জটা এসেছে যখন ডিজিটাল ই-কেওয়াইসিটা চালু করি। *১৬৭# ডায়াল করার পরে নির্বাচন কমিশন থেকে তথ্য এনে যাচাই করে এমএফএস অ্যাকাউন্ট খুলে দিচ্ছি। এটা শুরু করার পর থেকে আজ পর্যন্ত নগদের গ্রাহক প্রায় সাড়ে ৭ কোটি। মানুষের জীবনকে সহজ করে দেওয়ায় এটা সম্ভব হয়েছে। কারণ *১৬৭# ডায়াল করে নগদ অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য ছবি তুলতে হয় না, জাতীয় পরিচয়পত্র লাগে না, বিশাল ফরম পূরণ করতে হয় না। এমনকি আপনার স্মার্টফোনও দরকার নেই। আপনার কাছে যে ফোন আছে, সেটা দিয়েই অ্যাকাউন্ট খুলতে পারছেন। বিরাট একটা পরিবর্তন এসেছে। প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ হাজার গ্রাহক নতুন অ্যাকাউন্ট খুলছেন। তানভীর এ মিশুক বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন ২০২৭ সালের মধ্যে ৭৫ শতাংশ লেনদেন ক্যাশলেস করতে চান। সেটা আমরা সরকারের নীতিমালাতেও দেখতে পাচ্ছি। ডিজিটাল ব্যাংক আসছে। ইতোমধ্যে বাংলা কিউআর কোডে লেনদেনে প্রণোদনা শুরু করেছে। ডিজিটাল পেমেন্ট প্রমোট করতে পাইলটও শুরু হয়েছে। সরকারের পলিসির সঙ্গে সেবাদাতাদের এগিয়ে আসতে হবে। অপারেটরদের আগ্রহ না থাকলে ক্যাশলেস লেনদেন প্রকল্প সফল হবে না। আমরা ক্যাশে লেনদেনে অভ্যস্ত, সেই অভ্যাসটা ত্যাগ করার জন্য মাইন্ডসেট ঠিক করতে হবে। ক্যাশলেস লেনদেনে আগ্রহী করার জন্য প্রণোদনা দিতে হবে। ক্যাশলেস লেনদেনে সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে আস্থা। নগদ টাকা থাকে মানুষের হাতে। টাকা যখন ডিজিটাল হবে তখন একটি নম্বর থাকবে মোবাইলে। ওই নম্বরটাই টাকার সমমান, এই আস্থা অর্জন করা জরুরি। এ জন্য মানুষের মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে। এক্ষেত্রে সব অপারেটর ও সরকারকে একসঙ্গে জনগণের কাছে যেতে হবে। আগে যে কাগজের টাকা ছিল এখন কনভার্ট হয়ে ডিজিটাল মানি হয়েছে। মোবাইলের মধ্যে আছে, একই জিনিস, সব কাজ করা যাবে। এটা ঝুঁকিমুক্ত।  এটা হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সবকিছু কনভার্ট হয়ে যাবে। এটাই সবচেয়ে বেশি জরুরি। এটা করা গেলে সারা দেশের ইউনিয়ন পর্যায়ে ক্যাশলেস লেনদেন ছড়িয়ে দেওয়া যাবে। মোবাইলে টাকা কতটা নিরাপদ সেটা জনগণকে বোঝাতে হবে।

সর্বশেষ খবর