শিরোনাম
রবিবার, ২৫ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

স্বল্পমূল্যে বিশ্বমানের ফ্রিজ দিচ্ছে কনকা

শাহেদ আলী ইরশাদ

স্বল্পমূল্যে বিশ্বমানের ফ্রিজ দিচ্ছে কনকা

ইলেকট্রো মার্ট লিমিটেডের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নুরুল আফছার বলেছেন, ১৯৯৯ সালে আমরা বাংলাদেশে কনকা ব্র্যান্ড ফ্রিজ নিয়ে এসেছি। আমরা যখন শুরু করি তখন বাজারে অন্যান্য ফ্রিজের দাম অনেক বেশি ছিল। আমরা মধ্যবিত্ত এবং উচ্চ মধ্যবিত্তের নাগালের জন্য বিশ্বমানের ফ্রিজ স্বল্পমূল্যে নিয়ে এনেছি। কনকা বিশ্বের ২০০ দেশ এবং বাংলাদেশে একটি সমাদৃত ব্র্যান্ড। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ব্যবসা করতে গেলে প্রতিবন্ধকতা আসবেই। করোনা মহামারির সংকট কাটিয়ে ওঠার আগেই শুরু হয় ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। এতে যে ডলার সংকট তৈরি হয়েছে তাতে ব্যবসা কিছুটা স্থির ছিল। প্রত্যেকটি পণ্যের মার্কেটে একটা কম্পিটিশন থাকেই। স্বল্পমূল্যে মানসম্পন্ন রেফ্রিজারেটর দেওয়ার কারণে গ্রাহক কনকা পণ্য বেশি কিনছেন। মো. নুরুল আফছার বলেন, আসলে ফ্রিজকে এখন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য হিসেবে গণ্য করা হয়। মানুষ এখন ব্যস্ত হয়ে পড়ছে, তাই তারা সপ্তাহে একদিন বাজার করার চেষ্টা করে। আবার কম আয়ের লোক দেখা যায় অনেক দিনের বাজার একবার ক্রয় করে ফ্রিজে রাখে। দিন দিন বাংলাদেশে ফ্রিজের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা ফ্রিজের নতুন নতুন টেকনোলজি নিয়ে কাজ করছি। আমাদের ফ্রিজের ওয়াইড এরিয়া সবচেয়ে বেশি। আমাদের টেকনোলজির ফ্রিজে এক খাবারের গন্ধ অন্য খাবারের সঙ্গে সংমিশ্রণ হয় না। কার্বন ডিভাইসের সঙ্গে ডিএকটিভ করে দেওয়া হয়। এতে খাবার সতেজ এবং স্বাস্থ্যসম্মত থাকে। আমরা ফ্রিজে যা ব্যবহার করি তা একশ শতাংশ ফুড গ্রেড এবং এফডিআই সার্টিফাইডকৃত। ভিটামিন ফ্রেশ এবং গার্ডেন ফ্রেশ টেকনোলজির মিশ্রিত।

তিনি আরও বলেন, আমাদের ফ্রিজের অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো ভেজিটেবল ড্রয়ার আছে। সেখানে ১৫ থেকে ২০ দিন শাকসবজি অনায়াসে সতেজ থাকে, নষ্ট হয় না। সূর্যের রশ্মিতে বাগানে যেরকম ফ্রেশ থাকে আমাদের ফ্রিজে তেমনই পাবেন। ভেজিটেবল বক্সের মধ্যে হিউমিডিটি কন্ট্রোল সিস্টেম আছে, যাতে খাবারের মান নিয়ন্ত্রণ করা যায়। খাবার এমন স্বাস্থ্যসম্মত রাখার জন্য এই ব্যবস্থা। দরজা খুলে অনেক সময় মানুষ চলে যায় বা ভুলে যায়। সেজন্য আমাদের ফ্রিজে ৬০ সেকেন্ড পরে অ্যালার্ম বাজবে। বাংলাদেশে আমরাই এ প্রযুক্তি প্রথমে নিয়ে এসেছি।

মো. নুরুল আফছার বলেন, আমরা ডিজিটাল ডিসপ্লে বা ইনভার্টার টেকনোলজি নিয়ে এসেছি। ফলে ঘরের বাইরে থেকেও ফ্রিজ কন্ট্রোল করা যাবে। টেম্পারেচার এবং অন্যান্য ফাংশন বাইরে থেকে হাতের স্পর্শের মাধ্যমে কন্ট্রোল করা সম্ভব। বেড়াতে গেলে ইকোনমি মোড ব্যবহার করা যায়। এতে বিদ্যুৎ বিল কম আসবে এবং খাবারও সতেজ থাকবে। কনকা ব্র্যান্ড চীনের সঙ্গে যৌথভাবে সোনারগাঁ এলাকায় ম্যানুফ্যাকচার হাব করছে। ফ্রিজের সব ধরনের যন্ত্রাংশ আমরা এখানে উৎপাদন করছি। আমরা নতুন নতুন টেকনোলজি নিয়ে কাজ করছি। সব মেশিন ইউরোপীয়, জাপানি ও চীনের। ২০১৫ সালে এই ফ্যাক্টরিতে কাজ শুরু হয়েছে। ২০১৯ সালে এখান থেকে প্রোডাকশনে গেছে। পণ্যগুলো বাংলাদেশের আবহাওয়ার সঙ্গে মানানসই। তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরের বাজেটে ফ্রিজে যেসব সুবিধা ছিল আগামী অর্থবছরেও তা অব্যাহত রাখা হয়েছে। এ জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সরকারের সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ। কারণ এটি শিল্পবান্ধব বাজেট হয়েছে। বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধাগুলো বহাল থাকলে দেশে বিদেশি বিনিয়োগ আরও বাড়বে। আমরা মনে করি আগামী কিছুদিনের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে ইলেকট্রনিক্স পণ্য বিদেশে রপ্তানি হবে। মো. নুরুল আফছার বলেন, বিক্রয়-পরবর্তী সেবায় আমরা ১০ বছরের ওয়ারেন্টি দিচ্ছি। সারা দেশের প্রতিটি থানা এবং উপজেলায় সার্ভিস সেন্টার রয়েছে। সেন্ট্রাল হটলাইন নম্বর আছে। হটলাইনে যোগাযোগ করে ২৪         ঘণ্টার মধ্যে সার্ভিস নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। গ্রাহক যখন আমাদের পণ্য কেনেন তখন তিনি আমাদের কনকা পরিবারের সদস্য হয়ে যান। আমরা আমাদের পরিবারের সমস্যা যেভাবে সমাধান করি একইভাবে গ্রাহকের সমস্যাও সমাধান করি। গ্রাহকসংখ্যার তুলনায় আমাদের অভিযোগ অনেক কম।

তিনি বলেন, আমাদের কাস্টমার সন্তুষ্টি সবচেয়ে বেশি। আমাদের কল সেন্টারে কল করলে আমরা কাস্টমারের ঠিকানা এবং ফোন নম্বরগুলো সংরক্ষণ করি। পরবর্তীতে কাস্টমারকে ফোন দিয়ে আবার ফিডব্যাক নিই। ঠিকমতো চলছে কি না বা কোনো সমস্যা হয় কি না এসব খোঁজখবর আমরা নিই। যে কোনো প্রোডাক্ট কিনলে আমরা চেষ্টা করি এক সপ্তাহের মধ্যে কাস্টমারের ফিডব্যাক নেওয়ার জন্য। ইলেকট্রনিক্স শিল্পে সারা দেশে ৭ হাজার কর্মী আমাদের সঙ্গে কাজ করছে। বাংলাদেশে এখন শতভাগ বিদ্যুৎ মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে।  বিদ্যুৎ প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছে যাচ্ছে। প্রতিটি গ্রামে আমাদের পণ্য পৌঁছে যাবে- এ আশা আমরা করছি। সেটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। ২০২৬ সাল থেকে আমরা ফ্রিজ এক্সপোর্ট করার চিন্তা করছি আশেপাশের দেশগুলোতে। আমরা চেষ্টা করছি গ্রাহকের সন্তুষ্টির মাধ্যমে বাংলাদেশের নম্বর ওয়ান ব্র্যান্ড হওয়ার।

সর্বশেষ খবর