৭ ডিসেম্বর, ২০১৫ ১৫:২৫

এত রক্তের শেষ কোথায়?

তুষার কণা খোন্দকার

এত রক্তের শেষ কোথায়?

২০০৩ সালে আমেরিকা যখন আকাশ-মাটি-সাগর তিন দিক থেকে একযোগে ইরাকের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল সেই দিনগুলো স্মরণ করুন। বোমার আঘাতে ছিন্নভিন্ন দুটি কিশোর সন্তানের মৃতদেহের পাশে ইরাকি মায়ের আহাজারি দুনিয়ার সব মায়ের চোখ ভিজিয়ে দিয়েছিল।  সেদিন আমি আশায় বুক বেঁধে ভেবেছিলাম, সাদ্দামের পতন হলে যুদ্ধবাজ মানুষগুলোর রক্তপিপাসা আপাতত মিটবে। যুদ্ধ শেষে ইরাকের ভাণ্ডারে গণবিধ্বংসী মারণাস্ত্র পাওয়া গেলে পশ্চিমা রাজনীতিকরা মানব সভ্যতা বাঁচিয়ে দেওয়ার কৃতিত্ব নিয়ে অনেক দিন ধরে বগল বাজাবে; আর ইরাকের ভাণ্ডারে মারণাস্ত্র পাওয়া না গেলে তারা কথার মারপ্যাঁচে নিজেদের অপকর্মের পক্ষে নির্লজ্জ সাফাই গাইতে থাকবে। ঘটনা যেমনই ঘটুক না কেন, সাদ্দাম হোসেনের পতনের সঙ্গে সঙ্গে ইরাকে নরহত্যার অবসান হবে বলে আমি বিশ্বাস করেছিলাম। আমরা জানতাম, ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য যতদিন সাদ্দামকে প্রয়োজন ছিল ততদিন আমেরিকা তাকে আদর করে লালন করেছে। পশ্চিমা দুনিয়ার দ্বৈত নীতি নতুন কিছু নয়। কাজেই সেটা নিয়ে আমরা কেউ মাথা ঘামানোর প্রয়োজন বোধ করিনি। সাদ্দাম হোসেনের একনায়কতন্ত্রের জাঁতাকলে ইরাক আটাশ বছর পিষ্ট হয়েছে। সাদ্দামের বদলে আমেরিকা সেখানে আরেকজন একনায়ককে গদিতে তুলে দিলে ইরাকবাসী মুক্তির স্বাদ পাবে এমন আহাম্মকি বিশ্বাস আমাদের ছিল না। ভেবেছিলাম, যুদ্ধ শেষে তাদের দেশে প্রকৃতির নিজস্ব নিয়মে যেটা ঘটার সেটা ঘটুক। ইরাকের নাগরিকরা যদি নিজেদের দেশ বাঁচানোর জন্য ঘুরে দাঁড়াতে না পারে সেটি তাদের ব্যর্থতা। সাদ্দামের শাসনে ইরাকবাসী তপ্ত তাওয়ায় ছিল, নতুন কোনো একনায়কের শাসনে তারা হয়তো জ্বলন্ত চুল্লিতে পড়বে। তখনো আমরা বিশ্বাস করতাম, ইরাক যুদ্ধের অবসান হলে আমাদের আর নিরীহ নারী-পুরুষ-শিশুর ছিন্নভিন্ন রক্তাক্ত দেহ দেখতে হবে না। কিন্তু আমরা জানতাম না ইরাক যুদ্ধের সূচনা ছিল মানবতার লাঞ্ছনার দীর্ঘমেয়াদি অশুভ সূচনা, যুদ্ধের শেষ নয়।

২০০৩ সালে ইরাক আক্রমণের পরে একযুগ কেটে গেছে। ইরাক আক্রমণের মধ্য দিয়ে আরব বিশ্বে যে গণহত্যা শুরু হয়েছে আইসিস নিধনের নামে সেটি এখন ইরাকের সীমা পার হয়ে সিরিয়ায় প্রসারিত। পশ্চিমা দুনিয়া যখন বুক চিতিয়ে দাবি করে, আইসিস ঘাঁটি লক্ষ্য করে আকাশ থেকে বোমা মেরে তারা ৮০০ জঙ্গি নিধন করেছে তখন পশ্চিমা দুনিয়ার স্বাধীন গণমাধ্যমে খবর আসে, সিরিয়ায় বোমার আঘাতে ১৩৭ শিশুর প্রাণহানি। মনে প্রশ্ন জাগে, ১৩৭টি শিশু কি আইসিসের ঘাঁটিতে মরণ নিয়ে খেলতে গিয়েছিল? 

ইরাক কিংবা সিরিয়ায় শিশুহত্যার প্রতিবাদ করছি বলে ধরে নেওয়ার কারণ নেই যে, আমি আইসিসকে বাঁচিয়ে রাখতে বলছি। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে পৃথিবীর প্রতিটি সভ্য মানুষ সভ্যতার শত্রু আইসিসের ধ্বংস কামনা করে। আমিও তাদের সঙ্গে একমত। আমার মনে প্রশ্ন জাগে, একবিংশ শতাব্দীর আধুনিক বিজ্ঞানশাসিত দুনিয়ায় আইসিসের মতো প্রাগৈতিহাসিক দানব পয়দা করল কে? এত ভয়ঙ্কর দানব যদি ইসলাম ধর্মের অংশ হয়ে থাকে তাহলে গত ১৪০০ বছর এরা কোথায় ছিল? পশ্চিমা দুনিয়ার রাজনীতিক এবং তাদের চেলারা আইসিস এবং মুসলমানকে এক অর্থে দেখানোর চেষ্টা করছে। তাদের এই চেষ্টা কি ইচ্ছাকৃত? তারা কি জানে না, আইসিসের উত্থান এবং তাদের বর্বর কর্মকাণ্ডের কারণে মুসলমান সমাজ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে? পশ্চিমা সমাজ নয়, বরং দুনিয়ার মুসলমান সম্প্রদায় আইসিসের বর্বরতার দায়ে ফেঁসে গিয়ে তার চরম মূল্য শোধ করছে। মুসলমান এবং আইসিস যখন সমার্থক বলে প্রচার চালানো হয় তখন মুসলমানদের জন্য সেটি আর্থিক ক্ষতির সীমায় বাঁধা থাকে না। মুসলমানের গায়ে আইসিস মোহর মেরে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা মুসলমানদের আত্মমর্যাদার মর্মমূলে কুঠারাঘাত হানে। কোনো একটি সম্প্রদায়ের আত্মমর্যাদার হানি ঘটাতে পারলে সেই সম্প্রদায়কে ধ্বংস করার পথে আর কোনো বাধা থাকে না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার সুযোগ থাকে, কিন্তু আত্মবিশ্বাস হারিয়ে গেলে সেটি ফিরে পাওয়া সহজ নয়। কোনো পাপ না করেও মুসলমানরা তাদের ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে আজকের দুনিয়ায় আইসিসের পাপের ভাগিদার। মুসলমানের গায়ে আইসিস পরিচয়ের সিলমোহর সেঁটে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মুসলমানের আত্মমর্যাদা এবং আত্মবিশ্বাস ধসে পড়ছে। সব দেখে শুনে মনে প্রশ্ন জাগে, আরব বিশ্ব কিংবা মুসলমানদের ধ্বংস করার হাতিয়ার হিসেবে কি আইসিসের উত্থান? ভবিষ্যতে আইসিসের অস্তিত্ব টিকে থাকলে মুসলিম বিশ্ব কোনো দিন লাভবান হবে না। আইসিস যে মুসলমান সম্প্রদায়ের সবার অস্তিত্ব সংকটের মুখে ঠেলে দিচ্ছে এই বুঝ-বুদ্ধি মুসলমান সমাজের আছে। সবার মনে একটি প্রশ্ন ঘুরেফিরে উঁকি দিচ্ছে, কার মদদে আইসিসের জন্ম কিংবা কার আশ্রয়-প্রশ্রয়ে এই দানবের এত শক্তি?

আরব দুনিয়া যুদ্ধের তিক্ত পরিণাম দেখে ফেলেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইহুদিরা যেভাবে নাজিদের হাত থেকে পালিয়ে বেঁচেছে ইরাকি-সিরীয়দের বর্তমান অবস্থা তার চেয়েও খারাপ। যুদ্ধবিধ্বস্ত কোনো জাতি কি নিজের ভূখণ্ডে দীর্ঘমেয়াদে যুদ্ধ টিকিয়ে রাখতে চায়? নিশ্চয়ই নয়। অথচ আইসিসের অস্তিত্বের প্রশ্ন সামনে চলে আসায় আরব দুনিয়ায় যুদ্ধের অবসানের সব দরজা বন্ধ হয়ে গেছে। আরব দুনিয়ায় অনন্তকাল যুদ্ধ টিকিয়ে রাখার স্বার্থে কোনো দুষ্ট শক্তি কি আইসিসকে পয়দা করেছে? বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করলে মনে প্রশ্ন জাগে, আরব দেশগুলোর ওপর পশ্চিমা দুনিয়ার নিয়ন্ত্রণ নিরঙ্কুশ রাখার জন্যই কি আইসিস দানবের সৃষ্টি? আরব দেশগুলোর মাটিতে যুগ যুগ ধরে অবিরাম বোমাবর্ষণ অব্যাহত রাখার স্বার্থেই কি আইসিসের জন্ম? মুসলমান মাত্রেই আইসিস এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে পশ্চিমাদের একবার ভাবা উচিত, আরব দুনিয়ার মুসলমানরা বহু শতাব্দী ধরে ইসলাম ধর্ম পালন করছে। নামাজের সময় হলে তারা নিয়মিত মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করছেন। তার মানে এই নয় যে, বহু শতাব্দী ধরে নামাজি মুসল্লিরা মসজিদ থেকে বের হয়ে অন্য ধর্মের মানুষের গলা ছুরি দিয়ে পুচিয়ে কেটে শরীর থেকে মাথা আলাদা করে দিচ্ছিল। কিংবা তারা প্রাচীন সভ্যতার সব চিহ্ন হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে ভেঙে ফেলছিল? মুসলমান মাত্রেই আইসিসের মতো বর্বর হলে সিরিয়া এবং ইরাকে প্রাচীন সভ্যতার এত নিদর্শন এত হাজার বছর টিকে ছিল কেমন করে। আরব দুনিয়ায় মুসলমান রাজত্বের শুরু ৭০০ শতাব্দী থেকে। ১৩০০ বছর পার হয়ে গেল অথচ মুসলমানরা প্রাচীন সভ্যতার চিহ্ন ধ্বংস করেছে এমন কথা কেউ শোনেনি। মুসলমানরা তেমন কাজ করলে এত শতাব্দী ধরে সভ্যতার চিহ্নগুলো আইসিসের হাতে ধ্বংস হওয়ার আশায় টিকে থাকত না। জোব্বাজাব্বি পরা লোকগুলো যখন ভয়ঙ্কর বর্বরতা নিয়ে প্রচীন সভ্যতার চিহ্নগুলো হাতুড়ি মেরে ভাঙতে থাকে পশ্চিমা গণমাধ্যম সেটি সযত্নে বার বার প্রচার করে বলতে চায়, দেখ দেখ এরা সবাই মুসলমান। তারা একবারও বলে না, সিরিয়া এবং ইরাকের মুসলমানরা এতকাল ধরে দুনিয়ার সেরা প্রত্নতত্ত্ববিদদের খনন কাজে সহযোগিতা করেছে, প্রয়োজনে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে অর্থ ব্যয় করে সভ্যতার নিদর্শনগুলো সংরক্ষণ করেছে। পশ্চিমা গণমাধ্যমের প্রচারের ধরন দেখে বোঝা যায় হিংসার কাছে যুক্তি পরাস্ত হয়েছে। তাদের কাছে সত্যের আশা বাতুলতা। আইসিস বর্বরদের পরিচয় নির্ণয়ের সময় পশ্চিমা দুনিয়ার সবাই তোতা পাখির মতো আউড়ে যাচ্ছে, আইসিসরা কট্টর সুন্নি। আমার প্রশ্ন, দুনিয়াজোড়া মুসলমানদের বিশাল একটি অংশ সুন্নি। আবার দুনিয়ায় শিয়া মতাবলম্বী মুসলমানের সংখ্যাও কম নয়। মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে শিয়া সুন্নি বিশ্বাসের পার্থক্য নবীন কোনো ধারণা নয়। ইসলাম ধর্মের বয়স এবং শিয়া সুন্নি ভিন্ন মতের বয়স প্রায় সমান। কারবালার যুদ্ধে ইমাম হোসেন (রহ.) যুদ্ধে পরাজিত হয়ে ইয়াজিদের সৈন্যদের হাতে নিহত হওয়ার পরে ইমাম হোসেনের অনুসারীরা শিয়া সম্প্রদায়ের জন্ম দিয়েছে। ইসলাম ধর্মের মূল বিশ্বাস এবং ধর্ম পালনের রীতিনীতির বিচারে শিয়া এবং সুন্নিদের মধ্যে পার্থক্য খুবই সামান্য। কারবালার যুদ্ধের পরে বহু শতাব্দী কেটে গেছে। কিন্তু ধর্মীয় মতভিন্নতার কারণে শিয়া সুন্নি একে অপরের সঙ্গে যুদ্ধে মত্ত হয়েছে এমনটি এতকাল দেখা যায়নি। শিয়া এবং সুন্নি উভয় সম্প্রদায় একই সমাজে তাদের মুসলমান পরিচয় নিয়ে মিলেমিশে বসবাস করে আসছে। ইরাকে গণবিধ্বংসী মারণাস্ত্রের সন্ধানে মিত্রদের সঙ্গে নিয়ে আমেরিকা যুদ্ধে নামার পরে সবাই শিয়া সুন্নি বিভাজনের গল্প জানতে পারল।

যুদ্ধবিধ্বস্ত ইরাক, সিরিয়া থেকে শরণার্থী মানুষের স্রোত সাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপের পথে ছুটছে। নিজ দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া ছাড়া তাদের বাঁচার আর কোনো পথ নেই। নিজ দেশ ইরাক কিংবা সিরিয়ায় মানুষের পায়ের তলে মাইন বিছানো, মাথার ওপর দিয়ে মিসাইল ছুটে আসছে। যে পশ্চিমা দুনিয়া সিরিয়া কিংবা ইরাকবাসীর জীবনে এমন নরক নামিয়ে এনেছে তারা বলছে, আমরা কোনো উদ্বাস্তুকে জায়গা দিতে পারব না। ইউরোপের দুর্বল অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনা করলে উদ্বাস্তুদের আশ্রয় দেওয়ার প্রশ্নে সেসব দেশের বাসিন্দাদের নেতিবাচক মনোভাবের জন্য তাদের দোষ দেওয়া চলে না। এত কিছুর পরেও ইউরোপ যেখানে উদ্বাস্তুর ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে সেখানে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ওবামা নেহাত দয়াপরবশ হয়ে ১০ হাজার সিরীয় শরণার্থীকে তার দেশে আশ্রয় দিতে চেয়েছিলেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজ্য সরকারগুলো বলছে, ১০ হাজার শরণার্থী তো অনেক, তারা একজন শরণার্থীকেও মার্কিন মুল্লুকে জায়গা দেবে না। রাজ্য সরকারগুলোর ধমক শুনে ওবামা চুপ মেরে গেছেন। তিনি তার নিজ দল ডেমোক্র্যাট প্রার্থীকে আমেরিকার আগামী নির্বাচনে জিতিয়ে আনা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। সিরিয়ার উদ্বাস্তু আইলানের মৃতদেহের ছবি দেখে তার আবেগতাড়িত হওয়ার সময় নেই। বড় কথা, তিনি জানেন, মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ সাগর পাড়ি দিয়ে আমেরিকার সীমান্তে সহজে আঘাত হানবে না। সাগর পাড়ি দিয়ে আমেরিকার মূল ভূখণ্ডে আঘাত করলে তার পরিণাম কী হতে পারে সে উদাহরণ আমেরিকা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সৃষ্টি করে রেখেছে। পার্ল হারবারে বিমান আক্রমণ চালানোর অপরাধে জাপানকে তার ভূখণ্ডে আণবিক বোমার ঘাঁ খেতে হয়েছে। হিরোশিমা নাগাসাকির স্মৃতি মানুষকে স্মরণ করিয়ে দেয়, আমেরিকা তার স্বার্থে কতখানি নিচে নামতে পারে! মধ্যপ্রাচ্য থেকে অনেক দূরের দেশ আমেরিকার সীমানায় যুদ্ধের ঢেউ আছড়ে পড়বে না এটা সত্য। তবে ইউরোপ কি নিরাপদ? আইসিস নিধনের নাম করে আরব দেশগুলোতে যে গণহত্যা চলছে সেই যুদ্ধের পরিধি কি আরব দুনিয়ায় সীমাবদ্ধ আছে? পুতিনের রাশিয়া সিরিয়ায় যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার পরে পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর ঘোলাটে হয়ে গেছে। তুরস্কের গোলার আঘাতে রাশিয়ান যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পরে ইউরোপ ভয়ে কুঁকড়ে গেছে। তারা রাশিয়ার গণতন্ত্রের বেহাল দশার খবর জানে। পুতিনের মতো একজন স্বৈরশাসকের কাছে খুব বেশি দায়িত্বশীল আচরণ নিশ্চয়ই তারা আশা করে না। পুতিন বলেছে, যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে তুরস্ক রাশিয়ার পিঠে ছুরি মেরেছে। তুরস্কের বিরুদ্ধে পুতিনের হুঙ্কার কি বিনা যুদ্ধে হাওয়ায় মিলিয়ে যাবে? রাশিয়ার বিমানবহর সিরিয়ার সীমা ছেড়ে তুরস্কের দিকে ধেয়ে গেলে পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেবে? তুরস্কের ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনা করলে বলা যায়, তুরস্ক যুদ্ধে জড়িয়ে যাওয়ার অর্থ যুদ্ধ ইউরোপের মূল ভূখণ্ডে ছড়িয়ে পড়া। এরপরও কি ইউরোপিয়ানদের আত্মোপলব্ধির সময় হয়নি? মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ে নীতি-নির্ধারণের জন্য এখনো কি ইউরোপ আমেরিকার মুখ চেয়ে বসে থাকবে? 

 

লেখক : কথাসাহিত্যিক।


বিডি-প্রতিদিন/ ০৭ ডিসেম্বর, ২০১৫/ রশিদা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর