বৃহস্পতিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা
-বিশকেকেও ঢাকার পুনরাবৃত্তি

ফুটবলাররা যেখানে পিছিয়ে

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ফুটবলাররা যেখানে পিছিয়ে

ঢাকায় প্রথম পর্বে ১-৩ গোলে হার। তারপরও বিশকেকের ম্যাচ নিয়ে আশাবাদী ছিলেন নতুন কোচ ফ্যাবিও লোপেজ। সাংবাদিকদের দৃঢ়ভাবে বলেছিলেন, কিরগিজস্তানকে ভয়ের কিছু নেই। যে প্রস্তুতি নিয়ে যাচ্ছি ছেলেরা ভালো খেলতে পারলে জয় নিয়েই ফিরবো। না, বিশকেকে ফিরতি পর্ব ম্যাচে ঢাকার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। অর্থাৎ জিততে পারেনি বাংলাদেশ। দুই অর্ধে দুই গোল খেয়ে মামুনুলরা মাঠ ছেড়েছেন। তবে ২-০ গোলে হারলেও বাংলাদেশ দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। সত্যি বলতে কি, এবার বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে এ ম্যাচেই বাংলাদেশ ভালো পারফরম্যান্স প্রদর্শন করেছে। তারপরও পয়েন্ট পাওয়া সম্ভব হয়নি। কথা হচ্ছে, কেন এমন হচ্ছে? সমানতালে লড়াইয়ের পর বাংলাদেশ জিততে পারছে না কেন? কোচ হিসেবে লোডডিক ক্রুইফ দায়িত্ব নেওয়ার পর খেলোয়াড়দের দম ও ফিটনেস নিয়ে বিরক্ত প্রকাশ করেছিলেন। তাই সহকারী কোচের পাশাপাশি ফিজিও আর গোলরক্ষক প্রশিক্ষকও আনতে বাধ্য হয়েছিল বাফুফে। তারপরও ক্রুইফের প্রশিক্ষণে বাংলাদেশ ভালো কিছু করতে পারেনি। ২/১টা জয় ছাড়া অধিকাংশ আসরে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।

৯০ মিনিটের লড়াইয়ে প্রতিপক্ষরা আহামরি ভালো না খেললেও জয় নিয়ে ঠিকই মাঠ ছাড়ছে। এমনকি প্রথমে গোল করে এগিয়েও যাচ্ছে বাংলাদেশ। পরে ম্যাচে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে ম্যাচ হেরে যাচ্ছে। গোল করার অসংখ্য সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারছে না। একটা ব্যাপার লক্ষ্য করলে দেখা যাবে বেশ কটি ম্যাচে বাংলাদেশ হেরেছে শেষ মূহূর্তের গোলে। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক গোল্ড কাপে মালয়েশিয়ার বিপক্ষে ২ গোলে পিছিয়ে থেকেও দুর্দান্ত খেলে সমতা ফিরিয়েছিলেন মামুনুলরা। দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশ যে নৈপুণ্য প্রদর্শন করেছিল তাতে শিরোপা জেতা উচিত ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে গোল খেয়ে সে আশা-নিরাশায় পরিণত হয়। মঙ্গলবার বিশকেকেও বাংলাদেশ দুর্দান্ত খেলে। মনে হচ্ছিল শেষ পর্যন্ত ম্যাচ ড্র হবে। কিন্তু এখানেও শেষ মুহূর্তে গোল খেয়ে বসে। ফুটবল অঙ্গনে এখন একটাই আলাপ বার বার বাংলাদেশের একই পরিণতি ঘটছে কেন?

বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের ফুটবলের মান আগেও খুব একটা উন্নত ছিল না। আন্তর্জাতিক ম্যাচে হারের সংখ্যাই বেশি। কিন্তু ফুটবলারদের ভিতর গতি বা দমের কমতি ছিল না। ৭০ বা ৮০ দশকে এমনো ফুটবলার ছিলেন যারা নব্বই না আরও বেশি সময় ধরে দাপটের সঙ্গে খেলতে পারতেন। অথচ এখন ২/৩ জন ছাড়া অন্যরা প্রথমার্ধ শেষ না হতেই হাঁপিয়ে উঠছেন। বর্তমান টোটাল ফুটবলে এ অবস্থা কাটিয়ে উঠতে না পারলে যতই ভালো কোচ আনা হোক না কেন কোনো লাভ হবে না। বিশকেকে হারের পরও শিষ্যদের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন কোচ লোপেজ। কিন্তু এ ধরনের সন্তুষ্ট আর কতদিন? জাতীয় দলের সাবেক নন্দিত ফুটবলার শেখ মো. আসলাম বলেন, আগে আমরা শুধু অনুশীলন করতাম না। কোচের নির্দেশে ম্যাচ শেষে রাতে খাওয়া-দাওয়া করে আধাঘণ্টা দৌড়াতাম। এতে শরীরে যে জ্যামটা সৃষ্টি হতো তা কেটে যেত। মৌসুম না থাকলেও প্রতিদিন ভোর ও বিকালে রমনা পার্কে দৌড়াতাম। এটা করতাম দম বা ফিটনেস যেন নষ্ট না হয়। এখনকার খেলোয়াড়রা তা করেন কি না আমার জানা নেই। ফুটবল গতির খেলা এখানে ফিটনেসটাই মুখ্য। এই ফিটনেসের কারণে এখন আমরা মার খাচ্ছি সঙ্গে পিছিয়েও যাচ্ছি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর