সোমবার, ১৯ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

পাতানো ম্যাচ নিয়ে ধোঁয়াশা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

পাতানো ম্যাচ নিয়ে ধোঁয়াশা

হরহামেশা পাতানো ফুটবল ম্যাচ হচ্ছে সারা বিশ্বে। প্রমাণিত হচ্ছে। নিষিদ্ধও হচ্ছেন ফুটবলার, কর্মকর্তারা। শাস্তি পাচ্ছেন। বাংলাদেশের ক্রিকেটও পাতানো ম্যাচের বাইরে নেই। দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা দেখেছেন ম্যাচ পাতানোর অভিযোগে নিষিদ্ধ হতে মোহাম্মদ আশরাফুলকে। যা বাংলাদেশের ক্রীড়া ইতিহাসে সবচেয়ে ন্যক্কারজনক ঘটনা। এবার বাংলাদেশের ফুটবলেও পাতানো ম্যাচের ধাক্কা লেগেছে! বাংলাদেশ, বাংলাদেশের কোনো ফুটবলার পাতানো ম্যাচ খেলেছে-এর কোনো প্রমাণ নেই। কিন্তু নেপাল পুলিশ আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে, ম্যাচ পাতানোয় গ্রেফতারকৃত নেপালের ফুটবলাররা বলেছেন বাংলাদেশের বিপক্ষে পাতানো ম্যাচ খেলেছেন তারা। তবে কোন ম্যাচটি পাতানো ছিল, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছুই জানায়নি নেপাল পুলিশ। তাই বিষয়টিকে এখন ধোঁয়াশা বললেই চলে। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ জানিয়েছেন, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে বাফুফে এবং খোঁজখবর নিচ্ছে। অবশ্য পাতানো ম্যাচের বিষয়ে নেপাল ফুটবল ফেডারেশন এখনো অফিশিয়ালি কিছুই জানায়নি বাফুফেকে বলেন সোহাগ।

কয়েকদিন আগে ম্যাচ পাতানোর অভিযোগে জাতীয় দলের অধিনায়ক সাগর থাপাসহ পাঁচ ফুটবলারকে গ্রেফতার করে নেপাল পুলিশ। তাদের বিপক্ষে অভিযোগ থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরের বাজিকরদের যোগসাজশে পাতানো ম্যাচ খেলেছেন তারা। গ্রেফতারকৃত ফুটবলারদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছেন, আটটি ম্যাচ তারা পাতিয়েছেন। যার একটি ছিল বাংলাদেশের বিপক্ষে। তবে কবে, কখন এবং কোন ম্যাচটি, এ বিষয়ে কিছুই জানায়নি নেপাল পুলিশ। বাফুফেকেও জানায়নি নেপাল ফুটবল ফেডারেশন। অফিশিয়ালি না জানালেও বাফুফে সাধারণ সম্পাদক যোগাযোগ করেছেন নেপাল ফুটবল ফেডারেশনের সঙ্গে। তাদের কাছে জানতে চাইছেন। সহযোগিতা চেয়েছেন। ম্যাচ পাতানো নিয়ে বাফুফে সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা কথা বলেছি নেপাল ফুটবল ফেডারেশনের সঙ্গে। তবে সেটা সাধারণভাবে। বাংলাদেশ-নেপাল পাতানো ম্যাচের বিষয়ে আমাদের তারা কিছুই জানায়নি। আমরা অপেক্ষায় আছি।’ নেপাল কিছু না জানালেও বাফুফে এ বিষয়ে নিজ উদ্যোগেই খোঁজখবর নিচ্ছে।

বাংলাদেশের কোনো ফুটবলার, কিংবা ম্যাচের বিপক্ষে পাতানোর অভিযোগ ওঠেনি সত্যি। কিন্তু ম্যাচ পাতানোর প্রস্তাব পেয়েছিলেন দেশের দুই ফুটবল তারকা আমিনুল হক ও মামুনুল ইসলাম। ২০০৩ সালে ঢাকায় খেলে যাওয়া বিদেশি ফুটবলার কোলি বার্নস এশিয়া কাপ বাছাইপর্বে হংকংয়ের কাছে হেরে যাওয়ার জন্য প্রস্তাব দিয়েছিলেন আমিনুলকে। প্রস্তাব দিয়েছিলেন, ৩-০ গোলে হেরে যেতে। বিনিময়ে প্রচুর অর্থ পাবেন আমিনুলরা। কিন্তু আমিনুল দ্রুত দলীয় কর্মকর্তা ও সতীর্থদের বিষয়টি জানিয়ে দেন। জানপ্রাণ উজাড় করে খেলে ম্যাচটি ২-২ গোলে ড্র করেছিল বাংলাদেশ। মামুনুলের মোবাইলে অপরিচিত এক নম্বর থেকে ম্যাচ পাতানোর অনুরোধ এসেছিল। কিন্তু মামুনুল সেটা ভয়ে মুছে দিয়েছিলেন। ফুটবলারদের কাছে ম্যাচ পাতানোর প্রস্তাব আসা প্রসঙ্গে বাফুফে সম্পাদক বলেন, ‘আমিনুল সে সময় জানিয়ে দিয়েছিলেন কর্মকর্তাদের। কর্মকর্তারা দ্রুত বিষয়টি নজরে আনায় কোনো কিছু হয়নি। মামুনুল যেহেতু জানায়নি কিছু। তাই আমরা কিছুই জানি না। যেহেতু নেপালের ফুটবলাররা বলেছেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে পাতানো ম্যাচ হয়, সেটা আমাদের জন্য ভয়ের। আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি।’

নেপালি ফুটবলাররা যে খবর দিয়েছেন, তাতে ভয় পাওয়ারই কথা বাংলাদেশের। তার ওপর বাংলাদেশের বিপক্ষে পাতানো ম্যাচ খেলার কথা বলেছেন তারা, সে বিবেচনায় ললাটে চিন্তার ভাঁজ পড়বে কোনো সন্দেহ নেই।

সর্বশেষ খবর