ফুটবল খেলার জন্য একটা সময় বিশেষ খ্যাতি ছিল চুয়াডাঙ্গা। ব্রিটিশ শাসনামল থেকে স্বাধীন বাংলাদেশের ৯০ দশক পর্যন্ত ক্রীড়াঙ্গনের ইতিহাসে চুয়াডাঙ্গা জেলার খেলোয়াড়দের অবদান ছিল উলেখ করার মতো। বছরজুড়ে নানা টুর্নামেন্ট হওয়ার পাশাপাশি এখানকার একাধিক খেলোয়াড় মাতিয়েছেন কলকাতা ফুটবল লিগ আর জাতীয় দল। এক সময় জাতীয় পর্যায়ে এ জেলার খেলোয়াড়দের বিশেষ অবদান থাকলেও বর্তমানের জেলার ক্রীড়াঙ্গন হারাতে বসেছে ঐতিহ্য। ১৯১৭ থেকে ১৯৫২ সাল পর্যন্ত কলকাতা লিগে খেলেছেন চুয়াডাঙ্গা জেলার শাহাব উদ্দিন, হাবু জোয়ার্দ্দার, ওদুদ মণ্ডল, ফকির জোয়ার্দ্দার, শাফায়েত বিশ্বাস, কানাই লাল, হরিদাস বৈরাগী, অনিল কুমার, নিলে বাবুরা। শাফায়েত বিশ্বাস ১৯৫২ সালে পূর্ব পাকিস্তান বাছাই একাদশের হয়ে খেলেছিলেন ইরানের বিপক্ষে। ১৯৭৩ ও ১৯৭৪ সালে সোহরাওয়ার্দি কাপে বৃহত্তর কুষ্টিয়ার ফাইনালে খেলার পেছনে অবদান ছিল চুয়াডাঙ্গার অনেক ফুটবলারের। নব্বইয়ের দশকেও চুয়াডাঙ্গার মামুন জোয়ার্দ্দার, মাহমুদুর রহমান লিটনরা কাঁপিয়েছেন ঢাকার মাঠ। খেলেছেন জাতীয় দলে। চুয়াডাঙ্গার সেই ফুটবল ঐতিহ্য এখন রূপকথার গল্পের মতো। তারপর থেকে ধীরে ধীরে হারাতে বসেছে চুয়াডাঙ্গার ফুটবলের ঐতিহ্য। নিয়মিত লিগ আর টুর্নামেন্ট না থাকায় খেলাধূলায় সৃষ্টি হয়েছে অচলবস্থা। তৈরি হচ্ছে না নতুন কোনো খেলোয়াড়। জেলার একাধিক খেলোয়াড় বলেন, জেলা ক্রীড়া সংস্থার নিজস্ব কোনো মাঠ নেই। বর্তমানে যে স্টেডিয়ামে খেলা হয় সেটি মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের। এছাড়া রয়েছে একটি টাউন কমিটির মাঠ। এই দুটি মাঠে সংস্কার ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় বছরের অর্ধেক সময় সব ধরনের খেলা বন্ধ থাকে। সরকারি উদ্যোগে একটি আধুনিক মানের স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হয়েছে। সেটিও উদ্বোধনের অপেক্ষায় পড়ে আছে দুবছর। নতুন স্টেডিয়ামটি উদ্বোধন হলে খেলোয়াড়দের মধ্যে নতুন করে উদ্দীপনা ফিরে আসবে। জেলার ক্রীড়ানুরাগীরা মনে করেন, যত বেশি খেলার আয়োজন করা হবে, ততই বেড়িয়ে আসবে প্রতিভাবান খেলোয়াড়।