বৃহস্পতিবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

হেরে গেল দুই মোহামেডান

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

হেরে গেল দুই মোহামেডান

ঢাকা মোহামেডান ও আফগানিস্তান বাজান ক্লাবের বল দখলের লড়াই। ম্যাচ জিতে টুর্নামেন্টে শুভ সূচনা করেন আফগানরা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

একদিনে একই মাঠে দুই মোহামেডানের হার। ফুটবলে এ ঘটনা বিরল বলা যায়। শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপে তা-ই ঘটেছে। এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে গতকাল বিকালে অনুষ্ঠিত প্রথম ম্যাচে এগিয়ে থেকেও ঐতিহ্যবাহী কলকাতা মোহামেডান ২-১ গোলে হার মানে শ্রীলঙ্কার সলিড এসসির কাছে। অন্যদিকে সন্ধ্যায় ঢাকা মোহামেডানকে ১-০ গোলে হারিয়ে দেয় আফগানিস্তানের ডি স্প্রিঙ্গার বাজান ক্লাব।

বাংলাদেশের কোনো দল না থাকায় বিকালে প্রথম ম্যাচে গ্যালারিতে দর্শক সমাগম তেমন ছিল না। কিন্তু দেশের অন্যতম জনপ্রিয় দল ঢাকা মোহামেডানের খেলা দেখতে ভালোই দর্শকের সমাগম ঘটে। পুরো গ্যালারি মোহামেডানকে সমর্থন জোগালেও হাসিমুখে মাঠ ছাড়তে পারেনি। আসলে জনপ্রিয়তা থাকলেও ফুটবলে মোহামেডানের আগের সেই শক্তিশালী রূপ নেই। এবার অবশ্য তরুণদের নিয়েও ঘরোয়া মৌসুমে একেবারে খারাপ পারফরম্যান্স প্রদর্শন করেনি। ফেডারেশন কাপে সেমিফাইনাল ও পেশাদার লিগে তৃতীয় স্থান দখল করে। শেখ কামাল টুর্নামেন্টে শক্তি বাড়াতে অন্য দল থেকে খেলোয়াড় সংগ্রহ করে। তার পরও ফুটবলপ্রেমীদের সংশয় ছিল সাফ চ্যাম্পিয়ন দেশ আফগানিস্তানের ক্লাবের সঙ্গে সুবিধা করতে পারবে কি-না। শেষ পর্যন্ত তাই হলো। প্রতিবেশী মোহামেডানের মতো ঢাকা মোহামেডানও হার দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করল। দীর্ঘদেহী আফগান খেলোয়াড়দের সঙ্গে পেরে উঠছিল না জীবন, সোহেল রানারা। আক্রমণ করে মোহামেডানের রক্ষণভাগ ব্যতিব্যস্ত রাখে বাজান ক্লাব। ৩২ মিনিটে আনোয়ার আকবরি গোল করলে পুরো গ্যালারি চুপসে যায়। অবশ্য এ জন্য মোহামেডানের ডিফেন্ডার মাইকেলকেও দায়ী করা যায়। তিনি আগেই বল ক্লিয়ার করতে পারতেন। দেরি করায় বল পেয়ে যান আকবর এবং গোল করে দলকে এগিয়ে রাখেন। পিছিয়ে যাওয়ার পরই মোহামেডান যেন জেগে ওঠে। সমতায় ফিরতে মরিয়া হয়ে আক্রমণ চালায় তারা। কিন্তু প্রথমার্ধে আর কোনো গোল হয়নি। দ্বিতীয়ার্থের প্রথম ১০ মিনিট আফগানরা দাপটের স্বাক্ষর রাখলেও এরপর থেকেই ম্যাচ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয় মোহামেডান। পুরো গ্যালারি তখন উত্তেজনায় কাঁপছিল। আক্রমণের পর আক্রমণ মনে হচ্ছিল যে কোনো সময় গোল পেয়ে যাবে মোহামেডান। কিন্তু বাজান ডিফেন্ডারদের দৃঢ়তার কারণে পয়েন্ট পাওয়া সম্ভব হয়নি। হেরেই মাঠ ছাড়তে হয় ঢাকা মোহামেডানকে।

এদিকে ক্লান্ত শরীর নিয়ে মাঠে নামলেও প্রথম ম্যাচে কলকাতা মোহামেডানের প্রাধান্যই চোখে পড়ে। ২০ মিনিটের মধ্যে কমপক্ষে তারা ৩ গোলে এগিয়ে যেতে পারত। কিন্তু সহজ সহজ সুযোগ নষ্ট করায় তা আর সম্ভব হচ্ছিল না। তবে ৩৭ মিনিটে ভুল করেননি টোরাজ। একক প্রচেষ্টায় চমৎকার গোল করে দলকে এগিয়ে রাখেন। দ্বিতীয়ার্ধে খেলার চেহারা পুরোপুরি পাল্টে যায়। শুরু থেকেই ম্যাচ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়  লঙ্কানরা। ৪৭ মিনিটে আচমকা শটে গোল করে সমতা ফেরান শোলা। ৭৯ ও ৮১ মিনিটে ইমরান খান সহজ গোলের সুযোগ নষ্ট করেন। এতেই ম্যাচ   হাতছাড়া হয় তাদের। একেবারে শেষ মুহূর্তে ঘানান আলতো শটে জালে বল পাঠালে উৎসবে মাতোয়ারা হয়ে যায় সলিড দল। এ হারের পর কলকাতার কোচ বলেন, তাদের পাঁচ ফুটবলার ৪০ ঘণ্টা ভ্রমণ করে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন। এর পর গতকাল ম্যাচ শুরুর ৮ ঘণ্টা আগে হেলিকপ্টারে এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে পৌঁছান।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর