শুক্রবার, ২৩ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তন

হকি ফেডারেশনের গুরুত্বপূর্ণ সভা আজ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তন

হকির সমস্যার কি নিরসন হচ্ছে? শোনা যাচ্ছে আজ সকালে ফেডারেশনের যে জরুরি সভা হবে সেখানেই বড় ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। মোহামেডান, মেরিনার্স, ওয়ারী, ওয়ান্ডারার্স ও বাংলাদেশ স্পোর্টিং নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক খাজা রহমতউল্লাহর পদত্যাগের দাবিতে গতবার লিগ বর্জন করে। পাঁচ ক্লাব সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেনি। আরেক বড় দল ঊষা ক্রীড়া চক্রও এবার বেঁকে বসে। তারা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয় সব ক্লাবের অংশগ্রহণ ছাড়া লিগে তারা অংশ নেবে না। এ জন্য তিনবার তারিখ নির্ধারণ করেও লিগ কমিটি দলবদল শুরু করতে পারেনি। উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় বিদ্রোহী ক্লাবগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা চালান। এতে কোনো লাভ হয়নি। বিদ্রোহীদের একটাই দাবি সাধারণ সম্পাদক পদত্যাগ ছাড়া তারা মাঠে ফিরবে না।

সত্যি বলতে কি বিষয়টিকে ফেডারেশনও তেমনভাবে গুরুত্ব দিচ্ছিল না। সাধারণ সম্পাদক বার বার বলছিলেন দেরিতে হলেও লিগ মাঠে গড়াবে। কিন্তু খেলোয়াড়রা আশার আলো দেখতে পারছিলেন না। তাই জাতীয় দলের একাধিক খেলোয়াড় এস এ গেমসে হকির ক্যাম্প বর্জন করেন। অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের আলটিমেটামে গত ১৫ অক্টোবর থেকে বিকেএসপিতে ক্যাম্প শুরু হলেও সার্ভিসেস দলের খেলোয়াড় ছাড়া অন্যরা যোগদান করেননি। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিওএর মহাসচিব সাহেদ রেজা। তিনি বলেন, জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা ক্যাম্পে যোগ না দিলে তিনি হকি দলকে এস এ গেমসে পাঠাবেন না। সাহেদ রেজা এ কথা বললেও ব্যক্তিগতভাবে তিনিও হকির সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চালান। যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার ছাড়াও ক্রীড়াঙ্গনে প্রভাবশালী কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পর্যন্ত গড়ায়। শোনা যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনকে বিষয়টি দেখার নির্দেশ দেন এবং দ্রুত সমস্যা নিরসন করতে বলেন। সাধারণ সম্পাদক যেহেতু আবাহনী লিমিটেডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। তাই এ ক্লাবের উচ্চ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন। সেখানেই নাকি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় জটিলতা কাটাতে নতুন সাধারণ সম্পাদক ঠিক করার। খাজা রহমতউল্লাহর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। সেখানে রহমতউল্লাহও জানিয়ে দেন হকির বৃহত্তর স্বার্থে যে কোনো ত্যাগ স্বীকার করতে রাজি রয়েছেন। এ নিয়ে রহমতউল্লাহ ফেডারেশন সভাপতি বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ারভাইস মার্শাল আবু এসরার সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেন।

সব কিছু মিলিয়ে দেখা যাচ্ছে আজ হকি ফেডারেশনে যে সভা হবে, সেখানে রহমতউল্লাহ সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব ছাড়ছেন এটা নিশ্চিত বলা যায়। শুধু তাই নয়, এ সভায় প্রিমিয়ার লিগের নতুন দল বদলের তারিখ ঘোষণা হবে। অর্থাৎ যারা ক্যাম্প বর্জন করেছিলেন তারা বিকেএসপিতে যাবেন ধরে নেওয়া যায়। কথা হচ্ছে নতুন সাধারণ সম্পাদক কে হচ্ছেন? এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হকির মুরুব্বীকে এ দায়িত্ব দেওয়ার। এক্ষেত্রে দেশের হকির কিংবদন্তি খেলোয়াড় বর্তমানে ফেডারেশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুস সাদেকের নামই বেশি উচ্চারিত হচ্ছে। হকির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অনেকেই বলেছেন, আবদুস সাদেকের সাধারণ সম্পাদকের পদটি পাওয়া এখন শুধু সময়ের ব্যাপার। আবদুস সাদেক এর আগেও ১৯৮২-৮৫ সাল পর্যন্ত ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। রহমতউল্লাহ সরে যাচ্ছেন মানে পাঁচ ক্লাবের দাবি পূরণ হতে চলেছে। তাহলে কি তারা মাঠে ফিরছে? জানা গেছে বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে পাঁচ ক্লাবের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নাজমুল হাসান পাপনের আলোচনাও হয়েছে। সেখানে তারা নাকি বলেছেন, রহমতউল্লাহ সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব ছাড়লে অবশ্যই মাঠে ফিরবে। পাঁচ ক্লাব হলেও এখানে মূল ফ্যাক্টর ছিল মোহামেডান ও মেরিনার্স। তারা হকিতে বড় দল। মোহামেডানের ডাইরেক্টর ইনচার্জ লোকমান হোসেন ভূইয়া বলেন, বৈঠকে ফেডারেশনের এজেন্ডা কি তা আমার জানা নেই। তবে গ্রহণযোগ্য কোনো সিদ্ধান্ত হলে আমরা মাঠে ফিরতে প্রস্তুত। মেরিনার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হাসান উল্লাহ খান রানা বলেন, এখন পর্যন্ত যা শুনছি তা যদি শুক্রবারের বৈঠকে বাস্তবায়িত হয় তাহলে তার ক্লাব অবশ্যই হকির কর্মসূচিতে অংশ নেবে। তিনি বলেন, আমাদের একটাই দাবি রহমতউল্লাহ ভাই সাধারণ সম্পাদক পদে থাকতে পারবেন না। এখন তিনি পদত্যাগ বা সরে গেলে শুধু পাঁচ ক্লাব মাঠেই ফিরবে না, হকির সব জটিলতা কেটে যাবে আশা রাখি।

 

সর্বশেষ খবর