শনিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

‘বাংলাদেশের ফুটবল উন্নতির দিকে’

‘বাংলাদেশের ফুটবল উন্নতির দিকে’

ভারতের সাবেক অধিনায়ক বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য

ভারতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য। সাবেক সেন্টার মিড ফিল্ডার দলের প্রয়োজনে গোলও করতেন। দেশ ও ক্লাবের ট্রফি জয়ে রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। এবার বাংলাদেশে এসেছেন শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্টে ঐতিহ্যবাহী ইস্ট বেঙ্গলের প্রধান কোচ হিসেবে। ভারতীয় ফুটবলের সাবেক তারকা কথা বলেছেন বাংলাদেশ ও ভারতের ফুটবলের অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে। বন্দর নগরীর একটি হোটেলে তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মুহাম্মদ সেলিম। পাঠকের কাছে তা তুলে ধরা হলো- 

 

বাংলাদেশের ফুটবলের বর্তমান অবস্থা কেমন?

বাংলাদেশের ফুটবল অবশ্যই উন্নতির দিকে যাচ্ছে। টুর্নামেন্টে যে কয়টি ম্যাচ দেখেছি, তাতে কয়েকজন খেলোয়াড় নজর কেড়েছে আমার। আমাদের বিপক্ষে চট্টগ্রাম আবাহনী খুব ভালো খেলেছে। আগের চেয়ে অনেক ভালোর দিকে যাচ্ছে বাংলাদেশের ফুটবল।

উন্নতির জন্য আপনার পরামর্শ...

মেধাবী ও নতুন খেলোয়াড় তৈরির উদ্যোগ নিতে হবে। বয়সভিত্তিক দলগুলোর দিকে নজর দিতে হবে। তবেই ফুটবলের উন্নতি হবে।

এশিয়ার অনেক দল ফুটবল পরাশক্তিগুলোর সঙ্গে টেক্কা দিচ্ছে। কিন্তু উপমহাদেশের দলগুলোর ফুটবলের অবস্থা খুব উন্নতি হয়নি। কারণ কী?

ফুটবল উন্নয়নে ফিফা এবং এএফসি যে পদ্ধতি প্রয়োগের কথা বলেছে, সার্কভুক্ত দেশগুলো সঠিকভাবে প্রয়োগ করেনি। এ ছাড়া খেলোয়াড় তৈরির পদ্ধতিও ভালো নয়। সবচেয়ে বড় কথা উপমহাদেশের দেশগুলো বয়সভিত্তিক দলগুলোর দিকে নজর দেয়নি। তাই এখানকার ফুটবলের এমন অবস্থা। এখন অবশ্য ফিফা ও এএফসির দেখানো পথে হাঁটতে শুরু করেছে দেশগুলো। তাই অল্প অল্প করে উন্নতি হচ্ছে।  তবে এশিয়ার অন্য দেশগুলোর সমকক্ষে যেতে আরও সময় লাগবে।

খেলোয়াড় তৈরির পদ্ধতিটা কী ধরনের হওয়া উচিত?

উঠতি বয়সীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যে সিলেবাস থাকে, ফুটবলার তৈরিতেও এই ধরনের সিলেবাস অনুসরণ করতে হবে। বয়সভিত্তিক আলাদা আলাদা দল গড়তে হবে। প্রত্যেক দলের আলাদা কোচ ও পরিচালক থাকতে হবে। আলাদা অনুশীলন হবে। আমরা এ পদ্ধতি অনুসরণ করে সুফল পাচ্ছি। প্রহ্লাদ, অবিনাশ, অভিনববাক, জিতেনের মতো ফুটবলার বেরিয়েছে।

ভারতীয় ফুটবল এখন কোন পর্যায়ে...

অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক ভালো অবস্থানে ভারতের ফুটবল। আমাদের লিগ খেলা হয়। আইএসএল হয়। ভারতীয় জাতীয় লিগটাই জমজমাট হয়।

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ফি বছর হওয়া উচিত কি?

প্রতি বছর হলে সেটা ভালো। তবে এটাও মনে রাখতে হবে, বেশি ম্যাচ খেললে ফুটবলাররা ক্লান্ত হয়ে যাবে। ফিফা ও এএফসি রুলস অনুসরণ করলে ভালো হবে। প্রতি বছর টুর্নামেন্ট হলে উপমহাদেশের ফুটবল আরও উন্নতি করবে।

কলকাতায় ফুটবল এখন কতটা জনপ্রিয়?

কলকাতায় ফুটবল এখনো সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা। এখানে গ্ল্যামার্স ফুটবল হয়। দলগুলোর বাজেটও অনেক। ইস্ট বেঙ্গল, মোহামেডান কিংবা মোহনবাগানের খেলায় নিয়মিত ২৫ থেকে ৪০ হাজার দর্শক মাঠে উপস্থিত থাকে। সর্বশেষ ইস্ট বেঙ্গল-মোহনবাগান ম্যাচে ৮৫ হাজার দর্শক খেলা উপভোগ করেছে। কলকাতায় ফুটবল ক্রেজ আগের মতোই রয়েছে।  

ইস্ট বেঙ্গলের টানা সাফল্যের রহস্য কী?

আমাদের কর্মকর্তারা খুবই সাপোর্ট করে। সবার চিন্তা-ভাবনা সেরা দল হওয়া। ভারতে এক নম্বর হওয়াই আমাদের টার্গেট। সাফল্যের জন্য সবাই নিবেদিত। ফুটবলাররাও মানসিকভাবে তৈরি থাকে সাফল্য পেতে। তাই টানা সাফল্য পাচ্ছে ইস্ট বেঙ্গল।

‘আইএসএল’ ভারতীয় ফুটবলে কতটুকু প্রভাব ফেলেছে?

আইএসএলের জন্য ফুটবলাররা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। টুর্নামেন্টে ভালো মানের বিদেশি ফুটবলার খেলছেন। সব মিলিয়ে কিছুটা প্রভাব তো ফেলছেই।

চট্টগ্রাম কেমন লাগছে?

আতিথেয়তা, আপ্যায়ন, সেবা, পরিবেশ সব মিলিয়ে অসাধারণ। সত্যিই চট্টগ্রামে আমাদের দিনগুলো ভালোই কাটছে।

সর্বশেষ খবর