বৃহস্পতিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

মোহামেডানকে হারিয়ে ফাইনালে ইস্টবেঙ্গল

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

মোহামেডানকে হারিয়ে ফাইনালে ইস্টবেঙ্গল

শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ ফুটবলে ঢাকা মোহামেডানের দুর্গে কলকাতা ইস্টবেঙ্গলের আক্রমণ -বাংলাদেশ প্রতিদিন

দুই জায়ান্টের প্রাণবন্ত খেলা দেখতে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনাল দেখতে এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে হাজির হয় হাজার পনের দর্শক। প্রত্যাশা ছিল ঢাকা মোহামেডান পাল্লা দিয়ে খেলবে ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে। গত দুই ম্যাচের মোহামেডানের পারফরম্যান্স এ প্রত্যাশা বাড়িয়ে দিয়েছিল বহুগুণ। কিন্তু কলকাতা জায়ান্টের কাছে পাত্তাই পেল না সাদা-কালোরা। নিজেদের ২০০তম ম্যাচে ঢাকা মোহামেডানকে ৩-০ গোলে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করল ইস্টবেঙ্গল। আগামীকাল তারা স্বাগতিক চট্টগ্রাম আবাহনীর বিপক্ষে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে মুখোমুখি হবে।

 

শুরুটা ভালোই করেছিল মোহামেডান। ৩ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায় তারা। ডান প্রান্ত থেকে মোবারক হোসেন ক্রস করলে সতীর্থ পিটার পা ছোঁয়াতে ব্যর্থ হলে গোল থেকে বঞ্চিত হয় মোহামেডান। ৫ মিনিটে আবার অধিনায়ক অরূপ কুমার বৈদ্য ডান প্রান্ত থেকে আক্রমণ করেন। তার দেওয়া ক্রসে জীবন হেড করলে তা সাইড বার ঘেঁষে বাইরে চলে যায়। ৯ মিনিটে ডান প্রান্ত থেকে আক্রমণভাগের খেলোয়াড় অবিনাশের ক্রস থেকে বল পেয়ে রন্টি মার্টিনের দর্শনীয় শট ঢাকা মোহামেডানের জালের ঠিকানা খুঁজে পেলে ১-০ গোলে এগিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। সঙ্গে সঙ্গে মাঠে নেমে আসে পিনপতন নীরবতা। এর পর থেকে অগোছালো ফুটবল খেলতে থাকে ঢাকা মোহামেডান। বিপরীত চিত্র ছিল ইস্টবেঙ্গলের। গোল দিয়ে উজ্জীবিত হয়ে ছোট ছোট পাসে খেলতে থাকে তারা। এরই ধারাবাহিকতায় ৩৪ মিনিটে বাম প্রান্ত দিয়ে বক্সে ঢুকে রফিকের জোরালো শট কিপার আশরাফুল ইসলাম রানা ঝাঁপিয়ে পড়ে কোনোরকম গোল হওয়া থেকে রক্ষা করলেও হাত ফসকে বল চলে যায় প্রতিপক্ষ নাইজেরিয়ান কৌশলী খেলোয়াড় উরকের কাছে। দেখেশুনে তার নেওয়া জোরালো শট ক্রসবারে লেগে বাইরে চলে গেলে গোল থেকে বঞ্চিত হয় ইস্টবেঙ্গল। এভাবে আরও কয়েকটা আক্রমণ চালায় ইস্টবেঙ্গল। ফাঁকে মোহামেডান কাউন্টার অ্যাটাকে গেলেও গোলের দেখা পায়নি। ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে প্রথমার্ধ শেষ করে কলকাতার ইস্টবেঙ্গল। বিরতির পর মাঠে ফের মোহামেডানের রক্ষণভাগে আক্রমণের পসরা সাজিয়ে দেয় ভারতসেরা দলটি। ৪৮ মিনিটে ফের সফলতা পায় ইস্টবেঙ্গল। তাদের মধ্যমাঠের খেলোয়াড় মোহাম্মদ রফিকের নেওয়া জোরালো শট প্রথম দফায় মোহামেডানের গোলরক্ষক রানা ক্লিয়ার করলেও তা চলে যায় রফিকের কাছে। এবার তিনি ভুল করেননি। তার নেওয়া শট মোহামেডানের জালে জড়ালে ২-০ গোলে এগিয়ে যায় কলকাতার জায়ান্টরা। ৫৯ মিনিটে মোহামেডানের রক্ষণভাগে আরেকটা সফল আক্রমণ চালায় ইস্টবেঙ্গল। রক্ষণভাগের খেলোয়াড় রাসাকের দেওয়া বল থেকে হেড করে ব্যবধান ৩-০ করেন রন্টি মার্টিন। এটি রন্টি মার্টিনের ম্যাচে দ্বিতীয় গোল। এরপর ঢাকা মোহামেডান গোল পরিশোধে মরিয়া হলেও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি।

১৯ বছর পর দুই দলের লড়াইয়ে ম্যাচ জিতে উৎসবে মাঠ ছাড়েন ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলাররা। হারের জন্য শারীরিক ক্লান্তি ও মূল একাদশের ছয় খেলোয়াড়ের ইনজুরিকে দায়ী করেছেন ঢাকা মোহামেডানের কোচ কাজী জসিম উদ্দিন আহমেদ জোসি। তিনি বলেন, ‘এক সপ্তাহের মধ্যে চার ম্যাচ খেলে খেলোয়াড়রা ক্লান্ত। এ ছাড়া মূল একাদশের ছয় খেলোয়াড় ইনজুরিতে পড়েছেন। দলের এ অবস্থায় এর চেয়ে ভালো খেলা আশা করা যায় না।’

 

তিনি বলেন, ‘ইস্টবেঙ্গল কোয়ালিটি ফুটবল খেলেছে। পক্ষান্তরে আমাদের ছেলেদের খেলা হতাশ করেছে।’

ইস্টবেঙ্গলের কোচ বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, ‘প্রথম গোল হওয়ার আগ পর্যন্ত মোহামেডান অসাধারণ খেলেছে। গোল করার পর ভালোভাবে খেলায় ফিরে এসেছে তার খেলোয়াড়রা। শুরুর কয়েক মিনিট ছাড়া পুরো ম্যাচ ছেলেরা অসাধারণ খেলেছে।

সর্বশেষ খবর