মঙ্গলবার, ১০ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

৩০০ টাকার টিকিট ১০০ টাকা!

মেজবাহ্-উল-হক

মিরপুরে সাধারণত এমন দৃশ্য দেখা যায় না! স্টেডিয়ামে টাইগার খেলছেন অথচ ভক্তদের বাইরে ভিড় নেই। গতকাল শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের গ্যালারিও ছিল ফাঁকা। এক সাকিব আল হাসান না থাকায় দর্শকরা যেন ম্যাচের প্রতি আগ্রহই হারিয়ে ফেলেছিলেন!

গতকাল ধরাশায়ী হয়েছে টিকিট কালোবাজারিরা। তারা বেশি দামে বিক্রির আশায় আগেই টিকিট কিনে রেখেছিলেন। কিন্তু তাদের আশায় গুঁড়েবালি! ম্যাচের মধ্য বিরতির সময় স্টেডিয়ামের গেটে গিয়ে দেখা যায় নির্ধারিত মূল্যের অর্ধেকেরও কম দামে টিকিট বিক্রি হচ্ছে। ১০০ টাকার টিকিট ৫০ টাকায়, ৩০০ টাকার টিকিট বিক্রি করা হচ্ছিল ১০০ টাকায়। গেটের দিকে কোনো মানুষকে এগিয়ে আসতে দেখেই কালোবাজারিরা টিকিট বিক্রির আশায় ঘিরে ধরছিল।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কালোবাজারি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘অনেক আশা করে এসেছিলাম। কিন্তু এখন দেখছি লসে টিকিট বিক্রি করতে হচ্ছে। ৩০০ টাকার টিকিট আমরা কিনেছি ১৭৫ টাকায় কিন্তু বিক্রি করতে হচ্ছে ১০০ টাকায়।’

গতকাল টস হেরে বাংলাদেশ যখন প্রথমে ব্যাটিং করছিল তখন গ্যালারির অর্ধেক ছিল ফাঁকা। তারপর দ্বিতীয় ইনিংসের আগেই অনেক দর্শক মাঠে প্রবেশ করে। খেলার মধ্য বিরতির সময় কথা হয় মিরপুর-১ এর দর্শক আ. কলিমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমি আসলে খেলা দেখতে আসিনি। ইচ্ছাও ছিল। কিন্তু ব্যাংকে গিয়ে টিকিট পাইনি। তবে স্টেডিয়ামের দিকে ঘুরতে এসে দেখি ৩০০ টাকার টিকিট বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়, তাই সুযোগটা হাতছাড়া করিনি।’ মাঠে তো বটেই, মাঠের বাইরেও সাকিব যে একটা বড় ফ্যাক্টর তা বোঝা গেল গতকাল আরেকবার।

বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের পরিবর্তে গতকাল একাদশে সুযোগ পেয়েছিলেন ইমরুল কায়েস। অবশ্য সুযোগটা হাতছাড়া করেননি তিনি। সাত মাস পর বাংলাদেশের জার্সি ওয়ানডে খেলতে নেমেই হাফ সেঞ্চুরি করেন ইমরুল। গতকাল বাংলাদেশের ইনিংস সর্বোচ্চ ৭৬ রানের স্কোর এসেছিল তার ব্যাট থেকেই। ইমরুলের ব্যাটে ভর করেই ২৪১ রানের স্কোর করে বাংলাদেশ। ৮৯ বলে ৬ বাউন্ডারি ও ৪টি বিশাল ছক্কা হাঁকিয়েছেন ইমরুল। গতকাল তার স্টেট দিয়ে হাঁকানো ছক্কা দুটি ছিল দেখার মতো।

ওপেনার হলেও ইমরুল ধীর গতির ব্যাটসম্যান হিসেবেই পরিচিত। কিন্তু গতকাল শুরু থেকেই বলে বলে রান করতে থাকেন তিনি। তবে ইমরুল একপ্রান্ত আগলে রাখলেও অপর প্রান্তে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে টাইগাররা। তাই হাফ সেঞ্চুরির পর দেখেশুনে খেলতে গিয়ে ইমরুলের ব্যাটিংয়ে ধীরগতি চলে আসে। তারপরেও রান খরার দিকে ব্যাটিংয়ে ইমরুলই ছিলেন ভরসার প্রতীক হয়ে।

আর ম্যাচে সাকিব আল হাসানের অভাবটা অনুভূত হয়েছে পরতে পরতে। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার দলে থাকলে অধিনায়ক ও সতীর্থদের আস্থা অনেক বেড়ে যায়। আর সাকিব না থাকলে আÍবিশ্বাস বেড়ে যায় প্রতিপক্ষের ক্রিকেটারদের। কেননা সাকিব একাই দলে দুই ক্রিকেটারের ভূমিকা পালন করে থাকেন।

২০০৬ সালে ওয়ানডে অভিষেকের পর থেকেই সাকিব যেন বাংলাদেশ দলের নির্ভরতার প্রতীক হয়ে যান। কখনোই তাকে বাজে পারফরম্যান্সের কারণে দল থেকে বাদ পড়তে হয়নি। গতকাল বাংলাদেশ সিরিজ নিশ্চিত করলেও ব্যাটিং ও বোলিংয়ে সাকিবের অভাব পরিষ্কার বোঝা গেছে।

সর্বশেষ খবর