রবিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

আসছে অস্ট্রেলিয়া প্রস্তুত বাফুফে

ক্রীড়া প্রতিবেদক

আসছে অস্ট্রেলিয়া

প্রস্তুত বাফুফে

চলতি বছর জানুয়ারি মাসে ১৫ বছর পর দেশে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপের আসর বসে। কিন্তু বিদেশের  কোনো শক্তিশালী দল অংশগ্রহণ করেনি। আসলে ফুটবলে ঢাকায় শক্তিশালী দেশগুলোর তেমন দেখা মেলেনি। ২০১১ সালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে আর্জেন্টিনা ও নাইজেরিয়া প্রীতিম্যাচে অংশ নেয়। কিন্তু কোনো টুর্নামেন্ট, ফিফা বা এএফসির শিডিউলে বিশ্ব কাঁপানো দলের দেখা মেলেনি। ইরান, ইরাক ও দক্ষিণ কোরিয়াও খেলে গেছে। কিন্তু মূল জাতীয় দল ছিল না। এবার বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে জর্ডানের মূল জাতীয় দল খেলে গেলেও বিশ্ব ফুটবলে তারা আলোচিত নয়। ১৭ নভেম্বর অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে অ্যাওয়ে ম্যাচে অংশ নেবে। খেলাটি বিকাল সাড়ে ৫টায় অনুষ্ঠিত হবে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে। সেপ্টেম্বরে পার্থে প্রথম পর্বের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া ৫-০ গোলে বাংলাদেশকে পরাজিত করে। ঢাকায় এই ম্যাচের ফলাফল নিয়ে ফুটবলপ্রেমীদের ততটা আগ্রহ নেই। কেননা দুই দলের শক্তির পার্থক্য এতটা বেশি যে জয় দূরের কথা অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ড্র করাটা বাংলাদেশের জন্য স্বপ্নই বলা যায়। মূল আগ্রহটা থাকবে অস্ট্রেলিয়াকে ঘিরে। চারবার বিশ্বকাপে মূল পর্বে খেলা ও বর্তমানে এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন ঢাকায় খেলবে। এটাই ফুটবলপ্রেমীদের বড় প্রাপ্তি। ক্রিকেটের মতো বিশ্ব ফুটবলে অস্ট্রেলিয়ার দাপট নেই। কিন্তু কালের বিবর্তনে ফুটবলেও তারা এগিয়ে যাচ্ছে। চারবার বিশ্বকাপে খেলা চাট্টিখানি কথা নয়। তারপর আবার এশিয়ার পরাশক্তি দক্ষিণ কোরিয়াকে হারিয়ে এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। ঢাকায় এর আগে কারেন্ট কোনো এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন দেশ খেলতে আসেনি। অস্ট্রেলিয়ার বেশ ক’জন ফুটবলার বিশ্বে পরিচিত লাভ করেছেন। বিশেষ করে টিম কাহিলের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। অধিনায়ক মিল মেদিনাক, ম্যাসু রায়ানও এখন বিশ্ব ফুটবলে নিজেদের যোগ্যতা তুলে ধরছেন ভালোভাবেই। এসব তারকার খেলা দেখতে স্টেডিয়ামে ভালোই দর্শক সমাগম ঘটবে আশা করা যায়।

শিডিউল অনুযায়ী গতকালই অস্ট্রেলিয়া দলের ঢাকা আসার কথা ছিল। কিন্তু পরিবর্তন করা হয়েছে তাদের সফরসূচি। আগামীকাল রাতে ৪২ সদস্যের অস্ট্রেলিয়া দল ঢাকা আসবে। ১৭ নভেম্বর অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলেই সেদিন রাতেই টিম কাহিলরা ঢাকা ছেড়ে যাবেন। বর্তমানে তারা সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছে এবং সেখানেই অনুশীলনের কাজ সেরে ফেলছে। ১৯৭৮ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল এশিয়ান যুব ফুটবল। আরব আমিরাত টুর্নামেন্টে খেললেও খেলোয়াড়রা থাকতেন কলকাতা তাজ হোটেলে। খেলার দিন দল উড়ে আসত। খেলা শেষে ফিরে যেত। এবার অস্ট্রেলিয়ার অবস্থা অনেকটা তাই। এনিয়ে বাফুফের কিছুটা আক্ষেপও রয়েছে। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ জানান, নিরাপত্তার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকলেও অস্ট্রেলিয়ার না থাকাটা দুঃখজনক। যাক এটা অস্ট্রেলিয়া ফুটবল ফেডারেশনের সিদ্ধান্ত এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না। তবে ম্যাচ উপলক্ষে নিরাপত্তার সব রকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

নিরাপত্তার গুরুত্ব দিয়ে ১৬ ও ১৭ নভেম্বর স্টেডিয়াম আঙিনায় সব দোকানপাট বন্ধ থাকবে। দর্শকদের দেহ তল্লাশি করে প্রবেশ করানো হবে। গুলশানে ওয়েস্টিন হোটেলে ১৬ নভেম্বর রাতে থাকবে অস্ট্রেলিয়া ফুটবল দল। সেখানেও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শুধু খেলোয়াড় নয়, ম্যাচ দেখতে যেসব অস্ট্রেলিয়ান দর্শকদের ঢাকা আসার কথা। তাদেরকে দেওয়া হবে বাড়তি নিরাপত্তা। সোহাগ বলেন, নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল ঢাকায় আসেনি। কিন্তু ফুটবলাররা এসে দেখবেন এদেশে কতটা শান্তিপূর্ণভাবে ম্যাচ আয়োজন করা যায়। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ধারণক্ষমতা প্রায় ২৫ হাজার। সোহাগ জানান, টিকিট বিক্রির ক্ষেত্রে কোনো বিধি-নিষেধ থাকছে না। টিকিটের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ভিআইপি ৩০০, পশ্চিম গ্যালারি ১০০ ও পূর্ব গ্যালারি ৫০ টাকা। অর্থৎ ১৭ নভেম্বর ম্যাচ আয়োজনের জন্য বাফুফে পুরোপুরি প্রস্তুত।

সর্বশেষ খবর